ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী ছাদিয়া আক্তার পিংকি খাতুন। গত সোমবার রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান এ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, গত সোমবার কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হয়। এ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে ১২ হাজার ৮৮০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন ছাদিয়া আক্তার পিংকি খাতুন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রিনা খাতুন পেয়েছেন ১২ হাজার ১৩৯ ভোট।
স্থানীয় সূত্র জানা যায়, পিংকি খাতুনের বাড়ি কোটচাঁদপুর উপজেলার দোড়া ইউনিয়নের সোয়াদি গ্রামে। তার বাবার নাম নওয়াব আলী। তিন বছর আগে কোটচাঁদপুর উপজেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক নির্বাচিত হন তিনি।
পিংকি নির্বাচিত হওয়ায় খুশি স্থানীয় ভোটাররা। নজরুল ইসলাম নামের এক ভোটার বলেন, পিংকি তৃতীয় লিঙ্গের হলেও মানুষের জন্য কাজ করেছেন। এজন্য তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছি। তিনি আগামীতে আরো ভালোভাবে মানুষের সেবা করবেন, এটা আমরা আশা করি।
সাহেদ উদ্দিন নামের একজন বলেন, পিংকির বিজয় এত সহজ ছিল না। তার কর্মীরা যখন মানুষের কাছে ভোট চেয়েছেন, তখন এক শ্রেণীর মানুষ তাদেরও হিজড়া বলে কটূক্তি করেছেন। পিংকির বিজয় তাদের এ কটূক্তির জবাব।
নিজের বিজয় সম্পর্কে পিংকি খাতুন বলেন, আপনাদের মতো আমিও একজন মানুষ। সমাজের দুস্থ ও অসহায় মানুষের সেবা করার জন্য আমি নির্বাচন করেছি। কোটচাঁদপুরের জনগণ আমাকে নির্বাচিত করে তাদের সেবার সুযোগ করে দিয়েছেন। এজন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের অধিকার আদায় ও সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নে আমি কাজ করতে চাই।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ঝিনাইদহ শাখার সভাপতি আমিনুর রহমান টুকু বলেন, মানুষের মাঝে বৈষম্য দূর হচ্ছে, যার বাস্তব উদাহরণ পিংকি খাতুন। কোটচাঁদপুরের মানুষ তাকে প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করেছে। প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় যদি পিংকির মতো তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ সমাজ উন্নয়নে অংশ নেয়, আর ভোটাররা যদি তাদের সমর্থন করে, তবে বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে।