কাতারের বিরূপ পরিবেশে কাজ করতে গিয়ে প্রতি বছর মারা যাচ্ছেন শত শত অভিবাসী শ্রমিক। ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ানের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন উপলক্ষে দেশটিতে যে ব্যাপক নির্মাণযজ্ঞ চলছে তা বাস্তবায়নে অত্যধিক তাপমাত্রার মধ্যে কাজ করে যেতে হচ্ছে শ্রমিকদের। দেশটিতে প্রতিদিন প্রায় ১০ ঘণ্টা তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে থাকে।
কাতার কর্তৃপক্ষ বলছে, উপসাগরীয় অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সংগতি রেখে তাপসংক্রান্ত সমস্যা থেকে শ্রমিকদের রক্ষা করার চেষ্টা করছে। জুনের মাঝামাঝি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সব ধরনের কাজ বন্ধ করেছে।
তবে গত নয় বছরের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গার্ডিয়ান দেখিয়েছে, কয়েক ঘণ্টার কার্যক্রম বন্ধের সরকারি নির্দেশনা শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা দিচ্ছে না। ওই নির্ধারিত সময়ের বাইরে আউটডোরে কাজ করা শ্রমিকরা মারাত্মক দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছেন। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ ঝুঁকি থাকছে এবং এ কারণে বছরের এ সময়টাতে অধিকসংখ্যক শ্রমিকের মৃত্যু ঘটছে বলে মনে করেন হূদরোগ বিশেষজ্ঞরা।
গার্ডিয়ানের বিশ্লেষকরা আরো দেখেছেন যে শীতের মাসগুলোতেও বিপজ্জনক মাত্রার রোদের মুখোমুখি হচ্ছেন শ্রমিকরা।
দোহা বর্তমানে ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করছে, যেখানে অ্যাথলেট এবং ক্রীড়াসংশ্লিষ্টরা অত্যধিক গরম নিয়ে অভিযোগ করছেন। অন্যদিকে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ওই স্টেডিয়ামগুলোর বাইরে কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছেন শ্রমিকরা। অক্টোবরজুড়েই সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ওই ঝুঁকির মধ্যে থেকে কাজ করতে হচ্ছে তাদের।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত তাপমাত্রায় কাজ করলে তা মানুষের হূিক্রয়ায় সমস্যা তৈরি করে। এমনকি অতিরিক্ত গরমে মারাত্মক হার্ট অ্যাটাক ও অন্যান্য হূদরোগ হতে পারে।
প্রতি বছর কাতারে কর্মরত শত শত শ্রমিক মারা যাচ্ছেন, যাদের বেশির ভাগেরই বয়স ২৫ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। বেশির ভাগ মৃত্যুর পেছনেই হূদরোগের ভূমিকা রয়েছে, যাকে কাতারের কর্তৃপক্ষ ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ হিসেবে বর্ণনা করছে।
কিন্তু কার্ডিওলজি জার্নালে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে শীর্ষ জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও কার্ডিওলজিস্টরা বলছেন, হিটস্ট্রোকে ওই মৃত্যুগুলো হয়েছে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং ২০০৯ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ১ হাজার ৩০০ নেপালি শ্রমিকের মৃত্যুর সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তারা। গবেষণায় দেখা গেছে, শীতের মাসগুলোতে বছরওয়ারি মৃত্যুর ২২ শতাংশ হূদরোগের কারণে হচ্ছে। গরমের মাসগুলোতে