চুক্তিহীন ব্রেক্সিটে ব্রিটেনের জাতীয় ঋণ দাঁড়াবে ৫০ বছরের সর্বোচ্চে

বণিক বার্তা ডেস্ক

চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের ঝুঁকি মোকাবেলায় যুক্তরাজ্য সরকার জরুরি কর কর্তন সরকারি ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত দেশটির জাতীয় ঋণকে ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাবে বলে জানানো হয়েছে ইনস্টিটিউট ফর ফিসক্যাল স্টাডিজের (আইএফএস) প্রতিবেদনে।

চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের ফলে অর্থনীতি স্তিমিত হয়ে পড়ার যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তা ঠেকাতে যুক্তরাজ্য সরকারের ওই রকম পদক্ষেপ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছিল বলে জানিয়েছে আইএফএসের প্রতিবেদন। ধরনের পদক্ষেপে দেশটির সরকারি ব্যয়ের পরিমাণ বাড়বে।

এদিকে অনমনীয়ভাবে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ঝুঁকির দুয়ার খুলে দিতে পারে বলে জনসন সরকারকে সতর্ক করে আসছেন তার দেশী বিদেশী প্রতিপক্ষরা। অন্যদিকে ব্রাসেলসের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের চুক্তিহীন নাকি চুক্তিসহ ব্রেক্সিট হবে, সেটার হিসাব বাদ দিয়ে আগামী বছরের মধ্যে দেশটির সরকারি ঋণ বর্তমানের দ্বিগুণ হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে থিংকট্যাংক আইএফএস।

সংস্থাটি বলছে, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট সরকারি ঋণ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের যাবতীয় খাতের মোট ঋণ বা জাতীয় ঋণের পরিমাণ আগামী বছর নাগাদ দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৯০ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। গত শতকের মধ্য-ষাট দশকের পর এটিই হবে দেশটির সর্বোচ্চ জাতীয় ঋণ।

ব্রিটেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য, স্কুল পুলিশ বিভাগের জন্য তহবিল বাড়িয়েছে, যা সরকারি ব্যয়ে একটি ছোটখাটো বোমা বিস্ফোরণ ঘটাবে বলে জানিয়েছে আইএফএস। কারণ চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের ধাক্কা সইতেই দেশটির সরকারকে প্রাণপণ লড়তে হবে। তার ওপর এসব খাতের ব্যয় বৃদ্ধি গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো দেখা দেবে। সবকিছুর ফলে আগামীতে দেশটির অর্থনীতি সংকুচিত ঋণের পরিমাণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞরা।

বর্তমানে গৃহীত পদক্ষেপের কারণে যে পরিমাণ ঋণ বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, আগামীতে ঋণ বৃদ্ধি ঠেকাতে দেশটির সরকারি ব্যয় কমানোর আরেকটি নতুন পদক্ষেপ নেয়া দরকার হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইএফএসের পরিচালক পল জনসন। আগামী নির্বাচনকে সমানে রেখে কর জ্বালানি শুল্কে ছাড় দেয়ার যে কথা ভাবা হচ্ছে, তা দেশটির অর্থনীতি সরকারি আর্থিক খাতে ঘোরতর অনিশ্চয়তা তৈরি করবে বলে জানিয়েছেন পল জনসন। তিনি বলেন, কোনো ধরনের কার্যকর আর্থিক পরিকল্পনা না নিয়ে বর্তমান সরকার হালভাঙা নাবিকের মতো ইতস্তত ঘুরে বেড়াচ্ছে। সরকারের অবস্থান আমাদের অর্থনীতি সরকারি আর্থিক খাতে অভূতপূর্ব ঝুঁকি অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী বাজেটে সার্বিক বিবেচনায় স্থায়ীভাবে কর কর্তনের কোনো অর্থ নেই।

এদিকে শরতে পেশ করতে যাওয়া বাজেটকে সামনে রেখে এক হিসাবে দেখা গেছে, সরকারি ব্যয় কর থেকে আয়ের মধ্যকার ঘাটতি আগামী বছরের মধ্যে হাজার কোটি পাউন্ডে দাঁড়াতে পারে। খাত দুটির বর্তমান ঘাটতি হাজার ৯৩০ কোটি পাউন্ড।

পরিশেষে, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট হলে সরকারের যাবতীয় পদক্ষেপ তথা ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সুদহার কর্তন, জরুরি কর কর্তন সরকারি ব্যয় বাড়ানোর কোনো উদ্যোগই ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস রুখতে পারবে না বলে জানিয়েছে আইএফএস।

সূত্র: গার্ডিয়ান

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন