প্রিমিয়াম টি-ব্যাগগুলোয় আছে কোটি কোটি প্লাস্টিক কণা!

সানজিদা সামরিন

উষ্ণ এক কাপ চা ছাড়া যেন সকালটা ঠিকঠাক শুরুই হয় না। আবার অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে ক্লান্তি দূর করার বেলায় চায়ের যেন কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু যারা চা পাতার তুলনায় টি-ব্যাগ দিয়ে চা তৈরি করতে বেশি পছন্দ করেন তারা কি জানেন, এই চায়ে মিশে থাকতে পারে প্লাস্টিক কণা? ভাবতে অবাক লাগলেও নতুন একটি গবেষণায় এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, অনেক প্রিমিয়াম টি-ব্যাগেই আছে কোটি কোটি প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি ।

কানাডিয়ান গবেষকরা জানিয়েছেন, কিছু কিছু টি-ব্যাগের আবরণে এত বেশি পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকে যা কাপে গরম পানিতে দেয়ার পরপরই মিশে যায়। এর আগে অবশ্য প্লাস্টিকের বোতলের পানিতেও মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছিল।
কানাডার মন্ট্রিলের ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা যেকোনো ধরণের প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণাকে (যা দৈর্ঘ্যে ৫ মাইক্রোমিটারের কম) মাইক্রোপ্লাস্টিক হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। স্বাস্থ্যের ওপর মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রভাব পরীক্ষা করার জন্য চারটি ভিন্ন ব্র্যান্ডের টি-ব্যাগ সংগ্রহ করেছেন গবেষকরা।
বেশিরভাগ টি-ব্যাগই কাগজ থেকে তৈরি হয়। তবে কিছু প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড কাগজের পরিবর্তে এক ধরণের প্লাস্টিকের নেটজাতীয় আবরণ ব্যবহার করে। গবেষকরা টি-ব্যাগ থেকে চা পাতা বের করে খালি ব্যাগগুলোকে ৯৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পানিতে রেখে দেন। এতে করে তারা দেখতে পান প্রতিটি টি-ব্যাগ থেকে বেরিয়ে এসেছে ১১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ন্যানোপ্লাস্টিক কণা।

গবেষক লরা হার্নান্দেজ বলেন, বোতলজাত পানিতে যে পরিমাণ প্লাস্টিক মিশে থাকে বলে  অন্যান্য গবেষণায় জানা গিয়েছিল তার চেয়েও বেশি অবাককর ছিল এই গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল। তিনি আরও জানান, প্লাস্টিকের এই ক্ষুদ্রতম কণাগুলোর উপর গভীর পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, মাইক্রোপ্লাস্টিক একটি চুলের সমান পুরু এবং ন্যানোপ্লাস্টিকস যা তার চেয়েও হাজার গুণ ছোট। ফুটন্ত পানিতে টি-ব্যাগগুলো ডোবানোর কারণে ন্যানোপ্লাস্টিকগুলো বেরিয়ে পড়ে।
হার্নান্দেজ উল্লেখ করেছেন, ক্রেতাদের উচিৎ প্লাস্টিকের ব্যবহার হ্রাস করা। তাদের কেনাকাটার বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে। তিনি আরও বলেন, এমন কোনো প্লাস্টিক দিয়ে চা প্যাকেজ করার দরকার নেই যা দিনের শেষে কেবল প্লাস্টিকই হয়ে যায়। এর ফলে স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব তো পড়বেই পাশাপাশি হবে পরিবেশ দূষণ।

সূত্র: বিবিসি


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন