ক্যাসিনো: আর্থসামাজিক বিশ্লেষণ

মো. আব্দুল বাকী চৌধুরী নবাব

ছোটবেলায় ষাটের দশকের দিকে প্রায় বছরে চৈত্রসংক্রান্তিতে পাবনা জেলাধীন কাজীরহাটের কাছে অনুষ্ঠিতখাঁপুরা মেলায় যেতাম। তখন থেকেই খেয়াল করতাম সেখানকার জুয়া খেলা। দেখতাম পরিচিত ও অপরিচিত লোকসহ বন্ধুবান্ধব জুয়ার কোর্টের ঘরে ঘরে দুই আনা বা চার আনা ধরছে। আর মাঝখানে একটি ছোট ঢেঁকি ঘুরিয়ে দেয়া হতো এবং যার ঘরে ঢেঁকির মাথা থামত, সেই হতো ভাগ্যবান। কেননা খেলার রীতি মোতাবেক সে-ই ওখানের সব টাকা-পয়সার অধিকারী হতো। আর ওই ব্যক্তি বাদে হতাশায় সবারই মুখ কৃষ্ণকালো দেখতাম। আবার এও দেখেছি, প্রথমবার জিতেও লোভের বশবর্তী হয়ে আবারো খেলে আম-ছালা সব হারিয়ে ফতুর হয়ে সীমাহীন মন খারাপ করে বাড়ি ফিরেছে। তাই ইসলাম ধর্মসহ প্রায় সব ধর্মই এটাকে স্বীকৃতি দেয়নি এবং আমাদের সংবিধানেও নিষিদ্ধ। তাছাড়া জুয়াকে ঘিরে একটি কথা প্রচলিত— ‘জুয়ার টাকা কখনো ঘরে ফিরে আসে না। এদিকে এটাকে কেন্দ্র করে নানা অনৈতিক অসামাজিক কর্মকাণ্ড সৃষ্টি হয় বিধায় ইংরেজিতে একটি কথা আছে—‘Crime begets Crime এ জুয়া কেবল জুয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। এর নেতিবাচক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সুদূরপ্রসারী। কারণ এটাকে কেন্দ্র করে সমাজে নানা অপরাধের সৃষ্টি হয়। এদিকে অর্থনীতিও এ কর্মকাণ্ডকে ভালো চোখে দেখেনি। কারণ এতে কল্যাণ বয়ে আনে না। আর বর্তমানে নেতিবাচক আর্থসামাজিক প্যারামিটারের চাপে অর্থনীতির জনক অ্যাডাম স্মিথের সেইকল্যাণ কথাটি কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। আরেকটি কথা, মৌলিক চাহিদা মেটাতে যে অর্থ মানুষ আয় করে, সাধারণত সেই অর্থ নিয়ে জুয়া খেলতে যায় না। এক্ষেত্রে বাড়তি টাকা হিসেবে কালো টাকা নিয়ে দৌড়ে দৌড়ে ওই দিকে ধাবিত হয়। যাহোক, এখন সেই জুয়া কথাটি নেই। অনেক আগে থেকেই ভদ্র নাম ধারণ করে ক্যাসিনো হিসেবে উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে। বস্তুত ক্যাসিনোর আভিধানিক অর্থ হলো, ‘সর্বসাধারণের জন্য নৃত্যশালা। আর শব্দটি এসেছে লাতিনCasa শব্দ থেকে, যার অর্থ হলো কটেজ। এতে প্রতীয়মান হয়, ক্যাসিনো শব্দটি জুয়া খেলার ধারেকাছেও নেই। তার পরও সূক্ষ্মভাবে চিন্তা করলে মনে হয়, নৃত্য চলাকালে সম্পূরক বিনোদনের জন্য অনৈতিক হলেও হয়তো জুয়া কথাটি উঠে এসেছে। উল্লেখ্য, জুয়া ও ক্যাসিনো পুরোপুরি এক নয়। এদিকে জুয়া খেলা আমাদের দেশে নতুন কিছু নয়। অনেক ক্ষেত্রে জুয়াকে আমরা ক্যাসিনোর সঙ্গে গুলিয়ে-ফাঁপিয়ে শোরগোল শুরু করে দিই। আসলে সব ধরনের সুবিধাসহ একটি আধুনিক ক্যাসিনো অতটা সহজ নয়। এক্ষেত্রে স্ট্র্যাটেজিক অবস্থানসহ অনেক ধরনের উপাদান ও সুযোগ-সুবিধা আবশ্যক। এ সূত্র ধরে প্রয়োজনীয় সার্ভিসসহ স্লট মেশিন, পোকার সেট, বাক্কারাট, রুলেট, পল্টুন, ফ্লাশ, রিট, ব্ল্যাকজ্যাক, বিশেষ টেবিল, চিপ ইত্যাদি আবশ্যক। তাছাড়া স্থানীয় সব ধরনের পরিবেশ অনুকূল হতে হবে।

দুই. তবে নাম যা-ই হোক না কেন, এটি প্রতিষ্ঠিত সত্য যে আদি ভিত্তি জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ক্যাসিনোর উদ্ভব হয়েছে। আর জুয়া খেলা কবে থেকে শুরু হয়েছে এবং কত কালব্যাপী মানুষের মধ্যে ক্রিয়াশীল, তা বলা সম্ভব নয়। তবে জানা যায়, এখন থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে ভারতবর্ষের মৌর্যবংশীয় সম্রাট চন্দ্র গুপ্তের ব্রাহ্মণ মন্ত্রী কৌটিল্য জুয়া খেলাকে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আনার তাগিদ অনুভব করেছিলেন। সেহেতু অনেক আগে থেকেই এটা শুরু হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। এদিকে ১৬৩৮ সালে ইতালির ভেনিসে আনুষ্ঠানিকভাবে জুয়া খেলার আয়োজন করা হয়। কালের পরিক্রমায় ধীরে ধীরে পৃথিবীর সব দেশে তা ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, চীন, আয়ারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, হংকং, ফিনল্যান্ড, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি ইত্যাদি দেশে এর রমরমা ব্যবসা। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেও কম নয়। আর আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, মিয়ানমার ও শ্রীলংকাও পিছিয়ে নেই। এদিকে বিশ্বের কতিপয় মুসলিম দেশেও (মিসর, তুরস্ক, মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, আরব আমিরাত ইত্যাদি) ক্যাসিনো ব্যবসা বহাল তবিয়তে চলমান। উল্লেখ্য, ১৯৩১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদায় ক্যাসিনোর প্রথম আইনগতভাবে পদচারণা শুরু হয়। বর্তমানে এখানে বৈধ ক্যাসিনোর সংখ্যা সহস্রাধিক। এ দেশের মধ্যে লাস ভেগাসের অবস্থান সবার উপরে। ক্যাসিনোর সারথি ধরে এখানে ঊষর মরুভূমিতে লাখ লাখ ধনাঢ্য ব্যক্তির আনাগোনা। আর এ ক্যাসিনো সামনে রেখে সারা বিশ্বের মানুষকে আকৃষ্টকল্পে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম প্রকৃতি, বিশ্বখ্যাত জাদু, সার্কাস ও জীবন্ত হাঙরের বিশাল অ্যাকুয়ারিয়ামসহ অনেক কিছু। আর এ লাস ভেগাসের আলো এতটাই ঝলমলে যে মহাকাশ থেকে নাকি দেখা যায়। তবে সংশয় জাগে, এ আলো বিক্রিয়া করে শেষ পর্যন্ত এই বিশ্বকে কোন অবস্থায় নিয়ে যাবে! বিষয়টি চিন্তা করার ভার না হয় সম্মানিত পাঠকদের ওপর ছেড়ে দিলাম। যাহোক, এর বছরে আয় প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার। আর জুয়া খেলা এমনই শিকড় গেড়ে বসেছে যে লাস ভেগাসের ক্যাসিনো মালিকদের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে। সত্যি কথা বলতে কি, বিশ্বজুড়ে ক্যাসিনোর পরিধি জ্যামিতিক গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে ক্যাসিনো ব্যবসা প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বিশাল শিল্প বললে বোধ হয় বেশি বলা হবে না। তবে এর গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জ্ঞানী-গুণীদের ভাবিয়ে তুলেছে। আর যতই অনৈতিক ও ধর্মীয় বেড়াজালে ক্যাসিনোকে আটকাতে চাই না কেন, তা বোধহয় সম্ভব নয়। কেননা এখন আকাশ সংস্কৃতির আওতায় ফেসবুকের ন্যায় অনলাইনে দেদার হচ্ছে। গত বছর (২০১৮) এর পরিমাণ ছিল ৫০০ কোটি ডলার। তাছাড়া টুরিস্টদের আকর্ষণ করার জন্য প্রায় পাঁচ তারকা হোটেলে স্বল্প পরিসরে ক্যাসিনোর ব্যবস্থা আছে। এটা নাকি পর্যটন শিল্পের বড় একটি নিয়ামক হিসেবে বিবেচিত। এদিকে এ বিশ্বের অভিভাবক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি বড় ক্যাসিনো ব্যবসার মালিক।

তিন. এই তো গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে হঠাৎ করে র্যাব অভিযান শুরু করে। আর অভিযানের স্থানগুলো ক্যাসিনো-সংবলিত ক্লাব (যেমন ফকিরাপুলের ইয়াং মেনস ও ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, বনানীর গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ, ধানমন্ডি ক্লাব, কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের ক্লাব, মতিঝিল ক্লাব, মোহামেডান ক্লাব, তেজগাঁওয়ের ফু-ওয়াং ক্লাব এবং গুলশানের নাভানা টাওয়ারে স্পা) তাছাড়া ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি এলাকার হ্যাংআউট নামের বারেও অভিযান চলে। এ অভিযানে প্রতীয়মান হয় রাজধানীতে প্রায় ১০০ ক্যাসিনো রয়েছে। এর মধ্যে ৬০টিরও বেশি রাজনৈতিক বিভিন্ন স্তরের নেতাদের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত। অভিযানের প্রাক্কালে এসব ক্যাসিনোতে জুয়াসামগ্রী, কোটি কোটি ক্যাশ টাকা ও ডলার, ভরি ভরি স্বর্ণ, মদ, মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ইত্যাদি পাওয়া যায়। এছাড়া জানা যায়, এখানে নাকি অনেক মডেল ও নায়িকার আনাগোনাও ছিল। এর মধ্যে অনেক ক্যাসিনো সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। আর কতিপয় ক্যাসিনোর মালিক গ্রেফতার হলেও অনেকেই দেশে গা-ঢাকা দিয়েছে বা বিদেশে পালিয়ে গেছে। এ প্রেক্ষাপটে বাজারে ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, হয়তো তারা অনেক ক্যাশ ডলার কিনে গোপনে বিদেশে যাওয়ার জন্য সচেষ্ট হয়েছে বিধায় ডলারের দাম চড়া হয়েছে। এদিকে যতদূর জানা যায়, এদের শিকড় নাকি অনেক গভীরে। বেশি দূর এগোলে নাকি অনেক স্বনামধন্য রুই-কাতলা বের হয়ে পড়বে। মজার ব্যাপার হলো, এ জুয়া তথা ক্যাসিনো কর্মকাণ্ড গর্হিত অপরাধ হলেও এর শাস্তি বা দণ্ড হাস্যম্পদ। কেননা সেই ১৮৬৭ সালে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ায় গভর্নর জেনারেল জন লরেন্সের শাসনামলে এ ব্যাপারে যে আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল (প্রকাশ্য জুয়া আইন, ১৮৬৭/The Public Gambling Act, 1867), সেটাই ১৫২ বছর ধরে চলে আসছে। এ আইনে দণ্ডের ব্যাপারে ৩ ধারা অনুযায়ী উল্লেখ আছে, অনূর্ধ্ব ২০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং পেনাল কোডের সংজ্ঞানুসারে অনূর্ধ্ব তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবে। এতে প্রতীয়মান হয়, এ দণ্ড অপরাধের তুলনায় অতি তুচ্ছ বলে পরিগণিত।

চার. মূলত ক্যাসিনো হলো পুঁজিবাদ অর্থনীতির দুষ্ট ছেলে। একে নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল। কেননা এর বিচরণ শ্যাডো অর্থনীতিতে। আর এর ধারক ও বাহক হলো রুই-কাতলা। এরা এতটাই গভীর পানি দিয়ে চলে যে এদের গায়ে শেওলার আস্তরণ পড়ে বিধায় আইনগতভাবে ধরলেও হাত পিছলে বের হয়ে যায়। বর্তমান বিশ্বে বড় ব্যবসা হলো অস্ত্র ব্যবসা, মাদক ব্যবসা, স্বর্ণ পাচার, নীল ছবি ইত্যাদি। আর এগুলো যে কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না, তা সহজেই অনুমেয়। তাহলে ক্যাসিনোকে কোন পাল্লায় মাপবেন? যদি এতটাই খারাপ হয়, তাহলে দিনে দিনে বিস্তৃতি লাভ করছে কেন? পাশ্চাত্য দেশের কথা বাদ দিলাম। ইসলাম ধর্মের কোরআন ও হাদিসে এ ক্যাসিনো ব্যবসা বড় অপরাধ ও মহাপাপ বলে উল্লেখ করলেও কেন বেশ কতগুলো মুসলিম রাষ্ট্রে এ ব্যবসা গায়ে বাতাস লাগিয়ে এগিয়ে চলেছে? এদিকে অর্থনীতি নীতি তথা নৈতিকতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাই উৎপাদনের চারটি ফ্যাক্টরের (ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠন) আওতায় ভিক্ষা, চুরি, ডাকাতি ও ঘুষের টাকা বিবেচনায় আনে না। এদিকে বাস্তবে দেখেছি অধিকাংশ ব্যবসায়ী নীতির ধার ধারেন না। যেখানে বেশি লাভ, সেদিকে ছুটে যান। তাছাড়া এটাও জানি, রিস্ক বেশি থাকলে লাভ বেশি। তাই বোধ হয় দিনে দিনে ক্যাসিনো ব্যবসা ডালপালা বিস্তার করে চলেছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর অভিযানের ফলে পত্রিকায় দেখলাম ক্যাসিনোর সঙ্গে যে মানুষগুলো যুক্ত ছিল, তাদের মধ্যে অনেকে নাকি শেয়ারবাজারে মার খেয়ে এ ব্যবসায় এসেছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ এখন জনসংখ্যার সুবর্ণ ধাপে চলমান। তাই কর্মক্ষম লোকের সংখ্যা বেশি। কিন্তু এটা সত্য, বর্তমানে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা তুলনামূলক অধিক বিধায় তারাও এ পথে চলে আসার বিষয়টি অস্বীকার করা যায় না। তাছাড়া শ্যাডো অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও ঋণখেলাপির সঙ্গে সম্পৃক্ত মানুষগুলোর ভিড় (আর্থসামাজিক প্যারামিটার বিবেচনায় এনে) প্রণিধানযোগ্য। উল্লেখ্য, একই সরকার যদি বছরের পর বছর ক্ষমতায় থাকে আর যদি আন্তরিক হয়, তাহলে দেশ উন্নতির দিকে যায়। এতে দেশের জিডিপি বেড়ে যায় এবং মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পায়; যা সঞ্চয় বাড়ার পথ সুগম করে এবং ছোট ও বড় পরিসরে বিনিয়োগ হয়ে একটি ইতিবাচক ঘূর্ণায়মান সার্কেল সৃষ্টিপূর্বক অর্থনৈতিক বুনিয়াদ দৃঢ় করে।

আমরা এখানে টাকাকে নদীর প্রবাহের সঙ্গে তুলনা করতে পারি। নদী যেখান দিয়ে বয়ে যায়, সেখানের দুই পাশে তরুরাজিসহ জনপদ গড়ে ওঠে। ঠিক টাকার প্রবাহ যখন চলতে থাকে, তখন অর্থনৈতিক কার্যাবলি সৃষ্টি হয়। কিন্তু গোল বাধে কালো টাকা নিয়ে। তাই এটি নিয়ন্ত্রণ করা না হলে খরস্রোতা নদী যেমন দুই কূল ভেঙে নিয়ে যায়, সে রকম কালো টাকাও সমাজ তথা দেশে দুর্নীতি ও অবক্ষয় সৃষ্টি করে। এদিকে সমাজতান্ত্রিক তত্ত্বের পুরোধা হিসেবে খ্যাত লেনিন বলেছিলেন, কালো টাকা ছাড়া মূলধনীয় কর্মকাণ্ড তথা উন্নয়নমূলক কাজ তেমন হয় না। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশে কালো টাকার বিনিয়োগের তেমন স্কোপ নেই। বাস্তবে দেখেছি সরকার সুযোগ দিলেও প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার ভয়ে কালো টাকার মালিকরা এগিয়ে আসে না। তারা বিদেশে কালো টাকা পাচার করে সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করে কিংবা সেকেন্ড হোম গড়ে তোলে। আর পাচার তো দেশী টাকা নয়, এটা পুরোপুরি স্বর্ণ বা ফরেন এক্সচেঞ্জ। এর ফেস ভ্যালু যেটাই হোক না কেন, ইকোনমিক অ্যানালাইসিসে এর সঙ্গে আরো ২৫ শতাংশ যোগ করতে হয়। তাহলে দেখুন, কত বড় ক্ষতি হয়! সহজ কথায় যদি বলি তাহলে বলতে হয়, ‘পুরোপুরি মূল্যবান মূলধন চুরি। এদিকে এমনও শুনেছি, কিছু কিছু কালো টাকাওয়ালা প্রায়ই বিদেশের ক্যাসিনোতে জুয়া খেলতে যায়। তারা নাকি তুলনামূলকভাবে সেখানে অধিক সমাদৃত। এক্ষেত্রে এখন প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন