বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও
যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির আইনপ্রণেতা টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনে এ বছরের প্রভাবশালী
রাজনীতিবিদের তালিকায় স্থান পেয়েছেন। শনিবার এক বার্তায়
একথা বলা হয়েছে। খবর বাসস।
লন্ডনভিত্তিক পত্রিকা ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড ২০১৯
সালের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকায় ওয়েস্টমিনস্টার ক্যাটাগরিতে টিউলিপ
সিদ্দিক স্থান পেয়েছেন। প্রতি বছর লন্ডনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রভাব
বিস্তারকারী ব্যক্তিদের নিয়ে ‘প্রগ্রেস ১০০০’ নামে তালিকা
প্রকাশ করে ‘ইভিনিং
স্ট্যান্ডার্ড’।
শেখ রেহানার মেয়ে ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে এ ক্যাটাগরিতে আরো আছেন ব্রিটিশ
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ডাচি অব
ল্যানকাস্টারের চ্যান্সেলর মাইকেল গভ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক ও শিক্ষামন্ত্রী
গেভিন উইলিয়ামসনের মতো লন্ডনের রাজনীতিবিদরা।
প্রতি বছর এ তালিকা প্রকাশ করে ‘ইভিনিং
স্ট্যান্ডার্ড’। রাজনীতি
ছাড়াও ব্যবসা, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, নকশা, সাহিত্য, সংস্কৃতিসহ
বিভিন্ন খাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরাও এ তালিকায় উঠে আসেন। টিউলিপকে নিয়ে ইভিনিং
স্ট্যান্ডার্ডে লেখা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের
পার্লামেন্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মের ব্রেক্সিট চুক্তির বিপক্ষে ভোট দেয়ার
জন্য সন্তান জন্মদানের অস্ত্রোপচার পিছিয়ে দিয়ে বিশ্বব্যাপী সংবাদ শিরোনাম
হয়েছিলেন হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্নের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে সাধারণত কোনো এমপির
সন্তান জন্ম দেয়ার সময় আসন্ন হলে বা সদ্যোজাত সন্তানের কারণে বা অসুস্থতার কারণে
কেউ ভোটে অংশ নিতে না পারলে বিরোধী পক্ষেরও একজন সদস্য ভোটদান থেকে বিরত থাকতেন, যাকে ‘পেয়ার’ বলা হতো।
কারো অনুপস্থিতি যেন ভোটের ফলে প্রভাব ফেলতে না পারে, তাই ওই প্রথা।
কিন্তু ২০১৮ সালের জুলাইয়ে কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান ব্র্যান্ডন লুইস ওই প্রথা
লঙ্ঘন করে ভোট দিয়েছিলেন। যদিও লুইস পরে এজন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘দুর্ঘটনাবশত’ ভোট দিয়ে
ফেলেছিলেন তিনি।
অতীতের এ ঘটনার কারণে ওই ব্যবস্থায় তার আর আস্থা
নেই জানিয়ে সশরীরে পার্লামেন্টে গিয়ে ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন টিউলিপ। তার এ সাহসী
সিদ্ধান্তের কারণে সন্তানপ্রত্যাশী ও নবজাতকদের মা-বাবার জন্য ঐতিহাসিক ‘প্রক্সি ভোটিং’ পদ্ধতি চালু
করতে বাধ্য হয় ব্রিটিশ সরকার। বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে ‘ইভিনিং
স্ট্যান্ডার্ড’।
টিউলিপ ২০১৫ সালের মে মাসে লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড
অ্যান্ড কিলবার্ন থেকে প্রথমবারের মতো ব্রিটেনের হাউজ অব কমনসে নির্বাচিত হন।
পার্লামেন্টে প্রথম ভাষণে তিনি বিশ্বের নজর কাড়তে সক্ষম হন।
টিউলিপ নিজেকে ‘একজন আশ্রয়প্রার্থীর কন্যা’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি তার মা শেখ রেহানার দুর্দশার বিবরণ দেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যসহ বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয় খোঁজেন শেখ রেহানা।