ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কাটরা ইমারত

রোকসানা ফিরদাউস নিগার

মোগল শাসনামলে নির্মিত কাটরা স্থাপত্য বাংলার স্থাপত্যকে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করেছে। তৎকালীন মোগল রাজধানী ঢাকায় হওয়ায় মোগল সুবাদাররা তাদের বসবাসের জন্য রাজকীয় প্রাসাদ হিসেবে পুরান ঢাকার চকবাজারে বড় কাটরা ছোট কাটরা নির্মাণ করেন। স্থাপনা দুটি মোগল রাজকীয় স্থাপত্য শৈলীর সব বৈশিষ্ট্য অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে। ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মোগল শাসনামলে ঢাকা ছিল তাদের প্রাদেশিক রাজধানী; একই সঙ্গে বাণিজ্যিক প্রশাসনিক শাসন ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু। ১৬০৮ সালে বাংলা পুরোপুরিভাবে মোগলদের করায়ত্ত হয়ে যায়। এই সময়ে মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের পারসিক রীতিনীতি ভাবধারার প্রতি একনিষ্ঠ পৃষ্ঠপোষকতার কারণে দিল্লির মতো বাংলার স্থাপত্যও পারসিক স্থাপত্যিক কলাকৌশল দ্বারা প্রভাবিত হয়। তাই ঐতিহাসিকরা ঢাকায় নির্মিত কাটরা দুটি পারস্য স্থাপত্যের প্রতিফলন বলে মনে করেন। এবিএম হোসেন বড় কাটরাকে মধ্য এশিয়ার ঐতিহ্যবাহী নির্মাণশৈলীর অনুকরণে নির্মিত যথেষ্ট সুরক্ষিত বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এএইচদানি কাটরার উত্পত্তিস্থল হিসেবে উত্তর ভারতের ক্যারাভান সরাইয়ের কথা বলেছেন। তাই স্থাপনা দুটিতে মোগল রাজকীয় স্থাপত্যিক স্টাইলের প্রয়োগ দেখা যায়। কাটরা দুটির উত্পত্তিস্থল যা- হোক না কেন চার্লস য়েলি ১৮১৭ ১৮২৩ সালে কাটরা দুটির যে জল চিত্র অংকন করেছেন, তার সঙ্গে ক্যারাভান সরাইয়ের যথেষ্ট সাদৃশ্য পাওয়া যায়। তাছাড়া কাটরা দুটি রাজকীয় সরাইখানা, বিশ্রামাগার, ঘোড় সওয়ারের স্থান হিসেবে যে ব্যবহূত হতো, তার পক্ষেও যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য মোগল ঐতিহ্যবাহী রীতি ব্যবহার সত্ত্বেও স্থাপনা দুটির রূপ জৌলুস এখন আর অবশিষ্ট নেই; যেখানে মোগল যুগে নির্মিত অসংখ্য স্থাপনা (যেমন লালবাগ কেল্লা, ঢাকেশ্বরী মন্দির, কার্জন হল, আহসান মঞ্জিল, তারা মসজিদ ইত্যাদি) আজও বীরদর্পে তাদের শৌর্য-বীর্য প্রদর্শন করে টিকে আছে। মোগল যুগে ঢাকায় নির্মিত কাটরা স্থাপত্য নিয়ে চার্লস য়েলির অংকিত চিত্র থেকে কাটরা স্থাপত্য সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। আধুনিক যুগে এসে জোনাথান এম ব্লুম তার গ্রন্থ দ্য গ্রোভ এনসাইক্লোপিডিয়া অব ইসলামিক আর্ট অ্যান্ড আর্কিটেকচার- বড় কাটরার কথা উল্লেখ করেছেন।

তাছাড়া নাজিমউদ্দিন আহমেদের লেখা ডিসকোভার দ্য মনুমেন্টস অব বাংলাদেশ, মুনতাসির মামুনের ঢাকা: স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী এবং মাহবুবুর রহমানের সিটি অব এন আর্কিটেক্ট গ্রন্থে ছোট কাটরা বড় কাটরা সম্পর্কে জানা যায়। অন্যদিকে আহমেদ হাসান দানী তার মুসলিম আর্কিটেকচার ইন বেঙ্গল গ্রন্থে ছোট বড় কাটরার সামান্য ইতিহাস স্থাপত্যিক গঠনের বর্ণনা দিয়েছেন। এছাড়া এবিএম হোসেন সম্পাদিত গ্রন্থ বাংলাদেশ ইতিহাস সমীক্ষামালা- (স্থাপত্য) এবং কা মো যাকারিয়ার গ্রন্থ বাংলাদেশের প্রত্নসম্পদ- বড় কাটরা ছোট কাটরার স্থাপত্যিক বর্ণনা পাওয়া যায়। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কাটরা স্থাপনা দুটি কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হওয়ায় স্বতন্ত্রভাবে কাটরা দুটির ইতিহাস, স্থাপত্যিক গঠন বর্তমান অবস্থা বিশ্লেষণ, একইসঙ্গে মোগল সূক্ষ্ম সুনিপুণ

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন