আর্থিক বাজার প্রতিনিয়ত নতুন উদ্ভাবন ও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিনিয়োগ পণ্য হয়ে পড়ছে জটিল ও বৈচিত্র্যময়। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দেয়া সহজ হলেও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য তা কঠিন। সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং যেকোনো প্রতারণা এড়াতে আর্থিক ধারণাগুলো সম্পর্কে তাদের সম্যক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। শুধু বিশেষজ্ঞ হওয়ার জন্যই যে এসব বিষয় জানতে হবে এমন নয়, চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর আপনি কীভাবে নিজের অর্থ সঞ্চয় বা বিনিয়োগ করবেন, সে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্যও আপনাকে তা জানতে হবে। আর এর জন্য যেটি অতি গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো বিনিয়োগ শিক্ষা।
বিনিয়োগ শিক্ষাকে মূলত আর্থিক সাক্ষরতা বা ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসির একটি অংশ হিসেবে ধরা হয়। একজন ব্যক্তির সব ধরনের আর্থিক পরিস্থিতিই আর্থিক সাক্ষরতার সঙ্গে সম্পর্কিত। এছাড়া ব্যক্তির আর্থিক সক্ষমতাও এর অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে বিনিয়োগ শিক্ষা মূলত তাদের সঙ্গেই সম্পর্কিত, যারা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী (সাধারণত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী)। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগসংক্রান্ত শিক্ষা ও তথ্য সরবরাহ করাই বিনিয়োগ শিক্ষার উদ্দেশ্য।
২০০১ সাল থেকে বিনিয়োগ শিক্ষা বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনস (আইওএসসিও)। আইওএসসিওর সদস্য দেশগুলোয় বিনিয়োগ শিক্ষা ও আর্থিক সাক্ষরতার জন্য গৃহীত নানা উদ্যোগের ওপর জরিপ চালিয়ে মূলত এসব প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। কিছু দেশে দেখা যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতো সরকারি সংস্থাগুলো বিনিয়োগ শিক্ষা প্রদানে সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করছে। তাদের আবার সহায়তা প্রদান করছে দেশগুলোর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বিনিয়োগ শিক্ষাকে বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে ২০১৩ সালে কমিটি অন রিটেইল ইনভেস্টর (সি-৮) গঠনের অনুমোদন দেয় আইওএসসিও পর্ষদ। কমিটির প্রাথমিক ম্যান্ডেট ছিল বিনিয়োগ শিক্ষা ও আর্থিক সাক্ষরতার নীতিগত কাঠামো প্রস্তুত করা এবং দ্বিতীয় ম্যান্ডেট ছিল ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার বিষয়ে আইওএসসিও পর্ষদকে পরামর্শ দেয়া। আইওএসসিওর সক্রিয় ভূমিকার কারণেই মূলত বিনিয়োগ শিক্ষার বিষয়টি উন্নয়নশীল দেশগুলোয় জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এ শিক্ষার প্রসারে আইওএসসিওর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা প্রদান, তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি এবং তাদেরকে আর্থিক পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে আরো বেশি