জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেকের অন্যতম সদস্য দক্ষিণ আমেরিকার দেশ একুয়েডর। দীর্ঘদিন ধরে জোটের সঙ্গে থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণে উত্তোলন হ্রাস-বৃদ্ধি করে আসছে দেশটি। তবে দেশটির অর্থনীতি ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে উঠেছে। বিদেশী ঋণের বোঝা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় দেশটি এখন আয় বাড়াতে মরিয়া। যে কারণে নগদ অর্থ হাতে নিয়ে আসতে জ্বালানি তেলের উত্তোলন ও রফতানি বাড়াতে চায় তারা। আর সে লক্ষ্যেই ওপেক থেকে বেরিয়ে জ্বালানি তেল উত্তোলন বাড়াতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছে লাতিন আমেরিকার দেশটি।
সরবরাহ কমিয়ে জ্বালানি তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে ওপেক এবং ওপেকবহির্ভূত দেশগুলোর সংগঠন নিয়ে গঠিত জোট ওপেক প্লাস। চুক্তি অনুযায়ী জোটভুক্ত দেশগুলোকে সম্মিলিতভাবে জ্বালানি তেলের উত্তোলন দৈনিক ১২ লাখ ব্যারেল কমাতে হয়। এ অবস্থায় প্রতিটি দেশকে কোটা মেনে উত্তোলন করতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে জোটের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী উত্তোলন হ্রাস করে এলেও এখন আর চুক্তি অনুযায়ী চলতে চায় না একুয়েডর। আর সে কারণেই আগামী বছরের ১ জানুয়ারি ওপেক ছেড়ে দেয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে দেশটি।
জোটের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী, একুয়েডর দৈনিক ৫ লাখ ২৮ হাজার ব্যারেল জ্বালানি তেল উত্তোলন করার কথা। কিন্তু দেশটির বর্তমান উত্তোলন ৪ লাখ ৪৮ হাজার ব্যারেলের উপরে। এছাড়া ওপেক ছাড়ার পর আগামী বছর থেকে দৈনিক উত্তোলন ৫ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেলে নিয়ে যেতে চায় বলে জানিয়েছেন দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী কার্লোস পেরেজ।
জ্বালানিমন্ত্রী বলেন, জোটের সঙ্গে করা চুক্তির বাইরে গিয়ে উত্তোলন বাড়ানোটা আমাদের অধিকারের মধ্যে পড়ে বলে মনে করি না। যদিও তারা (ওপেক) এজন্য আমাদের তিরস্কার করেনি। কিন্তু চুক্তি না মানাটা আমাদের জন্য খুব একটা স্বস্তিদায়ক হচ্ছে না।
বিনিয়োগ ও বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থায় ব্যাপক অর্থের প্রয়োজন উল্লেখ করে কার্লোস বলেন, আমরা আশা করছি চলতি বছর জ্বালানি তেলের দৈনিক উত্তোলন ৫ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেলে পৌঁছবে। আর আগামী বছর এর উত্তোলন বাড়িয়ে দৈনিক ৫ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেলে নিয়ে যাওয়া হবে।
বর্তমানে বড় আকারের রাজস্ব ঘাটতিতে রয়েছে একুয়েডর। এছাড়া প্রচুর বৈদেশিক ঋণের ভারে রয়েছে তারা। এ অবস্থায় চলতি বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪২০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি করেছে দেশটি। এর মধ্যে ৬৫ কোটি ২০ লাখ ডলার জরুরি ভিত্তিতে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া আরো ৬০০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তির অপেক্ষায় আছে দেশটি।
অর্থনৈতিক এ দুরবস্থার মধ্যে ব্যয় সংকোচন করতে সম্প্রতি জ্বালানিতে ভর্তুকি দেয়া বন্ধ করেছে সরকার, যা দেশটির জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি করেছে এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে রাজপথে নেমে আসে সাধারণ মানুষ।
একুয়েডরে জ্বালানি তেল উত্তোলন বাড়াতে সবচেয়ে বেশি উত্তোলন হওয়া একটি ব্লকে নতুন করে কূপ খনন করা হয়েছে। যেখান থেকে গেল সপ্তাহে রেকর্ড পরিমাণ জ্বালানি তেল উত্তোলন করা হয়েছে। এ সময়ে এ ব্লক থেকে দৈনিক উত্তোলন বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৮২ হাজার ৬৫৮ ব্যারেলে।
জ্বালানিমন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, একুয়েডরের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পেট্রোমাজোনাসের বাজেট এ বছর ৪০ কোটি ৭০ লাখ ডলার কমিয়ে দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এখন আরো ২৩ কোটি ডলার অর্থ চাইছে। কারণ হিসেবে জ্বালানিমন্ত্রী বলছেন, এ পরিমাণ অর্থ না পেলে উত্তোলন স্বাভাবিক রাখা কঠিন হবে। পাশাপাশি নতুন কূপ খনন বন্ধ করে দেয়া লাগতে পারে।
এদিকে রফতানি বাড়াতে জ্বালানি তেলের মান
- বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমেছে
- হিলিতে আলুর দাম কমেছে কেজিতে ৫ টাকা
- নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে সুতার বাজার ঊর্ধ্বমুখী
- ৯ মাসে ৪৩ হাজার টন শুকনা মরিচ আমদানি
- ভুট্টার বৈশ্বিক উৎপাদন পূর্বাভাস কমিয়েছে আইজিসি
- প্রথম প্রান্তিকে ভিয়েতনামের রেকর্ড কফি রফতানি