আমদানি-রফতানির পতনে সাত মাসের সর্বনিম্নে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি

বণিক বার্তা ডেস্ক

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ভারতের রফতানি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ কমে ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। একই সময় আমদানি কমেছে দ্বিগুণেরও বেশি গতিতে, যা মন্দা মোকাবেলায় চাপ বাড়াচ্ছে নীতিনির্ধারকদের। রফতানি ও আমদানি উভয়ই সংকুচিত হওয়ায় সেপ্টেম্বরে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ সাত মাসের সর্বনিম্নে দাঁড়িয়েছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, সেপ্টেম্বরে আমদানি ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ কমে ৩ হাজার ৬৯০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে স্বর্ণ, পরিবহন সরঞ্জাম, ধাতু, ইস্পাত, রাসায়নিক ও কয়লার মতো শীর্ষ পণ্যগুলোর শিপমেন্টে তীব্র পতন দেখা গেছে।

রফতানির ক্ষেত্রে গত মাসে ভারতের তেলপণ্য রফতানি ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ কমে ৩৪০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে রত্ন ও গহনা রফতানি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ কমলেও রফতানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৬০ কোটি ডলার। এছাড়া ৬ শতাংশের বেশি পতন সত্ত্বেও সেপ্টেম্বরে ভারতে রফতানির শীর্ষস্থানটি ধরে রেখেছে প্রকৌশল পণ্য। গত মাসে প্রকৌশল পণ্য রফতানির পরিমাণ ৬৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।

এ মুহূর্তে আমদানি ভারতের অন্যতম বড় উদ্বেগের কারণ। দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি নিয়ে সর্বশেষ মূল্যায়নে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, আমদানির পরিমাণ তীব্রভাবে কমায় তা দুর্বল বিনিয়োগকে প্রতিফলিত করছে। অন্যদিকে রফতানির পরিমাণে মাঝারি পতনের অর্থ দক্ষিণ এশিয়ার মন্দা প্রাথমিকভাবে দুর্বল বাহ্যিক চাহিদা নয়, বরং দুর্বল স্থানীয় চাহিদাকেই প্রতিফলিত করছে; যা মূলত বৈশ্বিক ও স্থানীয় অনিশ্চয়তা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দুর্বল বৈশ্বিক চাহিদার মধ্যে পরিস্থিতির পরিবর্তনে অবিলম্বে সরকারি হস্তক্ষেপ দাবি করেছে রফতানিকারকরা। ট্রেড প্রমোশন কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান মোহিত সিংলা বলেন, শ্লথ বাজার চাহিদার কারণে উৎপাদন কমে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, যা রফতানিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

বর্তমানে অর্থনীতিবিদরা চলতি হিসাব ঘাটতির প্রাক্কলন পুনর্মূল্যায়নে ব্যস্ত। ভারতের ঋণমানকারী সংস্থা আইসিআরএর প্রধান অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ার বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশের চলতি হিসাব ঘাটতি পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় অর্ধেক কমে ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে বলে আমরা ধারণা করছি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে চলতি হিসাব ঘাটতির পরিমাণ ছিল প্রায় ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রফতানি ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ১৫ হাজার ৯৬০ কোটি ডলারে এবং আমদানি ৭ শতাংশ কমে ২৪ হাজার ৩৩০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। ফলে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৩৭০ কোটি ডলার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন