৪৫০ মিলিয়ন পাউন্ডের স্পন্সর হারাচ্ছে ম্যানইউ!

নিজেদের ইতিহাসের বাজে একটা পর্ব পার করছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। একের পর এক হারে ব্যর্থতার দ্বারপ্রান্তে গিয়ে দাঁড়িয়েছে একসময় ইউরোপ শাসন করা ক্লাবটি। এমনকি পয়েন্ট টেবিলে ম্যানইউ রেলিগেশন অঞ্চল থেকে মাত্র ২ পয়েন্টে পিছিয়ে আছে। নিজেদের মাঠের ব্যর্থতার প্রভাব এখন বাইরেও পড়তে শুরু করেছে। এর ধারাবাহিকতায় ম্যানইউ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে দলটির অন্যতম পার্টনার ও শার্ট স্পন্সর শেভ্রলেট। মূলত ম্যানইউর ধারাবাহিক ব্যর্থতা ও শিরোপাহীনতার কারণেই এখন আর নতুন করে বিশাল অংকের চুক্তিটি নবায়ন করতে রাজি নয় বিখ্যাত এ আমেরিকান গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটি। শেষ পর্যন্ত এ চুক্তি নবায়ন করতে না পারলে সেটিরেড ডেভিলদের জন্য বড় ধরনের ধাক্কা হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

২০১২ সালে ম্যানইউতে স্যার আলেক্স ফার্গুসন নিজের কোচিং ক্যারিয়ারের শেষ সময়টুকু পার করছিলেন। সে সময় ম্যানইউর পারফরম্যান্সও ছিল বেশ উজ্জ্বল। সবদিক বিবেচনা করে সাত বছরের জন্য শার্টের স্পন্সর হয়ে আসে শেভ্রলেট। ১২ সালে চুক্তি সম্পন্ন করলেও ম্যানইউ প্রথম এ জার্সি পরে মাঠে নামে ২০১৪-১৫ মৌসুমে। এ চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২০-২১ মৌসুমে।

তবে সে সময় সম্পন্ন হওয়া এ চুক্তির অংক দেখলে যে কারোরই চোখ কপালে উঠবে। মৌসুমপ্রতি প্রায় ৬৪ মিলিয়ন পাউন্ডে সাত বছরে ৪৫০ মিলিয়ন পাউন্ড। এ চুক্তির অংক এতটাই অবাক করার মতো ছিল যে, চুক্তির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই স্পন্সর প্রতিষ্ঠান জেনারেল মোটর ছাঁটাই করেন গ্লোবাল মার্কেটিং চিফ জোয়েল ইউয়ানিককে। জানা যায়, সে সময় এত বড় অংকের চুক্তি দেখে বেশ ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানটির কর্তাব্যক্তিরা। এমনকি এটাও বলা হয়, ইউয়ানিক ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের চুক্তির বিস্তারিত বিবরণও প্রদান করতে পারেননি।

তবে ঘটনা যা-ই ঘটুক, এ ঘটনায় মূলত লাভবান হয়েছিল ম্যানইউ। এর আগে পূর্ববর্তী শার্ট স্পন্সর অ্যাওন (২০১০-১৪) প্রতি মৌসুমে প্রদান করত ১৯.৬ মিলিয়ন পাউন্ড (যারা এখনো ১৭ মিলিয়ন পাউন্ডে ম্যানইউর ট্রেনিং কিট এবং ট্রেনিং গ্রাউন্ডের স্পন্সর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ আছে) এবং তার আগের প্রতিষ্ঠান এআইজির (২০০৬-১০) চুক্তি হয়েছিল ১৪.১ মিলিয়ন পাউন্ডের। অন্যদিকে তার আগের স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ভোডাফোন (২০০০-০৬) দিয়েছিল বার্ষিক ৮ মিলিয়ন পাউন্ড। প্রিমিয়ার লিগে বর্তমানে বার্ষিকভাবে শার্টের স্পন্সর থেকে ম্যানইউর কাছাকাছি অর্থও পায় না অন্য ক্লাবগুলো।

ম্যানইউর পর দ্বিতীয় স্থানে থাকে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটি শার্টের স্পন্সর থেকে পায় মৌসুমপ্রতি ৪৫ মিলিয়ন পাউন্ড, যা শীর্ষে থাকা ম্যানইউর চেয়ে ১৯ মিলিয়ন পাউন্ড কম। অন্যদিকে টপ সিক্সের তিন ক্লাবের প্রত্যেকেই শার্টের স্পন্সর থেকে পেয়ে থাকে ৪০ মিলিয়ন পাউন্ড করে। টটেনহাম পায় ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ড। কিন্তু এত বড় অংকের চুক্তির পরও শেভ্রলেটের দিক থেকে চুক্তিটি বেশ হতাশাজনক। কারণ তাদের নামাঙ্কিত শার্ট পরে এখন পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগ এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা হাতে তুলতে পারেনি ম্যানইউ।

এমন ব্যর্থতার পর নিজেদের চুক্তির মেয়াদ আর বাড়াতে একেবারেই রাজি নয় তারা। ফলে এখন নতুন স্পন্সর খুঁজতে হচ্ছে ম্যানইউকে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে কথাও বলেছে বলে জানা গেছে। যদিও ম্যানইউর পক্ষ থেকে শেভ্রলেটকে অসাধারণ পার্টনার উল্লেখ করে দুপক্ষই লাভবান হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

দ্য সান ও ডেইলি মেইল

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন