সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের কারখানা কার্যক্রম ১০ বছরের সর্বনিম্নে

বণিক বার্তা ডেস্ক

রফতানির ওপর দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্যযুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাবে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানুফ্যাকচারিং কার্যক্রম কমে ১০ বছরের সর্বনিম্নে নেমে গেছে। এদিকে মার্কিন ম্যানুফ্যাকচারিং কার্যক্রমের পতনের ধাক্কায় গতকাল বিশ্বব্যাপী শেয়ারদর এক মাসের সর্বনিম্নে নেমে যায়। খবর রয়টার্স।

গত সপ্তাহে আগস্টে মার্কিন ভোক্তা ব্যয় প্রশমিত হওয়ার পরিসংখ্যান প্রকাশের পর মঙ্গলবার ইনস্টিটিউট ফর সাপ্লাই ম্যানেজমেন্ট (আইএসএম) যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানুফ্যাকচারিং কার্যক্রম নিয়ে জরিপ প্রকাশ করল। বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতিটির ক্রমাগত ম্লান হয়ে পড়ার পেছনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের চীনের সঙ্গে ১৫ মাসব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধকে দায়ী করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা আস্থার অবনতি ঘটিয়েছে উৎপাদন ক্ষুণ্ন করেছে।

পরিহাসের বিষয় হলো, ম্যানুফ্যাকচারিং খাতকেই বাণিজ্য শুল্কের ভার বহন করতে হচ্ছে; যেখানে অন্যায্য বিদেশী প্রতিযোগিতা থেকে শিল্পগুলোকে রক্ষার জন্য শুল্ক অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছে হোয়াইট হাউজ। এদিকে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের বিপর্যয়ের জন্য ফেডারেল রিজার্ভ, বিশেষ করে ফেড প্রধান জেরোমি পাওয়েলকে দায়ী করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আইএসএমের পরিসংখ্যান প্রকাশের পর পরই এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প লেখেন, আমি যেমনটা ধারণা করেছিলাম, জে পাওয়েল ফেডারেল রিজার্ভ ডলারকে শক্তিশালী হয়ে উঠতে দিয়েছে, বিশেষ করে অন্য মুদ্রাগুলোর বিপরীতে; যা থেকে আমাদের ম্যানুফ্যাকচারাররা নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। তিনি আরো জানান, ফেডের সুদহার অনেক উচ্চ। এগুলোই তাদের নিজেদের সবচেয়ে খারাপ শত্রু, অথচ বিষয়ে তাদের কোনো ধারণা নেই।

আইএসএম জানিয়েছে, গত মাসে সংস্থাটির জাতীয় কারখানা কার্যক্রম সূচক দশমিক পয়েন্ট হারিয়ে ৪৭ দশমিক পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা ২০০৯ সালের জুনের পর সর্বনিম্ন, যখন মহামন্দা শেষ হচ্ছিল। উল্লেখ্য, সূচকে ৫০ পয়েন্টের উপরে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে সম্প্রসারণ ৫০ পয়েন্টের নিচে সংকোচন বোঝায়। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির প্রায় ১১ শতাংশে অবদান রয়েছে খাতটির। রয়টার্স মতামত জরিপে অংশগ্রহণকারী অর্থনীতিবিদরা গত মাসে সূচকটি বেড়ে ৫০ দশমিক পয়েন্ট হবে বলে পূর্বাভাস করেছিলেন।

সেপ্টেম্বরে টানা দুই মাস সূচকটি ৫০ পয়েন্ট সীমার নিচে থাকল। ফলে নিয়ে টানা ছয় মাস সূচকটিতে পতন দেখা গেল, যা শিল্প উৎপাদনের মতো প্রকৃত উপাত্তের ঘুরে দাঁড়ানোর বিপরীত। প্রকৃত উপাত্তে আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা উৎপাদন বাড়তে দেখা গেছে।

এদিকে একটি বৃহত্তর মন্দার ঘোষণা দেয়ার জন্য আইএসএম সূচক ৪২ দশমিক পয়েন্টের নিচে নামতে হবে, অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সূচকটি অব্যাহত পতন ইতিহাসের দীর্ঘতম অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে।

এটি খুবই গুরুতর পরিস্থিতি বলে মন্তব্য করেছেন নিউইয়র্কের ডয়েচে ব্যাংক সিকিউরিটিজের প্রধান অর্থনীতিবিদ টর্স্টেন স্লোক। তার মতে, মন্থরতার কোনো শেষ নেই এবং মন্দার ঝুঁকি খুবই বাস্তবসম্মত।

গত মাসে আইএসএমের নতুন কার্যাদেশের উপসূচক ৪৭ দশমিক পয়েন্ট থেকে সামান্য বেড়ে ৪৭ দশমিক পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া সেপ্টেম্বরে একটি রফতানি সূচক দশমিক পয়েন্ট হারিয়ে ৪১ দশমিক শূন্য পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা ২০০৯ সালের মার্চের পর সবচেয়ে দুর্বল।

গত মাসে কারখানা কর্মসংস্থান সূচক আগস্টের ৪৭ দশমিক পয়েন্ট থেকে কমে ৪৬ দশমিক পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা সাড়ে তিন বছরের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কারখানা কার্যক্রম এক দশকের সর্বনিম্নে নামায় বিশ্বব্যাপী শেয়ারদর বড় ধাক্কা খেয়েছে। একই সঙ্গে মার্কিন অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব বিস্তৃত হচ্ছে বলে আশঙ্কা বাড়ছে।

গতকাল বৈশ্বিক এমএসসিআই সূচক দশমিক শূন্য শতাংশ নিচে নেমে যায়, যা সেপ্টেম্বরের শুরুর পর

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন