বিদায় নয়, নতুন ছবি নিয়ে আসছেন তিনি!

ফিচার ডেস্ক

পেইন অ্যান্ড গ্লোরি ছবির পর সবাই ধরে নিয়েছিলেন বিখ্যাত স্প্যানিশ পরিচালক পেদ্রো আলমদোভার চলচ্চিত্রকে বিদায় জানাচ্ছেন...

পেদ্রো আলমদোভারও ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন পেইন অ্যান্ড গ্লোরি মৃত্যুর আগে তার শেষ চলচ্চিত্রকর্ম মনে করে নিয়েছেন অধিকাংশ মানুষ। এ ছবির গল্প স্প্যানিশ চলচ্চিত্র পরিচালক সালভাদর মালোর জীবন, যার ভূমিকায় আমরা ভগ্ন স্বাস্থ্যের অ্যান্তোনিও বান্দেরাসকে দেখি। যাকে অনায়াসেই পেদ্রো আলমদোভারের কমিক-আইকন হিসেবেও ধরে নেয়া যায়; যে লড়াই করেছে মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে, নিজের ভেতরের কপটতার সঙ্গে এবং প্রায় বুড়িয়ে আসা শরীরকে সচল রাখার সঙ্গে। ফলে চলচ্চিত্র বোদ্ধা ও দর্শক-সমালোচকদের এ ছবি দেখে মনে হতেই পারে ৭০ বছরের পরিচালক এখন চূড়ান্ত বিদায় লগ্নে এসে হাজির হয়েছেন। পেইন অ্যান্ড গ্লোরি তার শেষ চলচ্চিত্র কর্ম। কিন্তু সবার ধারণা পেদ্রো ভুল প্রমাণ করতে যাচ্ছেন।

আমার সন্দেহ আছে এ ছবিতে এমন কিছু আছে, যা বলে দেয় যে আমি বিদায় জানাচ্ছি’—নিউইয়র্কে এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন আলমদোভার। কয়েকদিন আগেই আমেরিকায় তার সর্বশেষ ছবি পেইন অ্যান্ড গ্লোরি মুক্তি পেয়েছে।আহ্, আমি তা মনে করি না। আগামীকাল কী ঘটবে আমি জানি না, কিন্তু না, আমি নিশ্চিতভাবেই ছবি বানানো চালিয়ে যেতে চাই।

বরং আলমদোভার অবসরের পরিকল্পনা উড়িয়ে দিয়ে তার প্রথম ইংরেজি ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার কথাই জানিয়েছেন। তিনি বলছেন তার হাতে প্রায়-সমাপ্ত হওয়া চিত্রনাট্য। এক আমেরিকান লেখকের পাঁচটি গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে ছবির কাহিনী। ছবির পটভূমি টেক্সাস, ওকল্যান্ড ও মেক্সিকো। সঙ্গে তিনি আরো দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনাও করেছেন। এর একটি ১ ঘণ্টার, অন্যটি ২০ মিনিটের। এ ছবি দুটি আগামী বছর পূর্ণদৈর্ঘ্যে চলচ্চিত্রে হাত দেয়ার আগেই শেষ করতে পারবেন বলে মনে করছেন।

ছবির ধরন ও কাহিনী আগের ছবির চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা’—বলেন তিনি। তার কথার সমর্থনে স্প্যানিশের আশ্রয় নিয়ে বলেন, ‘কমেদিয়া সুরিয়েলিস্তা সুরিয়েলিস্ট কমেডি, তারপরই যোগ করেন, ‘একে অ্যাবসার্ড চলচ্চিত্রও বলা যায়!’


মুখের খোঁচা খোঁচা দাড়িতে হাত চালিয়ে পরিচালক হেসে বলেন, ‘যেকোনোভাবেই হোক, আমার মনে হচ্ছে আমি নতুন এক পর্ব শুরু করতে যাচ্ছি, হয়তো এ পরিক্রমা আমার অতীত কর্মকাণ্ডের চেয়েও অনেক সাহসী হতে চলেছে। দেখি কী হয়।

সবর্েশষ ছবি পেইন অ্যান্ড গ্লোরি নিয়েও অনূভূতির কথা জানান আলমদোভার।আমার এ ছবির ক্ষেত্রে মনে হয়েছে অতীতের চেয়ে এ ছবিতে আমি দর্শকদের কাছে সরাসরি পৌঁছাতে পেরেছি। তাদের প্রতিক্রিয়া এমন, তারা প্রত্যাশা করছে একই স্বাদের এ রকম আরেকটি ছবি যেন আমি বানাই। কিন্তু আমার সাধারণ অনুভূতি এর বিপরীত।

আলমদোভারের এ ঘোষণা তার ছবিগুলোর মতোই। আশির দশকের শেষভাগে পরিচালক হিসেবে তিনি পাদপ্রদীপের আলোয় আসেন। তার ম্যাটাদোর থ্রিলার থেকে অস্কারের জন্য মনোনয়ন পাওয়া ওমেন অন দ্য ভার্জ অব এ নার্ভাস ব্রেকডাউন, রোমান্টিক কমেডি টাই মি আপ! টাই মি ডাউন! পর্যন্ত সব ছবিতেই আলমদোভার সাফল্যের সঙ্গে দর্শককুলকে অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখতে পেরেছেন। তার এক ছবির পর আরেক ছবি নিয়ে কখনই নিশ্চিত ভবিষ্যদ্বাণী করা যায়নি। ফলে পরিচালকের এই শেষ বয়সে এসেও তার ছবি তৈরি আলোচনা শেষ হয়েও হলো না দশা। যারা পেইন অ্যান্ড গ্লোরি দেখে পরিচালকের শেষ দেখে ফেলেছিলেন, নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন যে আলমদোভার চলচ্চিত্রকে বিদায় বলছেন, তাদেরকে ভুল প্রমাণ করতে যাচ্ছেন এ স্প্যানিশ কিংবদন্তি।

 

সূত্র: ইন্ডিওয়্যার

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন