সম্পদের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম ১০ ব্যাংক

. জেপি মরগান চেজ: ২ দশমিক ৭৪ ট্রিলিয়ন ডলার

প্রযুক্তিপ্রিয় গ্রাহকদের টার্গেট করে এবং নিজেদের সেবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যোগ করার মাধ্যমে অন্যান্য প্রতিযোগীর তুলনায় বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে গেছে জেপি মরগান চেজ। ডিজিটাল চ্যানেলের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে যুক্ত করার মধ্য দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে বড় লাভবান হতে পারে ব্যাংকটি। কেননা তারা প্রত্যাশা করছে, এ নতুন প্রজন্মের গ্রাহকরা পরবর্তী সময়ে উচ্চতর মূল্যের গ্রাহক হয়ে উঠবে। ব্যাংকিং প্রযুক্তিতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করছে তারা। চলতি বছর প্রযুক্তিতে সব ব্যাংক থেকে বেশি বিনিয়োগ করেছে জেপি মরগান, ১ হাজার ১৪০ কোটি ডলার।

 

. ব্যাংক অব আমেরিকা: ২ দশমিক ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার

ব্যয় হ্রাস ও ডিজিটাল যুগের প্রযুক্তি গ্রহণ করে তরুণ গ্রাহকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে ব্যাংক অব আমেরিকা। ব্যাংকটির ডিজিটাল শাখাগুলোয় গ্রাহকরা নতুন দিনের ব্যাংকিংয়ের বিভিন্ন সেবা পেয়ে থাকেন। ব্যাংকটির কল সেন্টারে গ্রাহকরা ভিডিও কলের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন। ব্যাংকটিরডিজিটাল-অনলি সেবাজেলিএরিকা রিটেইল ব্যাংকিং গ্রাহকদের কাছে সেবার নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। এ সেবা তরুণ গ্রাহকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। ব্যাংকটিরভয়েজ-ইনেবেল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট এরিকা বিল পরিশোধসহ বিভিন্ন সেবা দিতে সহায়তা করে। ২০১৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করার পর এরিকার বছরপ্রতি গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০ লাখে।

 

. সিটিগ্রুপ: ১ দশমিক ৯৬ ট্রিলিয়ন ডলার

পরপর তিন বছর কিপলিঙ্গারস পারসোনাল ফিন্যান্সেরবেস্ট ব্যাংক ফর হাই-নিট-ওয়ার্থ ফ্যামেলিজ পুরস্কার পেয়েছে সিটিব্যাংক। যেসব গ্রাহক ২ লাখ ডলারের ডিপোজিট, রিটায়ারমেন্ট ও ইনভেস্টমেন্ট অ্যাকাউন্ট চালায়, তাদেরসিটিগোল্ড প্যাকেজ সুবিধা দেয় ব্যাংকটি। বিজনেস ইনসাইডার ইন্টেলিজেন্সস মোবাইল ব্যাংকিং কম্পিটিটিভ এজ স্ট্যাডি বলছে, মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে সিটি। ২০১৯ সালে সিটির ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবায় বড় আকারে গ্রাহক বেড়েছে গত বছরের তুলনায় ১১ দশমিক ৩ শতাংশ। অন্যদিকে মোবাইল সেবা ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে গত বছরের তুলনায় ২২ দশমিক ৪ শতাংশ।

 

. ওয়েলস ফার্গো অ্যান্ড কোং: ১ দশমিক ৮৯ ট্রিলিয়ন ডলার

মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে যেসব নতুন প্রজন্মকে আকর্ষণ করতে চাচ্ছে, তাদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ওয়েলস ফার্গো। ব্যাংকটিরপে উইথ ওয়েলস ফার্গো বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এছাড়া আরেক অ্যাপ গ্রিনহাউজ গ্রাহকদের বিল প্রক্রিয়া সহজ ও ব্যয়ে নজর রাখার মাধ্যমে গ্রাহকদের সহায়তা করছে। কন্ট্যাক্টলেস পেমেন্টে বাজারে যোগ দেয়ার মাধ্যমে প্রসার বেড়েছে ব্যাংকটির।

 

. গ্লোডম্যান স্যাকস: ৯২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার

অনলাইন ব্যাংক মারকাস চালু করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহ ব্যাংকে পরিণত হয়েছে গ্লোডম্যান স্যাকসঅনলাইন ব্যাংকটি নির্দিষ্ট সুদহারে ঋণ, সঞ্চয়ী হিসাবের ওপর উচ্চ সুদ দেয়ার মতো সেবা দেয়। মারকাসের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যাংকিং জায়ান্টটি পারসোনাল ফিন্যান্স ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ ক্ল্যারিটি মানিসহ বেশকিছু অ্যাপ অধিগ্রহণ করেছে। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপনের সঙ্গে মিলে অ্যাপল-কার্ড তৈরি করছে তারা। এর মাধ্যমে আইফোন ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন আর্থিক সেবা পাবে।

. মরগান স্ট্যানলি: ৮৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার

প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করার দিক থেকে পিছিয়ে নেই মরগান স্ট্যানলি। নতুন ব্যাংকিং প্রযুক্তি সাদরে গ্রহণের সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে নিয়োগ দিয়ে ডিজিটাল ব্যাংকিং বাজারে ভালোভাবেই এগিয়ে নিয়েছে মরগান স্ট্যানলি। ব্যাংকটি ধারণা করছে, ২০৩০ সালের মধ্যে উত্তর আমেরিকার নতুন প্রজন্ম নিয়ন্ত্রণ করবে ২০ ট্রিলিয়ন ডলারের বৈশ্বিক সম্পদ। এজন্য এখনই আগামী দিনের জন্য তরুণ গ্রাহকদের ধরতে চাইছে তারা। অন্যদিকে ক্লাউড কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানবক্সের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মরগান, যাতে গ্রাহকদের ক্লাউডভিত্তিক সেবা দক্ষতার সঙ্গে দেয়া যেতে পারে।

 

. ইউএস ব্যানকর্প: ৪৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার

টেক জায়ান্টদের সঙ্গে টেক্কা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মার্কিন শীর্ষ ব্যাংকের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ইউএস ব্যাংক ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশনের মূল প্রতিষ্ঠান ইউএস ব্যানকর্প। যখন ফেসবুক, অ্যামাজন, অ্যাপল ও গুগল ব্যাংকিং সেবা চালু করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, তখন ইউএস ব্যানকর্প নিজস্ব প্রযুক্তি উন্নত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যাংকটির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তারা নিজেদের ব্যাংকিং প্রযুক্তি আরো উন্নত করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

 

. পিএনসি ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস: ৩৯ হাজার ২০০ কোটি ডলার

গ্রাহকদের বিশেষ সুবিধা প্রদান ও নিজস্ব পণ্য হাজির করার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ব্যাংক হিসেবে পরিচিত পিএনসি ব্যাংক। ২০১৭ সাল থেকে করপোরেট গ্রাহকদের জন্য মোবাইল পেমেন্ট সেবা চালু করে ব্যাংকটি। ২০১৯ সালে জালিয়াতি রোধে নতুন প্রযুক্তির ক্রেডিট কার্ড ছেড়েছে তারা। যে কার্ডের কোড একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর পরিবর্তন হয়ে যাবে। যার ফলে জালিয়াতদের তা অনুমান করা কঠিন হবে।

 

. টিডি ব্যাংক: ৩৮ হাজার ৪০০ কোটি ডলার

বিদেশে প্রভাব থাকা টিডি ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষ ব্যাংক হয়ে উঠেছে। আর এর পেছনে ভূমিকা রেখেছে ব্যাংকটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ও ডিজিটাল প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার। কানাডায় ক্লারি নামে একটি এআই অ্যাপ চালু করেছে টিডি ব্যাংক। এই অ্যাপ ক্রেডিট কার্ডে বিভিন্ন তথ্য সময় সময় হালনাগাদ করে থাকে এবং গ্রাহকদের জানিয়ে দেয়। এর ফলে কল সেন্টারে ঝামেলা নেই। যুক্তরাষ্ট্রেও এ ধরনের সেবা চালু করতে যাচ্ছে ব্যাংকটি। এছাড়া জালিয়াতি রোধ ও অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন নিশ্চিত করতে নতুন প্রযুক্তি চালু করতে যাচ্ছে।

 

১০. ক্যাপিটাল ওয়ান: ৩৭ হাজার ৩০০ কোটি ডলার

সম্প্রতি তথ্য বেহাত হওয়ার কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ালেও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষ ব্যাংক হিসেবে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে ক্যাপিটাল ওয়ান। ব্যাংকটিতে ডিজিটাল প্রযুক্তি গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। ব্যাংক প্রযুক্তি কর্মী ২০১১ সালের ২ হাজার ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ২০১৯ সালে করেছে ৯ হাজার। এছাড়া এটি এআই অ্যাপ ছেড়েছে, যা গ্রাহকদের বিভিন্ন সেবা দিচ্ছে। চলতি বছর ফিনটেক ইউনাইটেড কিনেছে ব্যাংকটি। ফিনটেক ইউনাইটেড যেসব ব্যক্তি রিটায়ারমেন্টের কাছাকাছি রয়েছে, তাদের ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট সেবা দিয়ে থাকে।        

  সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন