বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বিস্ময়কর। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল ও মধ্যম আয়ের দেশ, শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষায়। এত কিছুর পরও প্রশ্ন উঠছে অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্থায়িত্ব নিয়ে। এর পেছনে যে যুক্তিগুলো কাজ করছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো দেশ থেকে মেধা ও অর্থ বাইরে চলে যাওয়া। বণিক বার্তা বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছে তিন পর্বের প্রতিবেদনে। প্রথম পর্ব ছিল বছরে প্রায় ৬০ হাজার শিক্ষার্থী বিদেশ যাওয়াসংক্রান্ত। এতে বলা হয়েছে, প্রতি বছরই এ সংখ্যা বাড়ছে। উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এ প্রবণতা বিদ্যমান। এর অন্যতম কারণ নিম্ন শিক্ষার মান। শুধু ইউরোপ-আমেরিকা বা অস্ট্রেলিয়া নয়, শিক্ষার্থীদের গন্তব্য হয়ে উঠছে মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, জাপান বা দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশও। এমনকি পাশের দেশ ভারতে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কম নয়। সর্বাধুনিক শিক্ষা ও বৈশ্বিক সুযোগ-সুবিধা পেতে এবং বৃহত্তর পরিবেশে বিশ্বের মেধাবীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যোগ্যতা যাচাইয়ের সুযোগ নিতে শিক্ষার্থীরা বিদেশের দিকে ঝুঁকছেন। শিক্ষার্থীদের বিদেশ যাওয়ার এ প্রবণতা সরকারের পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কারণ সরকারের লক্ষ্য, দ্রুততম সময়ে আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। কিন্তু বিপুল শিক্ষার্থীর বিদেশ যাওয়ার এ চিত্র নির্দেশ করে যে তারা পড়ালেখা করার জন্য যেমন টিউশন ফি হিসেবে বিদেশে অনেক টাকা নিয়ে যাচ্ছেন, তেমনি পড়ালেখা শেষে অনেকেই আর দেশে ফিরছেন না। এভাবে পাচার হচ্ছে অর্থ ও মেধা দুটোই। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি ও ভবিষ্যৎ। এতে দক্ষ মানবসম্পদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশ। ফলে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রাও চলে যাচ্ছে দেশ থেকে।
শিক্ষার্থীদের বিদেশে চলে যাওয়ার মূল কারণ, তারা শিক্ষার গুণগত মানে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। অথচ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ওয়ার্ল্ড র্যাংকিংয়ের তলানিতে পড়ে আছে। বিশ্বমানে শিক্ষাকে উন্নীতকরণের বিষয়কে তারা গুরুত্ব দিচ্ছে না। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সন্ত্রাস, সেশনজট, দুর্নীতিসহ নানা বিষয় রয়েছে। আবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বেশির ভাগই শিক্ষার গুণগত মানের চেয়ে ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এ থেকে উত্তরণে ইউজিসি ও সরকারের দায়িত্ব রয়েছে। শিক্ষার মানে গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে।
অন্যদিকে বিত্তশালীদের মধ্যে বাইরে ঠিকানা গড়ার প্রবণতা বাড়ছে। মধ্যবিত্তের মধ্যেও এ প্রবণতা বেড়ে ওঠায় মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় হোম বা কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী নিবাসে সহায়তাকারী পরামর্শক