গত পাঁচ বছরে প্রথমবারের মতো বাড়ল জাপানের বিক্রয় কর। দীর্ঘদিন ঝুলে থাকার পর শেষ পর্যন্ত দেশটি ভোগ কর নীতিমালা কার্যকর করল। তবে এ সিদ্ধান্ত দেশটির অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর বিবিসি।
অনেক জল্পনার অবসান ঘটিয়ে দেশটির বিক্রয় কর ৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। প্রায় সব ধরনের পণ্য ও সেবার ওপর এ কর কার্যকর হলেও খাদ্যপণ্য নতুন করের আওতার বাইরে থাকবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্ অর্থনীতির দেশটি বিক্রয় কর বৃদ্ধি করায় সেখানে ব্যয় খাত সংকুচিত হয়েছিল।
তবে এবারের কর বৃদ্ধির সঙ্গে কিছু বিশেষ পদক্ষেপ থাকায়, এর প্রভাব আগের অন্যান্য কর বৃদ্ধি থেকে আলাদা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ সুনির্দিষ্ট কিছু পণ্য ইলেকট্রনিক পেমেন্টের মাধ্যমে ক্রয় করলে সেক্ষেত্রে করছাড় থাকছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। নতুন পদক্ষেপের ফলে সম্ভাব্য যেকোনো ধরনের প্রতিকূল অবস্থার মোকাবেলায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
নতুন করের মাধ্যমে অর্জিত অতিরিক্ত আয় উন্নয়নমূলক বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যয় করা হবে। প্রধানত অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা ও সরকারি ঋণ কমানোর জন্য কর থেকে পাওয়া অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা হবে। এ প্রসঙ্গে দেশটির ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের অর্থনীতিবিদ মার্সেল টিলিয়্যান্ট বলেন, নতুন কর থেকে অর্জিত আয়ের প্রায় অর্ধেক শিশুদের অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য ব্যয় করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
এদিকে বৈদ্যুতিক বিভিন্ন সরঞ্জাম থেকে শুরু করে বই ও গাড়িসহ প্রায় সব ক্ষেত্রেই নতুন কর কার্যকর হবে। তবে অধিকাংশ খাদ্যপণ্য এ করের আওতার বাইরে থাকবে। ইলেকট্রনিক পেমেন্টে কেনাকাটার ওপর ৫ শতাংশ ছাড় পাবে। প্রসঙ্গত, নতুন কর নির্ধারণের ফলে সম্ভাব্য প্রতিকূল অবস্থা দেখা দিতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট দাতাদের ছাড় দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে দেশটির অধিকাংশ মানুষ এখনো নগদে লেনদেন করায়, ইলেকট্রনিক পেমেন্টকে জনপ্রিয় করাও এ সিদ্ধান্তের অন্যতম উদ্দেশ্য। এদিকে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট দাতাদের ওপর ছাড়ের বিষয়টি দেশটির অর্থনীতিকে আরো উত্পাদনশীল করতে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন ফুজিত্সু গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক মার্টিন শোলজ।
এদিকে সম্প্রতি দেশটির অর্থনীতিতে চাঙ্গাভাব দেখা গেলেও বর্ধিত ভোগ কর সেখানকার অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষত চলমান চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অনিশ্চয়তার দরুন কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেশটির অর্থনীতিকে ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে।