চলতি মৌসুমে চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড হয়েছে। নিলামে সরবরাহ বাড়ায় অবিক্রীত চায়ের পরিমাণও বাড়ছে। চায়ের প্রতিটি নিলামে গড়ে ৮০-৯০ শতাংশ চা বিক্রি হলেও এখন তা ৬০ শতাংশে নেমে এসেছে।
প্রতি বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসের নিলামে চায়ের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। এ সময় গড়ে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত চা বিক্রি হয়ে যায়। জুন-জুলাই থেকে ভালো মানের চা উৎপাদন হলে এসব চা আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের নিলামে উত্তোলন করা হয়। কিন্তু এবার নিলামে তোলা চায়ের উল্লেখযোগ্য অংশ অবিক্রীত থেকে যাচ্ছে।
সর্বশেষ ৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ২২তম নিলামে বিক্রির জন্য চা প্রস্তাব করা হয় ৪৩ লাখ ৭৮ হাজার ৯১০ কেজি। এর মধ্যে প্রায় ২৬ লাখ কেজি কিনে নেন ব্যবসায়ীরা। বাকি প্রায় ১৮ লাখ কেজি চা অবিক্রীত থেকে যায়। এর আগে ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ২১তম নিলামে প্রস্তাবিত ৪২ লাখ ৬৫ হাজার ৯৫৮ কেজি চায়ের মধ্যে ১৫ লাখ ৭৮ হাজার কেজি অবিক্রীত ছিল। গত ২৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ২০তম নিলামেও প্রস্তাবিত চায়ের ৩০ শতাংশ বা সাড়ে আট লাখ কেজি চা অবিক্রীত থেকে গেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে নিলামে চায়ের বিক্রি ৫০ শতাংশের নিচে নামতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
নিলামে চা সরবরাহ বাড়লেও দাম সে অনুপাতে কমেনি। বাগানসংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি মৌসুমে বিলম্বে হলেও পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি আশ্বিন মাস পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। বর্ষা মৌসুমের পরেও কয়েক মাস ধরে নিয়মিত বৃষ্টিপাতের কারণে বাগানেও পর্যাপ্ত চা উৎপাদন হয়েছে। এছাড়া আবহাওয়ার কারণে বাগানে উৎপাদিত চায়ের মানও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ভালো।
ন্যাশনাল টি ব্রোকার্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক অঞ্জন দেব বর্মণ বণিক বার্তাকে বলেন, দেশে চাহিদার অনুপাতে পর্যাপ্ত চা উৎপাদন হয়েছে। মৌসুমের শেষ দিকেও বৃষ্টিপাত থাকায় চায়ের মান বজায় রাখতে পারছে বাগানগুলো। এ কারণে অবিক্রীত চায়ের পরিমাণ বাড়লেও দরপতন হয়নি। উৎপাদনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে মৌসুমের শেষ দিকে দাম কমতে পারে।