এ ঘোষণা এমন সময়ে এল, যখন ভিয়েতনামি জাহাজ ও চীনা জরিপ তরীর মধ্যে এক মাস ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে বিতর্কিত ভ্যানগার্ড তীর নিয়ে
ভিয়েতনাম অ্যাবোমিনেবল অ্যানিমেশন ছবি প্রেক্ষাগৃহ থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কারণ আমেরিকা-চীন যৌথ প্রযোজনার এ ছবিতে প্রদর্শিত এক মানচিত্রে বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগর চীনের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে।
চীনের নিজস্ব অঞ্চল বলে দাবি করা প্রাকৃতিক সম্পদসমৃদ্ধ এ জলসীমাকে ছবির মানচিত্রে নয়টি ছোট ছোট ভাঙা রেখা টেনে দেখানো হয়েছে। এ অঞ্চল নিয়ে চীনের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আরো কয়েকটি দেশের বিরোধ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোও অঞ্চলটি নিজেদের বলে দাবি করে। ২০১৬ সালে ফিলিপাইন আন্তর্জাতিক ট্রাইবুন্যালে বিষয়টি উত্থাপন করলে চীনের দাবি নাকচ হয়ে যায়।
অ্যাবোমিনেবল এক চীনা মেয়ের গল্প, যে পথহারা এক ইয়েতিকে তার হিমালয় পর্বতের বাড়িতে ফিরে যেতে সাহায্য করে। ছবিটি তৈরি হয়েছে হলিউডের ড্রিম ওয়ার্কস অ্যানিমেশন আর চীনের পার্ল স্টুডিওর যৌথ প্রয়াসে।
সরিয়ে নেয়ার এক সপ্তাহ আগে থেকেই ছবিটি ভিয়েতনামের প্রেক্ষাগৃহে চলছিল, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পত্রিকা টুই ট্রে সোমবার এ খবর দিয়েছে।
‘আমরা আরো সতর্ক হব, আরো জোরদার করব সেন্সরের বিষয়টি’,
সরকারের চলচ্চিত্র বিভাগের প্রধান নোগুয়েন থু হা এ মন্তব্য করেন।
কর্তৃত্ববাদী ভিয়েতনামে প্রদর্শিত চলচ্চিত্রের যাবতীয় সহিংসতা, যৌনতা ও অসন্তোষজনক রাজনৈতিক বার্তা পর্যালোচনা করে ছবি প্রদর্শনীর ছাড়পত্র দিয়ে থাকে সরকারের এ বিভাগটি।
সরকারের নিষেধাজ্ঞা নেমে আসার পর অ্যাবোমিনেবল ছবির ট্রেইলার, প্রচারণার সব রকম তথ্য ভিয়েতনামি পরিবেশক তাদের ওয়েবসাইট ও সামাজিক মাধ্যম থেকে সরিয়ে নিয়েছে। প্রেক্ষাগৃহের প্রচারণা বোর্ড থেকেও ছবিটির পোস্টার সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
ছবিটি ভিয়েতনামি দর্শকদেরও সমালোচনার মুখে পড়েছে।
‘এটা ভিয়েতনামের জন্য অপমানজনক’,
ছবিটি দেখার উদ্দেশে হাজির হওয়া মিন হিওয়ু নামের এক ছাত্র এ কথা বলেন।
নগুয়েন মায় হুঅং নামের আরেক ছাত্র বলেন, ‘আমি এ সিনেমা আর দেখতেই চাই না, এটা হলে দেখালেও আমি দেখতাম না। নয় দাগ দিয়ে দেখানো এ মানচিত্র সম্পূর্ণ ভুল। আমি কিছুতেই এটাকে সমর্থন করি না।’
এ মাসের শুরুর দিকে দক্ষিণ চীন সাগরের অঞ্চলটির অন্য দুই দাবিদার ইন্দোনেশিয়া ও তাইওয়ানে অ্যাবোমিনেবল-এর প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।
ম্যানিলা থেকে রাষ্ট্রপতির মুখপাত্র সালভাদর পানেও সাংবাদিকদের জানান, এ ছবির প্রদর্শনী ফিলিপাইনে অব্যাহত থাকবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব সরকারের সেন্সর বোর্ডের।
ভিয়েতনাম এমন সময় এ ছবি নিষিদ্ধ করল, যখন মাসখানেক ধরে চীনের সঙ্গে জাহাজ চলাচল, সমুদ্র জরিপ প্রভৃতি বিষয়ে উত্তেজনা চলছে।
সূত্র: দ্য হিন্দু