চলতি বছরের শুরু থেকে বড় ধরনের তহবিল সংকটের মুখোমুখি জাতিসংঘ। বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষী মিশনে অংশ নেয়া দেশগুলোর কাছে বড় অংকের দেনায় পড়ে গেছে বৈশ্বিক রাষ্ট্রপুঞ্জ সংস্থাটি। চলতি বছরের মাঝামাঝি বাংলাদেশসহ শান্তি মিশনের দেশগুলোর কিছু অর্থ পরিশোধ করেছে জাতিসংঘ। তবে এখনো জাতিসংঘের কাছে বড় অংকের পাওনা রয়েছে বাংলাদেশের। চলমান শান্তি মিশনের মধ্য দিয়ে এ পাওনা অর্থ বাড়ছে নতুন করে।
জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাইয়ের শুরুতে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আলোচনা ও বৈঠকে অংশ নেন। এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ জাতিসংঘের অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল লিসা এম বুটেনহেইমের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে সেনাপ্রধান শান্তি মিশনে বাংলাদেশের অর্থ পরিশোধের অনুরোধ করেন। এ সময়ে জাতিসংঘের অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল লিসা এম বুটেনহেইম তাত্ক্ষণিকভাবে ৩ কোটি ডলারের পরিশোধপত্র হস্তান্তর করেন। একই সঙ্গে বাকি ৩ কোটি ডলার অচিরেই পরিশোধ করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ এরই মধ্যে জাতিসংঘ মিশনকে সামনে রেখে বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করে ফেলেছে। বিশেষ করে অস্ত্র ক্রয়ে, যা জাতিসংঘ মিশনে ব্যবহার করে একটা ভালো সার্ভিস ফি আয়ের পরিকল্পনা ছিল। এছাড়া বর্তমানে জাতিসংঘ পরিচালিত মিশনগুলোয় যুদ্ধবাজ বাহিনীর চেয়ে যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাহিনীর প্রয়োজন বেশি। বিশ্বও এখন অনেক বেশি প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো জায়গায় নজরদারির জন্য জনবলের প্রয়োজন পড়লে সেখানে মানুষের পরিবর্তে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। এখন যাদের মিশনগুলোতে পাঠানো হয়, তাদের অবশ্যই প্রযুক্তিবান্ধব হওয়ার পাশাপাশি ভাষাগত দক্ষতা থাকতে হবে। সেদিকে জোর দিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে ৬ হাজার ৭০৫ জন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী ১০টি মিশনে শান্তিরক্ষায় কাজ করছেন। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ১ লাখ ৬৩ হাজার ১৮১ জন শান্তিরক্ষী জাতিসংঘের ৫৪টি পিস কিপিং মিশনে অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে নারী সদস্য রয়েছেন ১ হাজার ৬১৬ জন।