চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যানুফ্যাকচারিং কার্যক্রম আগের মাসগুলোর চেয়ে বেশি সংকুচিত হয়েছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হ্রাস দেশটির ম্যানুফ্যাকচারিং কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে মজবুত আমদানি-রফতানির সম্পর্ক থাকা ইউরোপীয় অংশীদারদের প্রবৃদ্ধি কমায় দক্ষিণ আফ্রিকার উৎপাদন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। খবর বিবিসি।
মৌসুমভিত্তিক সংশোধিত আবসা পারচেজিং
ম্যানেজারস ইনডেক্স (পিএমআই) ৪১ দশমিক ৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে,
যা এক দশকের নিম্নে। আগস্টে দেশটির পিএমআই ছিল
৪৫ দশমিক ৭ পয়েন্ট। দেশটির মোট জিডিপির ১৪ শতাংশের উৎস ম্যানুফ্যাকচারিং খাত।
স্টেলেনবশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চের সঙ্গে যৌথভাবে আবসার
সূচকটি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত,
কোনো দেশের পিএমআই সূচক ৫০ পয়েন্টে নিচে হলে
সংশ্লিষ্ট দেশের অর্থনীতি সংকুচিত,
আর বেশি হলে সম্প্রসারিত হয়েছে বলে ধরা হয়।
এর আগে ব্লুমবার্গের এক সমীক্ষায়
সেপ্টেম্বরে দেশটির ম্যানুফ্যাকচারিং কার্যক্রম আগস্টের চেয়ে সামান্য বাড়তে পারে
বলে পূর্বাভাস করা হয়েছিল। আগস্টে দেশটির ম্যানুফ্যাকচারিং কার্যক্রম ৪৬ দশমিক ৫
পয়েন্টে দাঁড়াতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল সংস্থাটির প্রতিবেদনে।
তিনটি খাতে বড় ধরনের পতন দেখা দেয়ায়
সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যানুফ্যাকচারিং শ্লথ হয়ে পড়েছে। প্রথমত দেশটির নতুন
ক্রয়াদেশ কমেছে। সেপ্টেম্বরে এটি ৪০ দশমিক ৭ পয়েন্টে নেমে এসেছে। দ্বিতীয়ত
সেখানকার পণ্যমজুদ ক্রয় আগের মাসের চেয়ে কমে ৩৯ দশমিক ৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা
এক দশকের নিম্নে। তৃতীয়ত একই সময়ে দেশটির বাণিজ্য কার্যক্রম কমে দাঁড়িয়েছে ৩৯
দশমিক ৩ পয়েন্টে, যা এক বছরের নিম্নে।
এদিকে সহসা দেশটির অর্থনৈতিক পরিবেশ
ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে ব্যাংকটির প্রতিবেদনে।
অন্যদিকে আগামী ছয় মাসে দেশটির বাণিজ্য পরিবেশ কোন অবস্থায় ঠেকতে পারে, সে
প্রত্যাশায় পিএমআই কমে দাঁড়িয়েছে ৪৬ দশমিক ১ পয়েন্টে। খাতটির পিএমআই এ নিয়ে টানা
চার মাস কমেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
বৈশ্বিক অর্থনীতি সামগ্রিকভাবে মন্থর
হয়ে পড়ায়, বিশেষত দেশটির অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অংশীদারগুলোর
প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে পড়ায় দেশটির অর্থনীতি সেপ্টেম্বরে এতটা সংকুচিত হয়েছে।
প্রাথমিক হিসাবে ইউরোজোনের অর্থনীতিগুলোর পিএমআই সেপ্টেম্বরে সাত বছরের নিম্নে
নেমে এসেছে। বিশেষত ওই মাসে এ জোনের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি জার্মানির পিএমআই এক
দশকেরও বেশি সময়ের নিম্নে পৌঁছেছে।
এদিকে ব্যাংকটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী
কয়েক মাসের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার পিএমআই টেকসইভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর আপাত কোনো
সম্ভাবনা নেই। কারণ আমাদের প্রধান বাণিজ্য অংশীদারগুলোর প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে পড়েছে।
বিশেষত সেপ্টেম্বরে দেশগুলোর দুর্বল পিএমআই রেকর্ড আমলে নিলে আগামীতে আমাদের
অর্থনীতির সংকুচিত হওয়া আশঙ্কা বেড়েছে।