চীনকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে পেয়ে আমরা ভাগ্যবান : বিএসইসি চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনা কনসোর্টিয়ামকে (শেনঝেন-সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ) পেয়ে আমরা ভাগ্যবান। ডিএসইর শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে এতদিন শুধু এর সদস্যরাই লাভবান হয়েছেন। কিন্তু ভি নেক্সট প্লাটফর্মের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগ আসবে। এর ফলে পুঁজিবাজারে চীনা বিনিয়োগের সুফল দৃশ্যমান হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন। তিনি সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে ডিএসই-এসএমই প্লাটফর্মের ওয়েবসাইট এবং ভি নেক্সট প্লাটফর্মে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল হাশেম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল মতিন পাটোয়ারি ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী। এছাড়া অনুষ্ঠানে ডিএসইর পর্ষদ সদস্য, ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকার, নিরীক্ষক, বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, জিডিপিতে পুঁজিবাজারের অবদান কম। এখানে এসএমই কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হলে বাজারের গভীরতা বাড়বে। এরই মধ্যে ১০টির মতো কোম্পানি এসএমই প্লাটফর্মে তালিকাভুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। চলতি মূলধনের জন্য কোম্পানি ব্যাংকের কাছ থেকে অর্থায়ন সুবিধা নিতে পারে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য পুঁজিবাজারে আসতে হবে। এসএমই প্লাটফর্ম চালু হওয়ার ফলে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও প্রাইভেট ইকুইটি বিনিয়োগের সুযোগ আরো প্রসারিত হয়েছে। কারণ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও প্রাইভেট ইকুইটির জন্য একটি এক্সিট পয়েন্ট থাকা প্রয়োজন। এসএমই প্লাটফর্মের মাধ্যমে তারা এক্সিট পয়েন্ট পাবে।

ভি নেক্সট প্লাটফর্মের মাধ্যমে শুধু চীনা বিনিয়োগকারীরাই নয়, অন্যান্য দেশের বিনিয়োগকারীরাও বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারবে। এর ফলে দেশে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়বে। ডিএসইর এ উদ্যোগের কারণে দেশের আরেক স্টক এক্সচেঞ্জ সিএসইও অনুপ্রাণিত হবে বলে জানান তিনি।

ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল হাশেম বলেন, যে উদ্দেশ্যে আমরা চীনা কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে বেছে নিয়েছিলাম এর সুফল পেতে খুব বেশি দেরি নেই। 

ডিসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে এসএমই খাতে অর্থায়নের ক্ষেত্রে ব্যাংকনির্ভরতা অনেক বেশি। এক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের উচ্চ হারে সুদ দিতে হয়। কিন্তু তার পরও অনেক ক্ষেত্রেই প্রয়োজনের সময় ঋণ পাওয়া যায় না। তাছাড়া এত উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করে ব্যাংকের ঋণ সুদ দেয়াটাও বেশ কষ্টসাধ্য। আমাদের প্রত্যাশা ডিএসইর এসএমই প্লাটফর্মটি একটি কার্যকর প্লাটফর্ম হিসেবে গড়ে উঠবে। এর মাধ্যমে দেশের স্টার্টআপ ও এসএমই কোম্পানিগুলো উপকৃত হবে।

ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন তার বক্তব্যে বলেন, ভি নেক্সটের মাধ্যমে চীনা বিনিয়োগের সুফল আসতে শুরু করেছে। এর মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজার নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে। তবে সবকিছু চাইলেই রাতারাতি সম্ভব নয়। কিছুটা সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, স্টার্টআপ, এসএমই এবং বিশেষ করে দেশের আইটি খাতের কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য বিএসইসি ও ডিএসইর উদ্যোগে এসএমই প্লাটফর্মটি চালু করা হয়েছে। এ প্লাটফর্মে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য আইপিও-পরবর্তী ন্যূনতম ৫ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। অন্যদিকে ভি নেক্সট প্লাটফর্মে বিশ্বের ৩৯টি দেশের ১৬ হাজারের বেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ৯ হাজার ৪০০-এর বেশি এন্টারপ্রাইজ, ৫ হাজার ৪০০-এর বেশি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও প্রাইভেট ইকুইটি এবং ৭০০-এর বেশি তালিকাভুক্ত কোম্পানি রয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা এ প্লাটফর্মে অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর পুঁজিবাজারসহ বিভিন্ন সম্ভাবনাময় স্টার্টআপ, এসএমই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে থাকেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন