অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তায় বিশেষজ্ঞ পরামর্শ

হ্যাকারের কবলে পড়বেন না, এমন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না। তবে এমন কিছু কৌশল আছে, যেগুলো অবলম্বন করলে অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে নিরাপত্তা বলয় ভেঙে অ্যাকাউন্টের তথ্য চুরি বা হস্তগত করা হ্যাকারদের জন্য খুব কঠিন হয়ে পড়ে। নিউইয়র্কভিত্তিক প্রযুক্তি নিরাপত্তা কোম্পানি সিকিউরিটি স্কোরকার্ডের প্রধান গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মকর্তা অ্যালেক্স হেইড এ ব্যাপারে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখতে তিনি কয়েকটি বিষয় মেনে চলার কথা বলেছেন। তার মতে, নিরাপত্তার জন্য এসব হলো ন্যূনতম সতর্কতা। এসব সতর্কতা উপেক্ষা করলে সাধারণ হ্যাকারও আপনার অ্যাকাউন্ট খুব সহজে হস্তগত করতে পারবে। এ বিশেষজ্ঞের পরামর্শগুলো হলো


নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন

 

হেইড জানান, হ্যাকাররা লাখ লাখ অ্যাকাউন্টের লগইন তথ্য ও পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করে। আগে চুরি যাওয়া বা উন্মুক্ত হওয়া ডাটাবেজ থেকে তারা এসব তথ্য সংগ্রহ করে। হ্যাকররা সাধারণত একসেট লগইন তথ্য থেকে প্রাপ্ত ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে একাধিক ওয়েবসাইটে প্রবেশের চেষ্টা করে। কারণ অনেক ব্যবহারকারীই একাধিক ওয়েবসাইটে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। এ কারণে প্রত্যেক ওয়েবসাইটে ভিন্ন ভিন্ন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত। পাশাপাশি এসব পাসওয়ার্ড নিয়মিত পরিবর্তন করলে হ্যাকারদের কাছে আগের চুরি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অকার্যকর হয়ে পড়ে।


বিভিন্ন সাইটে একই নিরাপত্তা প্রশ্ন এড়ানো

 

পাসওয়ার্ড রিসেটের জন্য ব্যবহূত সিকুউরিটি কোয়েশ্চন (নিরাপত্তা প্রশ্ন) বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও ওয়েবসাইটের জন্য একই রাখা যাবে না। এতে একটি ওয়েবসাইট হ্যাক হলে হ্যাকাররা ওই সিকিউরিটি কোয়েশ্চন দিয়ে আপনার ব্যবহূত অন্য ওয়েবসাইটেও প্রবেশ করতে পারবে। এতে আপনার সব অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড খুব সহজেই হ্যাকাররা রিসেট করে দিতে পারবে।


নিরাপত্তা প্রশ্নের ভুয়া উত্তর

 

হ্যাকারদের বিভ্রান্ত করতে এটি একটি চমত্কার কৌশল। পাসওয়ার্ড রিসেট কোয়েশ্চনে সাধারণ ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হয়। এক্ষেত্রে ভুয়া তথ্য দেয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। এ ধরনের চালাকি হ্যাকারদের ব্যর্থ করে দিতে পারে।


পাসওয়ার্ড ম্যানেজার

 

অনেক অ্যাকাউন্ট ও ওয়েবসাইট ব্যবহার করলে এত বেশি আলাদা পাসওয়ার্ড মনে রাখা কঠিন। এক্ষেত্রে কিপাস বা এ রকম কোনো পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করা যেতে পারে। এসব সফটওয়্যার আপনার জন্য কঠিন পাসওয়ার্ড তৈরি করে দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে লগইনের সময় পাসওয়ার্ড স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষণ করে। ফলে এসব পাসওয়ার্ড উদ্ধার করা হ্যাকারদের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়ে।

 

সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যক্তিগত তথ্য উন্মুক্ত না রাখা

 

সোস্যাল মিডিয়া থেকে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ হ্যাকারদের জন্য খুব সহজ একটি কৌশল। বিশেষ করে পাসওয়ার্ড রিসেট কোয়েশ্চন এক্ষেত্রে খুবই নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করতে পারে। অনেকেই পোষাপ্রাণীর নাম, সন্তানের জন্মতারিখ, হানিমুনের স্থান ইত্যাদি সাধারণ বিষয় রিসেট কোয়েশ্চনের উত্তরে লিখে থাকেন। এসব তথ্য খুব সহজেই আপনার সোস্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে উদ্ধার করা সম্ভব।


মাল্টিফ্যাক্টর অথেনটিকেশন

 

সম্ভব হলে সব অ্যাকাউন্টেই মাল্টিফ্যাক্টর অথেনটিকেশন রাখা উচিত। এক্ষেত্রে লগইন ভেরিফিকেশনের জন্য সেলফোনে এসএমএসের মাধ্যমে কোড পাঠানোর ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তায় এটিই সবচেয়ে সহজ ও নির্ভরযোগ্য কৌশল হতে পারে।

সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন