নিঃসরণ কেলেঙ্কারি : ফক্সওয়াগনের বিরুদ্ধে জার্মানিতে গণমামলা

বণিক বার্তা ডেস্ক

কার্বন নিঃসরণ পরীক্ষায় প্রতারণার দায়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করে ফক্সওয়াগনের বিরুদ্ধে গণমামলা দায়ের করেছে লাখো জার্মান গ্রাহক। একসঙ্গে বিশালসংখ্যক গ্রাহকের মামলা দেশটির আইনি লড়াইয়ে একটি মাইলফলক হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। খবর গার্ডিয়ান।

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ফাঁস হওয়ার পর জরিমানা, ক্ষতিপূরণ আইনি ব্যয়ভার বহন করতে এরই মধ্যে হাজার কোটি ইউরো ব্যয় করেছে ফক্সওয়াগন। তদন্তে দেখা যায়, কোম্পানিটি গাড়িতে এমন এক সফটওয়্যার স্থাপন করেছিল, যাতে ক্ষতিকর নাইট্রোজেন নিঃসরণ পরীক্ষায় কম মাত্রায় ধরা পড়ত।

২০০৮ সালের নভেম্বরের পর ফক্সওয়াগনের বিক্রীত লাখ ৭০ হাজার ডিজেলচালিত গাড়িতে ওই সফটওয়্যার স্থাপন নিয়ে মামলা চলছে। যে গাড়িগুলো নিয়ে ক্ষতিপূরণের দাবি উঠেছে, সে ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে ফক্সওয়াগন, আউডি, সিট এসকোডা।

ক্ষতিপূরণের দাবিতে করা মামলার প্রথম শুনানিটি সোমবার শুরু হয়েছে ব্রানশোয়াইগে, যা ফক্সওয়াগনের উলফবার্গ হেডকোয়ার্টারের কাছে। গ্রাহকদের পক্ষে মামলাটি করেছে ফেডারেশন অব জার্মান কনজিউমার অর্গানাইজেশনস (ভিজেডবিভি)

সারা বিশ্বে প্রায় লাখ ৩০ হাজার কর্মী বাহিনীর ফক্সওয়াগন ২০১৫ সালে স্বীকার করে যে, নিঃসরণ পরীক্ষায় ফাঁকি দিতে তারা কোটি ১০ লাখ গাড়িতে ত্রুটিপূর্ণ সফটওয়্যার যুক্ত করেছিল। ডিজেলগেট কেলেঙ্কারি হিসেবে অভিধা পাওয়া বিশাল কেলেঙ্কারিতে ফক্সওয়াগন শুধু হাজার কোটি ইউরো জরিমানাই গোনেনি, বরং ইউরোপজুড়েই ডিজেলচালিত গাড়ি বিক্রি ব্যাপক হারে কমে যায়। ফক্সওয়াগনের শীর্ষ নির্বাহীরা স্বীকার করেছেন, কেলেঙ্কারির ফলে তারা ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে দ্রুত বিদ্যুত্ চালিত গাড়িতে মনোযোগী হয়।

কেলেঙ্কারিটি প্রকাশে ব্যর্থতায় গত সপ্তাহে ফক্সওয়াগনের সাবেক বর্তমান শীর্ষ কর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেন কৌঁসুলিরা। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে, তারা হচ্ছেন ফক্সওয়াগনের বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হার্বার্ট ডিয়েস, চেয়ারম্যান হান্স ডিটার পোচ, সাবেক প্রধান নির্বাহী মার্টিন উইন্টারকর্নসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্র জার্মানিতে পৃথক কয়েকটি জালিয়াতির মামলা মোকাবেলা করছেন উইন্টারকর্ন অন্য কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা।

সংবাদ সংস্থা ডিপিএ বলছে, আদালতে মামলার কার্যক্রম শুরুর পর অভিযোগটি আমলে নেয়ার যোগ্য বলে জানিয়েছেন ব্রানশোয়াইগ প্রাদেশিক আদালত। তবে মামলাটি প্রমাণে বাদীপক্ষের অনেক কাজ করার আছে।

দুপক্ষের সমঝোতার ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিচারক মাইকেল নিফ। তিনি বলেন, উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা অনেক কঠিন কিন্তু সম্ভবপর।

ফক্সওয়াগনের এক মুখপাত্র জানান, তারা মামলায় পুরোদমে লড়বে এবং তারা মনে করেন দাবিগুলো শক্ত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়। গ্রুপ অ্যাকশন মামলায় বৈচিত্র্যের কারণে কীভাবে বিশালসংখ্যক অভিযোগ মিটমাট করবে, তা কোম্পানির জন্য কঠিন ঠেকেছে।

মামলার ব্যাপকতার কারণে তা নিষ্পত্তিতে চার বছর পর্যন্ত লেগে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন