আমেরিকার ‘আর্জেন্টিনা ঝুঁকি’বিষয়ক পর্যালোচনা

কৌশিক বসু

চারদিকে পুঞ্জীভূত যে বিশ্বাসটি ক্রমে গাঢ় হচ্ছে তা হলো, যুক্তরাষ্ট্র আর্থিক মন্দার দিকে ধাবিত। যথাসম্ভব ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই দেশটি ওই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে। বতর্মান অর্থনৈতিক তথ্য পরিসংখ্যান মোতাবেক আমেরিকার অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্র স্পষ্টতই চাপের মুখে রয়েছে। যদিও বিষয়টি আমার কাছে সুস্পষ্ট নয়। তবে যাই হোক, আর্থিক মন্দা তাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। এমনকি আমেরিকার আসল বিপদটি কিন্তু আরো বেশি ভয়াবহ। একে আমেরিকার আর্জেন্টিনা ঝুঁকি হিসেবে উল্লেখ করা যায়। আর এটি হচ্ছে সবচেয়ে সেরা সম্বোধন।

বিশ শতকের প্রথম কয়েক দশকজুড়ে আর্জেন্টিনা ছিল বিশ্বের দ্রুতবর্ধমান অর্থনীতির একটি। কার্যত সে সময় অন্য কোনো দেশের তুলনায় মাথাপিছু মেধাবী অভিবাসী আকর্ষণ করতে সক্ষম হয় তারা। ফলস্বরূপ জার্মানি কিংবা ফ্রান্সকে পেছনে ফেলে আর্জেন্টিনা বিশ্বের ১০ ধনী দেশের তালিকায় জায়গা করে নেয়।

তবে ১৯৩০ সালে আর্জেন্টিনার প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ে। লেফটেন্যান্ট জেনারেল হোসে ফেলিক্স উরিবুরুর নেতৃত্বে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শাসনক্ষমতার হাতবদলের মাধ্যমে রাতারাতি সবকিছু বদলে যায়। পরবর্তী কয়েক বছরের মধ্যেই উগ্র ডানপন্থী জাতীয়তাবাদের উত্থান, অভিবাসন স্থগিত আর শুল্কযুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৩০ ১৯৩৩ সাল নাগাদ আর্জেন্টিনা এর গড় আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে দ্বিগুণের কাছাকাছি নিয়ে যায়। ফলে আকস্মিক আর্থিক মন্দার ঘটনা না ঘটলেও ধীরগতির মন্দার দিকে ধাবিত হয় দেশটি, কয়েক যুগ অতিক্রান্ত হলেও আর্থিক মন্দার ওই আঁচড় আজো স্পষ্ট। ধনী অবস্থা থেকে একটি রাষ্ট্র কীভাবে পথ হারিয়ে ফেলতে পারে, সে সম্পর্কে আর্জেন্টিনার উদাহরণটি একটি সতর্কতামূলক গল্পে পরিণত হয়েছে।

আমেরিকান অর্থনীতি তার বৈশ্বিক কর্তৃত্ব ধরে রেখেছে। যদিও সম্প্রতি আমরা তা দেখতে পারছি না, বরং ক্রমে মেরুকরণ আর বেদনাদায়ক পরিস্থিতিই আমরা অবলোকন করছি। রাষ্ট্রটির নিচের দিকে ধাবমান পাক খাওয়া পরিস্থিতি দেখে আমার স্মৃতিরা আমাকে প্রায় সিকি শতাব্দী পেছনে নিয়ে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। ১৯৯৪ সালে আমি যখন সপরিবারে ভারত থেকে আমেরিকায় চলে আসি, তখন আমি আমার সহধর্মিণী এই ভেবে চিন্তামগ্ন হয়ে পড়ি যে অপরিচিত সংস্কৃতি, নতুন সমাজের সঙ্গে আমরা কীভাবে মানিয়ে চলব এবং আমাদের সন্তানরা কি আদৌ তাদের নতুন বিদ্যালয়গুলোয় গ্রহণযোগ্য হবে? আমরা খুব দ্রুত আশ্বস্ত হয়েছিলাম।

নতুন অন্বেষণে আগ্রহী হিসেবে কিছুদিনের মধ্যেই আমরা স্থানীয় একটি সংবাদপত্রে সংগীত উৎসবের খবর পেয়ে তাতে যোগদানের জন্য ইথিকার শহরতলি থেকে সেখানে ছুটে গেলাম। অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের ধারণা ভাঙে আর আমরা নিজেদের ভুল বুঝতে পারি। তা হলো, উৎসবটি মূলত ছিল সমকামী যুগলদের জন্য। আমেরিকান চিত্রকর গ্রান্ট উডের ইন্ডিয়ান গথিক-এর মতো আমরা কয়েকজনপিতা, মাতা, পুত্র কন্যাব্যথিত বৃদ্ধাঙ্গুলের মতো দাঁড়িয়ে রইলাম। কারণ আমরাও উৎসবে আসা বাকি অংশগ্রহণকারীর মতোএমনটা ভান করার কোনো সুযোগই ছিল না। কিন্তু হঠাৎ বিস্মিত হলাম। আমাদের দৃশ্যমান অসহায়ত্ব দেখে অনেকেই এসে আমাদের সঙ্গে গল্প করা শুরু

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন