বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাবে চীন ছাড়ছে ম্যানুফ্যাকচারাররা

উপকৃত হতে পারে নয়টি ভারতীয় কোম্পানি

বণিক বার্তা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধে সবচেয়ে সুবিধাভোগীদের মধ্যে থাকবে ভারতের নয়টি কোম্পানি। বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব এড়াতে চীনের ম্যানুফ্যাকচারিং খাতকে যখন বাইরে স্থানান্তরিত করার চেষ্টা হচ্ছে, সেখানে সবচেয়ে উপকৃত হবে লারসেন অ্যান্ড তুব্র (এলঅ্যান্ডটি), সিমেন্স, ওয়ালপোল, হ্যাভেলস ইন্ডিয়ার মতো ভারতভিত্তিক কোম্পানি। ক্রেডিট সুইসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ সম্ভাবনার কথা বলা হয়। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

ক্রেডিট সুইসের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, চীন থেকে প্রায় ৩৫ থেকে ৫৫ হাজার কোটি ডলারের রফতানি বাণিজ্য সরে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশটি বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব বেশ অনুভব করছে। অন্য দেশগুলোর অভিযোজনক্ষমতা বাড়লে, বাণিজ্য সরে যাওয়ার পরিমাণ আরো বাড়বে বলে প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়। প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন ইকুইটি স্ট্র্যাটেজির সহপ্রধান নীলকান্ত মিশ্র এবং ভারতের এশিয়া-প্যাসিফিক অ্যান্ড ইকুইটি স্ট্র্যাটেজিস্টের অকৃতি স্বরূপ ও অভয় খাইতান।

প্রতিবেদনটি বলছে, নিকট ভবিষ্যতে শুল্কের প্রভাবে পণ্যের দাম বাড়াবে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের রফতানি বাজার সরে যাবে তুলনামূলক কম মূল্যের পণ্য সরবরাহ করতে সক্ষম অন্য দেশগুলোয়। ২০১৫ সালের পর থেকে চীনের ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের কর্মীবাহিনীর সংখ্যা দুই কোটি কমার পর আরো ৯০ লাখ থেকে দেড় কোটি কমার শঙ্কা রয়েছে। এ পরিবর্তনগুলো হবে শ্রমপ্রধান খাত, যেমন পোশাক ও বস্ত্র, ইলেকট্রনিক অ্যাসেম্বলি, ফুটওয়্যার, খেলনা ও আসবাবপত্রে।

বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব বুঝতে এবং তার প্রভাব যাচাই করতে ১৩টি দেশের ১০০টি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের ওপর জরিপ চালিয়ে তাদের বাণিজ্য উপাত্ত, সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রবণতা ও খাতওয়ারি প্রভাবকগুলো খতিয়ে দেখেছে ক্রেডিট সুইস।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি তাদের শুল্কনীতি পাল্টিয়েও ফেলে, জরিপের আওতায় থাকা বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট চীন থেকে সরিয়ে নেবে। ব্যবসা স্থানান্তরের পেছনে ম্যানুফ্যাকচারাররা যে দুটো প্রধান কারণের কথা উল্লেখ করেছেন, সেগুলো হচ্ছে উচ্চ উৎপাদন ব্যয় ও শ্রম দুষ্প্রাপ্যতা। এছাড়া অন্যান্য দেশের ট্যাক্স হলিডেসহ বিভিন্ন প্রণোদনামূলক কর্মসূচিও এক্ষেত্রে প্রভাব রাখছে।

ক্রেডিট সুইসের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, জরিপে অংশগ্রহণ করা প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ প্রতিষ্ঠানই এরই মধ্যে চীনের বাইরে উৎপাদন বহুমুখীকরণ শুরু করেছে। ৯১ শতাংশ কোম্পানি বলছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি তাদের শুল্ক প্রত্যাহারও করে নেয়, তবুও তারা এটা জারি রাখবে।

ভৌগোলিকভাবে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই নতুন গন্তব্য হিসেবে ভিয়েতনাম ও ভারতকে পছন্দ করছে। এর পরই রয়েছে তাইওয়ান, মেক্সিকো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন