কক্সবাজারে পেঁয়াজের দাম ৭০ টাকা নির্ধারণ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি কক্সবাজার

সারা দেশের মতো কক্সবাজারেও পেঁয়াজের দাম লাগামহীন। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। সে কারণে বাজার নিয়ন্ত্রণে খুচরা পর্যায় পেঁয়াজের দাম ৭০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানান, নির্ধারিত দামের বেশি মূল্যে বিক্রির অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রমতে, পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে গত মঙ্গলবার বিকালে জেলা প্রশাসনের শহীদ এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে জেলা বাজার মনিটরিং কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে ব্যবসায়ী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে পেঁয়াজের খুচরা মূল্য ৭০ পাইকারি মূল্য ৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া নির্ধারিত দামে পেঁয়াজ বিক্রি পর্যবেক্ষণে মাঠে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়ে সিন্ধান্ত নেয়া হয়।

কিন্তু জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তের পরও বাজারের অধিকাংশ দোকানে আগের দামেই পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল বুধবার কক্সবাজারের বড় বাজার, কালুরদোকান বাজার, বাহারছড়া বাজারসহ শহরের সবকটি দোকান এবং পাইকারি দোকান থেকে প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজ ১১০-১২০ টাকা আমদানি করা ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এদিকে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ হওয়ার পর টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পেঁয়াজ আমদানি সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণে গতকাল টেকনাফ স্থলবন্দরে পরিদর্শন যায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব তৌফিকুর রহমানসহ একটি প্রতিনিধি দল। সময় তার সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশরাফুল আফসারসহ ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

সময় তিনি পেঁয়াজের দাম, মিয়ানমার থেকে আমদানির বিষয় নিয়ে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। বৈঠকে টেকনাফ স্থলবন্দর থেকে কক্সবাজারের ব্যবসায়ীরা কত দামে পেঁয়াজ কিনতে পারবেন, সে বিষয়ে আলোচনা হয়। একই সঙ্গে মিয়ানমার থেকে কীভাবে পেঁয়াজ আমদানি আরো বাড়ানো যায়, সে বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে।

সময় ব্যবসায়ীরা জানান, এক সপ্তাহ আগেও মিয়ানমার টনপ্রতি পেঁয়াজ ৩০০-৩৫০ ডলারে বিক্রি করেছিল। কিন্তু সোমবার থেকে মূল্য বাড়িয়ে প্রতি টন পেঁয়াজ বিক্রি করছে ৫০০ ডলারে।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি জানান, বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে মিয়ানমার থেকে ৫০০ টন পেঁয়াজ টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে দেশে আসছে। কক্সবাজারের ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রাম থেকে পেঁয়াজ নিয়ে আসেন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা যদি মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ সরাসরি টেকনাফ স্থলবন্দর থেকে সংগ্রহ করতে পারে, তাহলে দাম আরো কমিয়ে দেয়া সম্ভব।

জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা মো. শাহজাহান জানান, মিয়ানমার থেকে আমদানি বাড়ানোর পাশাপাশি চীন সিঙ্গাপুর থেকেও পেঁয়াজ আমদানির প্রক্রিয়া চলমান।

এদিকে ভারত থেকে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ হওয়ার পর টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বেড়েছে। টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা আবছার উদ্দিন জানান, গত সেপ্টেম্বরে হাজার ৫৭৩ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল। গত মঙ্গলবার একদিনেই আমদানি হয়েছে ৫৬৯ টন। তবে আমদানি দু-একদিনের মধ্যে আরো বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন