রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণের পণ্য বিক্রি হচ্ছে খাতুনগঞ্জে

ওমর ফারুক চট্টগ্রাম ব্যুরো

রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় বিতরণকৃত ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে খাদ্যপণ্যের পরিমাণ অনেক বেশি। রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিতরণের পর উদ্বৃত্ত পণ্য চলে আসে স্থানীয় বাজারে। সেখান থেকে সিন্ডিকেটের হাত ঘুরে রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিতরণকৃত পণ্য চলে যায় ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে।

খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের আড়ত পাইকারি দোকানগুলোয় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আসা ট্রাকভর্তি পণ্য প্রতিদিনই প্রবেশ করছে খাতুনগঞ্জে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য, টয়লেট্রিজ, প্রসাধনী, ক্রোকারিজ স্টেশনারিসহ গৃহস্থালি সামগ্রী। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবেশ করছে ডালজাতীয় পণ্য সাদা মটর মসুর ডাল। খাতুনগঞ্জের বাজারে প্রতিদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে শুধু ডালই আসছে ১৫-২০ ট্রাক। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে আসা এসব পণ্য খাতুনগঞ্জের বাজারে বিক্রিও হয় স্বাভাবিকের তুলনায় কম দামে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পণ্য বিক্রির সঙ্গে জড়িত উখিয়ার রমিজ উদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, দাতা সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, ক্রোকারিজ, স্টেশনারি, ওষুধ, টয়লেট্রিজ, প্রসাধনীসহ বিভিন্ন পণ্য রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। বিতরণকৃত পণ্যের অর্ধেকেরও কম ব্যবহার করে রোহিঙ্গারা। এমনকি এসব ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে টয়লেট্রিজ পণ্যসহ এমন অনেক পণ্য রয়েছে, যেগুলো ব্যবহারে অভ্যস্ত নয় রোহিঙ্গারা। এনজিওর মাধ্যমে এসব পণ্য বিতরণের পর পরই ক্যাম্পগুলোর অভ্যন্তরীণ বাজারে বিক্রি হয়ে যায়। এরপর স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পণ্যগুলো পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার বাজারগুলোয় চলে যায়। এর মধ্যে ডাল, চাল, তেল, লবণ, চিনিসহ যেসব পণ্য বেশি পরিমাণে উদ্বৃত্ত থেকে যায়; সেগুলো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে চলে আসে।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আসা পণ্য ক্রয়ের সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তি জানান, খাতুনগঞ্জ থেকে ডালজাতীয় পণ্য কিনে নিয়ে সেগুলো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিতরণ করে থাকে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান। কিন্তু রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিতরণকৃত এসব পণ্যের বেশির ভাগই আবার বাইরে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি হয়ে যায়। একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এসব পণ্যের একাংশ টেকনাফ থেকে কক্সবাজার সদর, চকরিয়া, পেকুয়া, বাঁশখালী সাতকানিয়ার স্থানীয় বাজারে চলে যায়। এর মধ্যে যেসব পণ্য বেশি পরিমাণে ফেরত আসে, সেগুলো চলে যায় খাতুনগঞ্জে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, খাতুনগঞ্জের মেসার্স হালেক ট্রেডিং, হাজী স্টোর, সবুজ স্টোরসহ আরো ১৫-২০ প্রতিষ্ঠান বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পফেরত পণ্য বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত।

বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ীরা। এখানকার ডাল ব্যবসায়ী মেসার্স হক ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী আজিজুল হকসহ আরো কয়েকজন ব্যবসায়ীর অভিযোগ, রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ফেরত আসা পণ্যের কারণে বাজারের দ্রব্যমূল্যের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। কারণ এসব পণ্য বাজারে বিক্রি হচ্ছে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম দামে। এসব পণ্য কেনাবেচার সঙ্গে একটি সিন্ডিকেট জড়িত, যার বিস্তৃতি রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে খাতুনগঞ্জ পর্যন্ত। বাজারের নির্দিষ্ট কয়েকজন ব্যবসায়ী এসব রোহিঙ্গা ক্যাম্পফেরত পণ্য ক্রয় করেন। এরপর এসব পণ্য স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম দামে বিক্রি করেন তারা। ফলে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন