রংপুরের পীরগঞ্জে তদন্ত ফাঁড়ির হাজতে এক আসামির মৃত্যু ও বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর হামলার ঘটনায় পাঁচ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে জেলা পুলিশ। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন ভেন্দাবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইনচার্জ) আমিনুল ইসলাম, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শাহ আলম, এএসআই হরিকান্ত বর্মণ, এএসআই তাজউদ্দিন ও কনস্টেবল আরিফুল ইসলাম। তাদের রংপুর পুলিশ লাইনসে যুক্ত করা হয়।
গতকাল বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার।
তিনি বলেন, আসামির মৃত্যু ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ওই ঘটনায় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আমিনুল ইসলামসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে যুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আসামি শামছুল হকের মৃত্যু ঘিরে তদন্ত ফাঁড়ি ঘেরাও করে হামলার যে ঘটনাটি ঘটেছে তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে ভেন্দাবাড়ি পুলিশ তদন্ত ফাঁড়ির হাজতের গ্রিলে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় শামছুল হক (৫৫) নামে এক আসামির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামির পরিবারসহ বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ভেন্দাবাড়ি পুলিশ তদন্ত ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে। বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে পুলিশ ও উত্তেজিত জনতার মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২৩ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। এছাড়া ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় পুলিশ, পথচারীসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। অহতদের মধ্যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজ উদ্দিন রয়েছেন।
এ ব্যাপারে রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যেহেতু আসামির মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ রয়েছে, তাই মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ওই আসামির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
