বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএসইসি চেয়ারম্যান

আইসিবিকে জবাবদিহি করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুঁজিবাজারে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ভূমিকার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে জবাবদিহি করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন। আইসিবি বন্ডের ২ হাজার কোটি টাকা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের অর্ধেক দিয়েছে আর বাকিটা ডিবেঞ্চারে ঋণ দিয়েছে। আমরা প্রতিষ্ঠানটিকে জবাবদিহির আওতায় আনব। ফান্ড নিয়ে সেই টাকায় পুঁজিবাজারকে সাপোর্ট না দিয়ে অন্য গার্মেন্টস কোম্পানিকে দেবেন, সেটা হবে না। তিনি গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ-২০১৯-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।


অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক মো. হেলাল উদ্দীন নিজামী, অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার বালা, খোন্দকার কামালুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ আহমেদ ও মো. মাহবুবুল আলম।


বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আজকে অনুষ্ঠান চলাকালীন অর্থমন্ত্রী আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। তিনি আমাকে জানিয়েছেন পুঁজিবাজারের উন্নয়নে যা যা করা প্রয়োজন, তা-ই করা হবে। শুধু সূচক বাড়লেই হবে না। বাজারের লেনদেন যাতে বাড়ে এবং সবার মধ্যে যেন আস্থা তৈরি হয়, আমরা সেই পরিকল্পনা নিয়েছি। গ্রামীণফোন ও রবির রাজস্বসংক্রান্ত যে সমস্যা রয়েছে, সেটি সমাধান হয়ে যাবে বলে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন। পুঁজিবাজারে আসার জন্য রবি কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেছে। প্রথমে ওরা বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে আসতে চেয়েছিল। আমরা বলেছি, ফেস ভ্যালুতে আসতে। কারণ ফেস ভ্যালুতে না এলে বিনিয়োগকারীরা কিছুই পাবেন না। তাছাড়া রবির ব্যালান্স শিট এখনো বুক বিল্ডিংয়ে আসার মতো এতটা শক্তিশালী নয়। রবি এতে রাজিও হয়েছে বলে জানান তিনি।


অর্থমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান আরো বলেন, তিনি আমাকে জানিয়েছেন বীমা খাতের চেয়ে সরকারি লাভজনক কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনার ক্ষেত্রে বেশি প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দু-একটি কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসবে।


বিএসইসি চেয়ারম্যান আরো বলেন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল) মাধ্যমে কীভাবে পুঁজিবাজারকে সচল রাখা যায়, সে ব্যবস্থা আমরা করব। আগামী বছরের জুনের আগেই বাজারে অনেকগুলো নতুন পণ্য আসবে। তখন বিনিয়োগকারীর অল্টারনেটিভ চয়েজ বেড়ে যাবে এবং ক্ষতির পরিমাণ কমে আসবে। এতে বাজারের গভীরতা ও স্থিতিশীলতা বাড়বে। আগের তুলনায় বর্তমানে টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের ক্ষেত্রে ভিন্নতা এসেছে। কয়েক বছর আগে আমাদের দেশে যে টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস করা হতো, আপনি আমেরিকায় যান, দেখবেন ধরন ও সফটওয়্যারে ভিন্নতা এসেছে। তাই সবসময় বিনিয়োগ শিক্ষা ছাড়া কোনো উপায় নেই।


অনুষ্ঠানে বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সমস্যা সমাধানে কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাতে নতুন একটি অনলাইন মডিউল চালু করা হয়। বিএসইসির ওয়েবসাইটে কাস্টমার কমপ্লেইন্ট অ্যাড্রেস মডিউলের (সিসিএএম) মাধ্যমে সহজেই অনলাইনে ফরম পূরণ করে বিনিয়োগকারীরা যেকোনো অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন।


অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে ট্রেকহোল্ডার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের বিনিয়োগ শিক্ষার বিভিন্ন দিক ও সুশাসন নিশ্চিতের বিষয়ে ধারণা দেন বিএসইসির পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। এতে বিনিয়োগকারীরা অনুমোদিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিনিয়োগ শিক্ষার বিষয়ে সম্যক ধারণা পাবেন।


উল্লেখ্য, বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডসহ (সিডিবিএল) বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার প্রতিষ্ঠান সপ্তাহব্যাপী নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন