পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে ৪ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে বাস টার্মিনাল নির্মাণ শেষ হয় ২০০১ সালে। তবে শুরু থেকেই এ টার্মিনাল ব্যবহার করছে না বাস মালিক সমিতি। ফলে ১৮ বছর ধরে অব্যবহূত পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে টার্মিনালের অবকাঠামো। অন্যদিকে বাসস্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে শহরের অন্তত ১২টি স্থান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙ্গামাটি শহরের ফিশারি বাঁধ এলাকায় ৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হয় ১৯৯৪ সালে। এ নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০০১ সালের দিকে। কিন্তু প্রথম থেকেই স্থানীয় সড়ক পরিবহন নেতাদের বিভিন্ন অসন্তোষের কারণে টার্মিনালটি ব্যবহার করা হয়নি। তবে ২০০৮ সালের দিকে টার্মিনালটিতে বাস রাখার পাশাপাশি টিকিট বিক্রি শুরু হলেও পরের বছর তা বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থা চলতে থাকলে ২০১২ সালে টার্মিনালের বিভিন্ন জায়গা অবৈধভাবে দখলের অভিযোগ এনে টার্মিনালটি ব্যবহার না করার ঘোষণা দেন বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক নেতারা।
এ অবস্থায় রাঙ্গামাটি শহরের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ড। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-বান্দরবানগামী বাসে যাত্রীদের ওঠানামা করতে হয় শহরের রিজার্ভ বাজার, তবলছড়ি ও বনরূপা, কলেজ গেট ও ভেদভেদী এলাকা থেকে। অন্যদিকে বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির আন্তঃজেলা বাস কাউন্টারও রয়েছে এসব এলাকায়। এভাবে নিউমার্কেট এলাকাসহ পুরো শহরে অন্তত ১২টি স্থানে বাস থেকে যাত্রী ওঠানামা করা হচ্ছে। আর এসব স্ট্যান্ডের কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকায় প্রায়ই যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হয় স্থানীয়দের।
রাঙ্গামাটি পৌর নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সদস্য সচিব এম জিসান বখতিয়ার বলেন, শহরজুড়ে ছড়িয়ে থাকে বাস কাউন্টারগুলো। সব এক জায়গায় হলে যাত্রীদের সুবিধা হতো। শহরে যানজটও সৃষ্টি হতো না। আশা করছি, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এদিকে বিভিন্ন রুটের বাসচালকরা বলেন, রাঙ্গামাটি বাস টার্মিনালকে ঘিরে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনার কারণে তাদের নানা সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া টার্মিনালে বাস রাখার পরিবেশ নেই। টার্মিনালে বাস রাখলে বাসের যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে যায়।
অন্যদিকে রাঙ্গামাটি জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মঈনুদ্দীন সেলিম বলেন, রাঙ্গামাটি একটি পর্যটন শহর। এখানে অবশ্যই একটি আধুনিক টার্মিনালের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু বর্তমান টার্মিনালের আশপাশের এলাকায় বসতঘর ও দোকানঘর নির্মাণ করা হয়ছে। ভূমিদস্যুদের দখলে সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে টার্মিনালে বাস চলাচলের রাস্তা। তাছাড়া এ এলাকায় সবসময় মাদকসেবীদের উৎপাত লেগে থাকে। তাই বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে আমরা টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়ছি না।
রাঙ্গামাটি বাস টার্মিনালের ইজারাদার আব্দুস সালাম বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় টার্মিনাল এলাকার অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হলে টার্মিনালটি আবার চালু করা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, বাস টার্মিনালটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করা হলে আমরা সেখানে যাত্রীসেবা দিতে প্রস্তুত আছি। আমরা টার্মিনালটি দখলদারমুক্ত করে চালু করার বিষয়ে ভূমিকা রাখতে চাই।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (প্রশাসন) আশীষ কুমার বড়ুয়া বলেন, নানা দিক বিবেচনা করেই ফিশারি বাঁধ এলাকায় বাস টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু কেন বাসের কাউন্টারগুলো সেখানে থাকছে না কিংবা কেন টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়ছে না, সে বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। তবে স্থানীয় প্রশাসন ভূমিকা রাখলে আবারো টার্মিনালটি চালু করা সম্ভব হবে।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, অব্যবহূত বাস টার্মিনালের বিষয়টি আমরা জেনেছি। বাসগুলো সেখানে না রেখে শহরের র?