বুয়েট প্রশাসন সচেতন হলে হত্যাকাণ্ড নাও ঘটতে পারত —স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বুয়েট প্রশাসনের আরেকটু কেয়ারফুল (সতর্ক) থাকার দরকার ছিল। আরেকটু সতর্ক থাকলে হয়তো আবরার হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা নাও ঘটতে পারত।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত প্রধান ফটক উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন তিনি।

আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে আবরার হত্যার মতো ঘটনা না ঘটে, সেজন্য প্রশাসনের প্রতি কী নির্দেশনা দেবেন জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন না ডাক দিলে পুলিশ ভেতরে ঢোকে না, আপনারা সেটা জানেন। এ জায়গাটিতে বুয়েট কর্তৃপক্ষের আরেকটু সতর্ক থাকার দরকার ছিল। আরেকটু সতর্ক থাকলে হয়তো এ ধরনের ঘটনা নাও ঘটতে পারত। ভবিষ্যতে প্রশাসন ছাত্রদের প্রতি আরো নজর দেবে, দায়িত্ববান হবে বলে মনে করি।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আবরার হত্যাকাণ্ড যারা সংঘটিত করেছিল, এদের প্রায় সবাইকে আমরা ধরে ফেলেছি। এ পর্যন্ত ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে। এরই মধ্যে একজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আমি আগেও বলেছি, আজো বলছি, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এ মামলার চার্জশিট দেয়া হবে। আশা করছি, তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সংস্থা দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলা তদন্ত সম্পন্ন করবে। সঙ্গে সঙ্গে আমি আহ্বান রাখব, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড, এ ধরনের মেধাবী ছাত্র যারা কিনা আমাদের ভবিষ্যৎ, যে প্রজন্মকে নিয়ে আমরা অহঙ্কার করি, এ ধরনের ঘটনায় যাতে তারা হারিয়ে না যায়, যারা এ কাজটি করেছে, এর মতো খারাপ কাজ, এর মতো গর্হিত কাজ এর আগে আর ঘটেনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো অনেক ঘটনাই ঘটেছে, আমরা সানি হত্যাও দেখেছি। কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডটি সবার হূদয়ে দাগ কেটেছে। আমি আশা করব, আমাদের ছাত্রসমাজ এ ধরনের ঘটনা আর দেখবে না। এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য তারাও সজাগ থাকবে।

আবরার হত্যার পেছনে মূল কারণ কী জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এ খুনের পেছনে কারণটা কী, এটা আমাদের দেখতে হচ্ছে। যারা ধরা পড়ছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তদন্ত চলছে, এর পেছনে মোটিভটা কী জানার চেষ্টা চলছে। এমনি এমনি একজন আরেকজনকে হত্যা করবেএটা যেমন বিশ্বাসযোগ্য নয়, এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে, আরো কিছু উদ্দেশ্য আছে। এর সবই আমরা খতিয়ে দেখছি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়াশোনা করতে এসেছে, তারা সবাই মেধাবী। এ ধরনের মেধাবীরাই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। তার ভেতরে নিশ্চয়ই কোনো কারণ রয়েছে। সে কারণগুলো উদ্ঘাটন করে নিখুঁত ও তথ্যসমৃদ্ধ চার্জশিট দিতে চাই।

উল্লেখ্য, ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক কয়েকটি চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্যের সূত্র ধরে শিবির সন্দেহে আবরারকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ৬ অক্টোবর রাতে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন বলে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন