সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সৌদি আরব ও ইরান যদি যুদ্ধে জড়ায়, তবে বিশ্ব অর্থনীতি পুরোপুরি ভেঙে পড়বে। তেহরানের সঙ্গে সামরিক নয়, রাজনৈতিক সমাধানই তার বেশি পছন্দ বলেও জানিয়েছেন তিনি। মার্কিন টেলিভিশন নেটওয়ার্ক সিবিএসের ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে এসব কথা বলেন সৌদি যুবরাজ। খবর বিবিসি ও রয়টার্স।
যুবরাজ সালমান জানান, বিশ্বের দেশগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইরানকে নিবৃত্ত করতে না পারে, তবে দুই দেশের মধ্যে বিবাদ বহুগুণ বেড়ে যেতে পারে, যার ফলে শেষ পর্যন্ত বিশ্বের স্বার্থই ক্ষুণ্ন হবে। তিনি বলেন, বিশ্ব যদি ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তবে তেলের দাম এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে, যা আমরা নিজেদের জীবদ্দশায় দেখিনি। সালমান আরো বলেন, সামরিকের তুলনায় রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধান তার অধিক পছন্দ।
মোহাম্মদ বিন সালমান জানান, গত মাসের ১৪ তারিখ বিশ্বের সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেল শোধনাগারসহ দুটি তেল প্লান্টে হামলার পেছনে ইরানকে দায়ী করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার সঙ্গে তিনি একমত।
আরামকোর দুটি তেলক্ষেত্রে ওই হামলায় বিশ্বের তেল সরবরাহের পরিমাণ ৫ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পায়। ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা হামলাটির দায় স্বীকার করলেও যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ ও সৌদি আরব এ হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করে আসছে। তবে তেহরান বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছে।
তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে প্রভাব বিস্তার রোধে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন একটি চুক্তি করা উচিত বলে মনে করেন যুবরাজ সালমান। চুক্তির বিষয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠক হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটে জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের বর্ষপূর্তির কয়েক দিন আগে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে ওই ঘটনার বিষয়টিও উঠে আসে। হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন কিনা এ প্রশ্নে যুবরাজের উত্তর ছিল, মোটেই না। তবে হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াননি তিনি।
তিনি বলেন, যেহেতু এটি সৌদি সরকারের হয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা করেছে, তাই এর সম্পূর্ণ দায় নিচ্ছি আমি। এটা ভুল ছিল। ভবিষ্যতে যেন এ রকম না হয়, সেজন্য অবশ্যই সব ধরনের পদক্ষেপ নেব আমি।
ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি গত বছরের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে অবস্থিত