এশিয়া প্যাসিফিকে বাণিজ্য বাধা হয়ে উঠছে অশুল্কনীতি

বণিক বার্তা ডেস্ক

মুহূর্তে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অশুল্ক পদক্ষেপগুলোর বাণিজ্য ব্যয়ের পরিমাণ শুল্ক ব্যবস্থার বাণিজ্য ব্যয়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোস্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক (ইএসসিএপি) ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আঙ্কটাড) নতুন এক প্রতিবেদনে তথ্য উঠে এসেছে। খবর আফ্রিকানস লাইভ।

গত দুই দশকে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রয়োগিক (অ্যাপ্লাইড) শুল্ক কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। কিন্তু অঞ্চলটিতে -শুল্ক পদক্ষেপের (এনটিএম) সংখ্যা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রতিবেদনটিতে তুলে ধরা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে প্রভাবিত করা শুল্ক ব্যতীত নীতিমালা সংক্রান্ত অন্য নিয়ন্ত্রণগুলো হলো এনটিএম।

ইএসসিএপি আঙ্কটাডের যৌথভাবে প্রকাশিতএশিয়া-প্যাসিফিক ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট ২০১৯ (এপিটিআইআর)’ শীর্ষক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মুহূর্তে এনটিএমগুলো এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রায় ৫৮ শতাংশ বাণিজ্যকে প্রভাবিত করছে। এনটিএম বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণগুলোর একটি হলো, আঞ্চলিক বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনায়বাণিজ্য নীতির হাতিয়ারহিসেবে -শুল্ক পদক্ষেপ ব্যবহারের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা। এসব অশুল্ক নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে সরকারি ক্রয়ে সীমাবদ্ধতা, আমদানি রফতানি নিষেধাজ্ঞায় ভর্তুকির পাশাপাশি একতরফা বা বহুপক্ষীয় নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আমদানি রফতানি নিষিদ্ধ করা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নীতি পদ্ধতি হিসেবে এনটিএম প্রায়ই বৈধ হিসেবে গণ্য হলেও জটিল অধিকাংশ ক্ষেত্রে অস্পষ্ট বিধিবিধান অনুসরণের জন্য উল্লেখযোগ্য মূলধন বা সম্পদের প্রয়োজন পড়ে, ফলে এতে বিশেষভাবে ক্ষুদ্র মাঝারি উদ্যোগগুলোকে (এসএমই) ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। সাধারণত সিংহভাগ এনটিএমই স্যানিটারি খাদ্যের জন্য প্রযোজ্য ফাইটোস্যানিটারির নিয়ন্ত্রণের মতো প্রায়োগিক নিয়মনীতি হয়ে থাকে, যা মানব স্বাস্থ্য বা পরিবেশ সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্যের লক্ষ্যেও আরোপ করা হয়। নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে পদক্ষেপগুলো এমনকি বাণিজ্যকে শক্তিশালীও করে তুলতে পারে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনটি অনুসারে, বৈশ্বিকভাবে কেবল এসব পদক্ষেপেরই গড় ব্যয় জিডিপির দশমিক শতাংশ, যার পরিমাণ প্রায় দশমিক ট্রিলিয়ন ডলার।

জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ইএসসিএপির নির্বাহী সচিব আরমিদা আলিসজাহবানা বলেন, এনটিএম সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য ব্যয়ের পরিমাণ শুল্ক ব্যয়ের দ্বিগুণের বেশি হলেও এগুলো প্রায়ই টেকসই উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত সরকারি নীতি লক্ষ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মূল বিষয় হলো, কার্যকরভাবে এসব পদ্ধতি গঠন প্রয়োগ করা যাতে ব্যয় কমিয়ে আনা যায়।

ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যয়বহুল হলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জায়গামতো অত্যাবশ্যক প্রায়োগিক/কারিগরি এনটিএম না থাকা বা এগুলোর দুর্বল প্রয়োগ, টেকসই উন্নয়নের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

আঙ্কটাডের মহাসচিব মুখিসা কিতুয়ি বলেন, এনটিএমের সুবিধা বজায় রেখে বাণিজ্য ব্যয় কমিয়ে আনতে, দেশগুলোর প্রয়োজন সর্বস্তরে আরো সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। আঞ্চলিক উদ্যোগগুলোকে অবশ্যই সক্রিয়ভাবে অনুসরণ করতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এনটিএমগুলো দেশ ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে, যা কোম্পানিগুলোর জন্য এক দেশ থেকে অন্য দেশে পণ্য পরিবহন জটিল করে তোলে। ক্ষেত্রে এনটিএমগুলো আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তিগুলোর সঙ্গে সমন্বিত পারস্পরিক স্বীকৃতির ভিত্তিতে গঠিত হতে হবে বলে মনে করেন কিতুয়ি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন