ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক সহিংসতা: মামলা হলেও শাস্তি হয়নি কারো

তানিম আহমেদ

স্বাধীনতার পর থেকে পর্যন্ত দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলোয় অসংখ্য সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব সহিংসতায় প্রাণহানির সংখ্যাও কম নয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সংঘটিত সহিংসতায় পর্যন্ত ১৬০ জনের অধিক শিক্ষার্থী মারা গেছেন। এসব ঘটনায় প্রতিবারই আন্দোলন হয়েছে, মামলা হয়েছে, কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় শাস্তির হাত থেকে বেঁচে গেছে অপরাধীরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা বাতিলেরও ঘটনা দেখা গেছে।

১৯৭৪ সালের এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে খুন হন সাত ছাত্রনেতা। আলোচিত সেভেন মার্ডারের ঘটনায় ফাঁসির আদেশও হয়েছিল ছাত্রলীগের তত্কালীন (বহিষ্কৃত) সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম প্রধানের। কিন্তু ৭৫-পরবর্তী সরকারের সাধারণ ক্ষমায় ফাঁসির হাত থেকে রক্ষা পান তিনি। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষাঙ্গনে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি শুরু হয়েছে, তার ফলে সহিংসতা হত্যার ঘটনা ঘটে চলেছে এখনো। ক্যাম্পাসে সহিংসতায় সর্বশেষ বলি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ।

২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়ে ছাত্রলীগের নিজেদের কোন্দলে নিহত হন ৩৯ জন। আর সময়ে ছাত্রলীগের হাতে প্রাণ হারান অন্য সংগঠনের ১৫ জন। ২০০৯ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের একাংশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আসাদ ওরফে রাজীবকে হত্যা করে মরদেহ বহুতল ভবন থেকে ফেলে দেয়া হয়। ২০১০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মী নাসরুল্লাহ নাসিমকে নিজ সংগঠনের কর্মীরাই মারধর করে বহুতল ভবন থেকে ছুড়ে ফেলে হত্যা করে। এসব ঘটনায় এখনো শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়নি জড়িতদের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক . সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ছাত্র রাজনীতি বলতে যা বোঝায়, তা এখন নেই বাংলাদেশে। ছাত্র রাজনীতিতে ছাত্রও নেই, নীতিও নেই। যার ফলে ধরনের ঘটনা হচ্ছে। আমরা দেখেছিলাম ইসলামী ছাত্রশিবির রগ কাটার রাজনীতি করত, এখন ছাত্রলীগও সেই রাজনীতিতে অবতীর্ণ হচ্ছে। এসব ঘটনায় তদন্তও কখনো হয় না। যখন ক্যাম্পাস প্রচণ্ড উত্তাল থাকে, তখন ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য এক ধরনের প্রহসন করা হয়। বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে ছাত্রদল এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে ছাত্রলীগ এসব সহিংসতা করে। কিন্তু এদের কোনোদিন বিচার হয়নি, এগুলো হারিয়ে যায়। ফলে বুয়েটের আবরার হত্যার বিচার হবে কিনা, সে বিষয়েও আমি সন্দিহান।

২০১০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন