চলতি বছর ব্রাজিলের কফি উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া এক প্রাক্কলনে বলা হয়েছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ বছর কফি উৎপাদন কমে ৪ কোটি ৯০ লাখ ব্যাগে (প্রতি ব্যাগে ৬০ কেজি) দাঁড়াতে পারে। খবর রয়টার্স।
এর আগে মে মাসে করা প্রাক্কলনে বলা হয়, বছর শেষে ব্রাজিলের কফি উৎপাদন দাঁড়াবে ৫ কোটি ৯০ লাখ ব্যাগ। কিন্তু চলতি বছর দেশটিতে স্বাভাবিকের তুলনায় শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করছে, যা দেশটির কফি উৎপাদন কমিয়ে দিতে পারে।
বিশ্বের শীর্ষ কফি উৎপাদক দেশ ব্রাজিল। গত বছর দেশটিতে রেকর্ড কফি উৎপাদন হয়েছিল। এ সময়ে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ১৬ লাখ ৬০ হাজার ব্যাগ। আর এখন নতুন এ প্রাক্কলন অনুযায়ী উৎপাদন হলে গত বছরের তুলনায় এবার উৎপাদন ২০ শতাংশ কমতে পারে।
আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন কমে গেলে সেটির প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে অ্যারাবিকা কফির ওপর। কারণ দেশটিতে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় মূল্যবান এই কফিটি। ব্রাজিলের কৃষিবিষয়ক পরিসংখ্যান সংস্থা কোনাবের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে অ্যারাবিকা কফি উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৭০ হাজার ব্যাগ। যেখানে মে মাসের প্রাক্কলনে ৩ কোটি ৭০ লাখ ব্যাগ উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়।
তবে অ্যারাবিকা কফির উৎপাদন কমে গেলেও রোবাস্তা কফির উৎপাদন কিছুটা বাড়বে বলে মনে করছে কোনাব। প্রতিষ্ঠানটির সংশোধিত প্রাক্কলনে বলা হয়েছে, চলতি বছর শেষে পানীয় পণ্যটির উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ১ কোটি ৪৫ লাখ ২০ হাজার ব্যাগে। যদিও মে মাসের প্রাক্কলনে ১ কোটি ৩৯ লাখ ৩০ হাজার ব্যাগ রোবাস্তা কফি উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।
অন্যদিকে ব্রাজিল সরকারের প্রাক্কলন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় অনেক কম। দেশটির পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সাফরাস অ্যান্ড মার্কাডোর প্রাক্কলনে বলা হয়েছে, বছর শেষে কফি উৎপাদন হতে পারে ৫ কোটি ৮৯ লাখ ব্যাগ। আর ব্রোকার ও এক্সপোর্টার প্রতিষ্ঠান কমেক্সিয়াম বলছে, কফি উৎপাদন হতে পারে ৫ কোটি ৮২ লাখ ব্যাগ।
ব্রাজিলে এক বছর ভালো কফি উৎপাদন হলে পরের বছর সাধারণত মন্দা যায়। যে কারণে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, চলতি বছর মন্দা সময় গেলেও ২০২০ সালে দেশটিতে আবার রেকর্ড উৎপাদন হতে পারে। কিন্তু এটি কফির বাজার চাঙ্গা করার পথে বাধা হতে পারে।
তবে ব্রাজিলের কো-অপারেটিভস ফার্মগুলো মনে করছে, আগামী বছর উৎপাদন ভালো হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, অনিয়মিত আবহাওয়া কখনো ফসল উৎপাদনের জন্য ভালো নয়। এমনকি কৃষকরা বলছেন, বাজার মন্দা থাকায় তারা ফসলের পরিচর্যা কমিয়ে দিয়েছেন, যা উৎপাদন কমিয়ে আনবে।
