এশিয়ার বাজারে বিক্রি করা সব ধরনের অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম নভেম্বর থেকে বাড়িয়ে দিতে পারে সৌদি আরব। আরামকোর দুটি স্থাপনায় ড্রোন হামলার পর গত মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বেঞ্চমার্কে জ্বালানি পণ্যটির দাম বাড়ে। এ হামলার পর এশিয়ার বাজারে দাম বাড়ানোর চিন্তা করছে দেশটি। খবর রয়টার্স।
এশিয়ার পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো
থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী,
নভেম্বরে আরব লাইট ক্রুডের অফিশিয়াল সেলিং
প্রাইস (ওএসপি) ব্যারেলপ্রতি জুলাইয়ের তুলনায় ৫০ সেন্ট বাড়তে পারে, যা
জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় জ্বালানি তেল ও
গ্যাস উত্তোলন প্রতিষ্ঠান আরামকোর আবকাইক ও খুরাইস স্থাপনায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর
ড্রোন হামলা হয়। এতে দেশটির তেল উত্তোলন দৈনিক ৫৭ লাখ ব্যারেল কমে যায়, যা
দেশটির দৈনিক মোট উত্তোলনের অর্ধেক আর বৈশ্বিক উত্তোলনের প্রায় ৫ শতাংশ। এ হামলার
পর ভোক্তা দেশগুলোর সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে অভ্যন্তরীণ মজুদ থেকে জ্বালানি তেল
উত্তোলন করে দেশটি। এছাড়া পরিশোধন কমিয়ে আনার পাশাপাশি জ্বালানি তেলের গ্রেড
পরিবর্তন করে সৌদি।
হামলার জেরে দীর্ঘদিন ধরে মন্দা
অবস্থায় থাকা জ্বালানি তেলের বাজার হঠাৎ চাঙ্গা হয়ে ওঠে। এ সময় ক্যাশ দুবাই স্পট
প্রিমিয়াম গড়ে ৬৫ শতাংশ এবং ডিএমই ওমান প্রিমিয়াম ২৯ শতাংশ বাড়ে। এছাড়া আবুধাবির
মার্বান ক্রুডের স্পট প্রিমিয়ামও ২০১৩ সালের পর এশিয়ার বাজারে বেড়ে সর্বোচ্চে
পৌঁছায়।
তবে এ হামলার পর প্রত্যাশার তুলনায়
দ্রুত উত্তোলন সক্ষমতায় ফিরে আসতে সক্ষম হয় সৌদি আরব। ফলে দেশটি এখন জ্বালানি
তেলের মূল্য বাড়িয়ে দিতে আগ্রহী বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
উত্তর এশিয়ার পরিশোধন কেন্দ্রের একটি
সূত্র জানিয়েছে, এশিয়ার বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৫০ সেন্ট বাড়ালেও সেটি
আরব লাইট ক্রুডের উৎপাদনে সহায়ক হবে না।
খাতসংশ্লিষ্ট অন্য একটি সূত্র
জানিয়েছে, এশিয়ার বাজারে সৌদি আরব অতিরিক্ত জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম হয়। এছাড়া
জ্বালানি তেলের দামে দ্রুত উত্থান-পতনের ফলে নভেম্বরে এশিয়ার বাজারে আরব হেভি ক্রুডের ওএসপি নিয়ে এ
মুহূর্তে সঠিক প্রাক্কলন করা কঠিন।
সৌদি ক্রুড উত্তোলনের একটি বড় অংশ
জ্বালানি তেল। কিন্তু সেপ্টেম্বরে হামলার পর দেশটির পরিশোধন উপজাত জ্বালানি থেকে
প্রান্তিক মুনাফা ব্যারেলপ্রতি মাইনাস ১২ থেকে প্লাস ৪ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করে।
এছাড়া ২০২০ সাল থেকে রফতানি হওয়া জ্বালানি তেলে নিম্নমানের সালফারের উপস্থিতির
কারণে চাহিদা কমে আসবে বলে মনে করা হয়।