২০১৬ সালেই ম্যাক্সের সমস্যার কথা জেনেছিলেন বোয়িংয়ের কর্মীরা

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০১৬ সালে সনদ পায় বোয়িংয়ের ৭৩৭ ম্যাক্স। ওই সময় মডেলটির অটোমেটেড সেফটি সিস্টেমের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বার্তা আদান-প্রদান করেছিলেন বোয়িংয়ের কর্মীরা। গত শুক্রবার তথ্য প্রকাশ পাওয়ার পর নতুন সংকটে পড়েছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানিটি। খবর বিবিসি।

নিজেদের আইনজীবীদের কাছে বোয়িংয়ের দেয়া নথিপত্রে দেখা যাচ্ছে, একজন জ্যেষ্ঠ পাইলট লিখেছেন ৭৩৭ ম্যাক্সের পরীক্ষামূলক উড্ডয়নের সময় তিনি অপ্রত্যাশিতভাবে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। ওই পাইলট এক বার্তায় লিখেন, তিনি আসলে অজান্তে কর্তৃপক্ষের কাছে মিথ্যে বলেছিলেন (এই পাইলট এখন আর বোয়িংয়ে কাজ করেন না) তার পাঠানোর বার্তার জবাবে বোয়িংয়ের আরেক কর্মী লেখেন, এটা কোনো মিথ্যা বলার ঘটনা নয়, কেননা কেউ আমাদের বলেনি যে এটি মামলা হতে যাচ্ছে। 

এসব বার্তা প্রথম প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এটি প্রকাশ হওয়ার পর বোয়িংয়ের শেয়ারদরে বড় পতন ঘটে। মার্কিন কর্তৃপক্ষ কোম্পানিটির কাছে তাত্ক্ষণিক বিষয়ে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছে। অন্যদিকে মার্কিন কংগ্রেসে আরো একবার বোয়িংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিষদকে ঢেলে সাজানোর দাবি উঠেছে।  

উল্লেখ, গত বছরের অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়া মার্চে ইথিওপিয়ায় বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের দুটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার কবলে পড়লে প্রায় ৩৫০ জনের প্রাণহানি ঘটে। এর জেরে সারা বিশ্বে তিন শতাধিক বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজ গ্রাউন্ডেড করা হয়েছে এবং মডেলটির নিরাপত্তা নিয়ে তদন্ত চলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফএএ) এক কর্মকর্তা তথ্যকেউদ্বেগজনকহিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং জানিয়েছেন, তারা বিষয়ে তথ্য জানাতে বোয়িংকে নির্দেশ দিয়েছেন। চলতি মাসে অনুষ্ঠেয় শুনানির আগে নিজেদের আইনজীবীদের কাছে এসব নথিপত্রে দিয়েছে বোয়িং।

তথ্য প্রকাশ বোয়িংয়ের প্রধান ডেনিস মুলেনবার্গকে আরো বড় পরীক্ষার মধ্যে ফেলে দিল। সম্প্রতি বোয়িংয়ের চেয়ারম্যানের পদ হারিয়েছেন মুলেনবার্গ, তবে এখনো কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহীর পদে রয়েছেন।

বোয়িং জানিয়েছে, তারা মার্চ থেকে বিশ্বজুড়ে গ্রাউন্ডেড হয়ে থাকা ৭৩৭ মডেলটি নিয়ে চলমান তদন্তে সহযোগিতা করছে। সম্প্রতি কোম্পানিটি ঘোষণা দিয়েছে, নিজেদের উড়োজাহাজ এবং সেবার কার্যক্রম উন্নয়নে লক্ষ রাখার জন্য একটি স্থায়ী নিরাপত্তা কমিটি গঠন করেছে।

বোয়িং বলছে, এফএএ বিশ্বের অন্যান্য কর্তৃপক্ষ যেসব নির্দেশনা দিয়েছে, আমরা তা মেনে চলা অব্যাহত রাখব। কারণ আমরা চাই ৭৩৭ ম্যাক্স শিগগিরই সেবায় পৌঁছাক।  সফটওয়্যার হালনাগাদ করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ৭৩৭ ম্যাক্সের প্রতি গ্রাহক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষগুলোর আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করছে বোয়িং। ৭৩৭ ম্যাক্স ইস্যুর কারণে নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি লোকসান গুনতে হচ্ছে মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানিটিকে। এছাড়া ৭৩৭ ম্যাক্সের ছাড়পত্র দেয়ার কারণে বোয়িংয়ের সঙ্গে এফএএর সম্পর্ক নিয়েও সমালোচনা তৈরি হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন