বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে

মো. ফরিদুজ্জামান

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। ১৯৭২ সালে প্রণীত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুগান্তকারী চেতনা জাতি হিসেবে আমাদের বেশ আশাবাদী করেছিল। স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে তিনি বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথকীকরণের বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। যেমন ১৯৭২ সালের ১৫ জানুয়ারি দৈনিক বাংলা পত্রিকার পৃষ্ঠায় প্রকাশিত তার এক বক্তৃতায় ঘোষণা ছিল, আমি হাইকোর্ট অধস্তন আদালতগুলো যাতে কাজ করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করব। আমি ব্যাপারে সুনিশ্চিত করতে চাই যে, দুর্নীতি কালক্ষেপণ উচ্ছেদ করার প্রেক্ষিতে বিচার ব্যবস্থার কতকগুলো মৌলিক ত্রুটি সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রশাসন বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের নীতি সূক্ষ্মভাবে পর্যালোচনা করা হবে।

বিচার বিভাগ স্বাধীনকরণের উদ্দেশ্যে ২০০৭-০৮ সময়ে বেশকিছু আইন সংশোধন নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়। যেমন বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন বিধিমালা, ২০০৭; বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পে স্কেল, ২০১৬ ইত্যাদি। এছাড়া অধস্তন আদালতগুলোর শৃঙ্খলা বিধানসহ একটি আলাদা স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়। সবচেয়ে যুগান্তকারী সংশোধনী আনা হয় ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮-এ। আইনের ধারায় দুই প্রকারের ম্যাজিস্ট্রেটের পদ সৃষ্টি করা হয়। এক পক্ষে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। অন্যপক্ষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭-১৪৮ ধারা, ১৭৬ ধারাসহ আরো কিছু ধারা যেমন ২৯(বি) ধারা, ৩২ ধারায় কার্যক্রম পরিচালনা দণ্ড প্রদানের ক্ষমতাসহ মোবাইল কোর্ট অধ্যাদেশ, ২০০৯-এর অধীনে বাংলাদেশে প্রচলিত ৪৯টি আইনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।

বর্তমানে মোবাইল কোর্ট অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সিদ্ধান্ত ঝুলন্ত অবস্থায় থাকায় সে বিষয়ের আলোকপাত করা সমীচীন হবে না; বরং বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিচার বিভাগ স্বাধীন হওয়ার পরে স্বাধীন বিচার বিভাগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনার দাবি রাখে। মোদ্দাকথা হলো, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ আদৌ স্বাধীন হয়েছে কিনা? নির্বাহী বিভাগের থেকে বাংলাদেশের ফৌজদারি বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ বহুলাংশে করা হয়েছে। ফলে ২০০৭ সালের পর নির্বাহী বিভাগের তথা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ফৌজদারি কার্যবিধির গর্ভে অনুপ্রবেশ করে যত্রতত্র বিচার করার দৌরাত্ম্য কিছুটা হলেও কমেছে।

নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসিকে শক্তিশালী জাঁকজমকপূর্ণ অবয়ব অবকাঠামো প্রদানের জন্য বর্তমান সরকার বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। এভাবে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি সময়ের প্রয়োজনের তাগিদে অনেক বেশি গতিশীল হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার ২০১৯-২০ অর্থবছরে আইন বিচার বিভাগের এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জন্য মোট বাজেট হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এর মধ্যে সারা দেশের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির জন্য বাজেট ২৭৩ কোটি ৮২ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে সারা দেশের দেওয়ানি দায়রা আদালতের জন্য বাজেট ৪৫৫ কোটি ৯২ লাখ ৬০ কোটি টাকা।

এছাড়া দেশের ৬৪টি জেলাতেই চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের বহুতল ভবন নির্মাণের

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন