অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসার প্রসারে নীতিমালা প্রণয়নের তাগিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা জোরদারের লক্ষ্যে সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার ব্যবসার সুযোগ সহজ করতে হবে। পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসার প্রসারে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। গতকাল দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসা সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের বক্তব্যে তাগিদ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাজধানীর একটি হোটেলে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসা সম্মেলন ২০১৯। ডাচ্-বাংলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিবিসিসিআই) এবং এসএনভি নেদারল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন যৌথভাবে সম্মেলন আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

ডিবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অধিবেশনে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারওয়েজ, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত শার্লোট্টা স্লাইটার এসএনভি নেদারল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর জেসন বেলেঞ্জার বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসার প্রসারে সম্মানজনক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা জোরদার করতে হবে। লক্ষ্যে নারী পুরুষদের জন্য সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন, সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকর সংস্কার এবং ব্যবসার সুযোগ সহজ করতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে তারা ব্যবসা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি, শিল্প উদ্ভাবনে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান এবং উচ্চ উৎপাদনশীলতার কৌশল গ্রহণের সুপারিশ করেন।

দিনব্যাপী আয়োজিত সম্মেলনে স্যানিটেশন ব্যবসা, জেন্ডার অন্তর্ভুক্তিমূলক কৃষি খাদ্যনিরাপত্তা, তৈরি পোশাক কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা এবং তৈরি পোশাক খাতে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকরণ শীর্ষক চারটি পৃথক সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, সুশীল সমাজ, ব্র্যান্ড ক্রেতা প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন। এতে দেশের বেসরকারি খাতে পরিচালিত ব্যবসা-বাণিজ্যে উদ্ভাবনী সমাধানের সুযোগ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসা সম্প্রসারণের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ নিজস্ব কৌশল গ্রহণ করেছে বলে মন্তব্য করে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে সাফল্যের পর বাংলাদেশ এখন টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করছে। শিল্প খাতে ক্রমাগত প্রবৃদ্ধি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

শিল্পমন্ত্রী আরো বলেন, সরকারের শিল্পবান্ধব নীতির ফলে বাংলাদেশ এরই মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় বিনিয়োগের সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, গভীর সমুদ্রবন্দর, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্র, পদ্মা বহুমুখী সেতুসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ফলে বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বেসরকারি খাতের বিকাশে শিল্প মন্ত্রণালয় ফ্যাসিলিটেটরের ভূমিকা পালন করছে। ফলে দেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসার প্রসার ঘটছে এবং এলাকাভিত্তিক কাঁচামাল ব্যবহার করে নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠছে। উদ্যোগ তৃণমূল জনগোষ্ঠীকে শিল্পায়ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন