দুর্নীতির ক্যাসিনো তত্ত্ব এবং...

ড. এ কে এনামুল হক

হঠাৎ করেই চারদিকে রব রব। দুর্নীতির রব এখন চারদিকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, পুলিশ, ব্যাংক কর্মকর্তা, ছাত্রনেতা, যুবনেতা থেকে শুরু করে রিকশাওয়ালা কাম শিল্পপতি সবাই যেন হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে গেছেন। সবাই একই কাতারে! কারো বিরুদ্ধে বিনিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ, কারো বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজির; কেউ ঋণ বিতরণ বা পুনর্বিতরণ, কেউ টেন্ডারের কমিশন, কেউ জড়িত ক্যাসিনো ব্যবসায়। বিষয়টি প্রায় এড়িয়ে যাচ্ছিলাম, কারণ সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেই এত আলোচনা। তাই অপেক্ষায় আছি শেষ পর্যন্ত জল কতদূর যায় তা দেখার। কিন্তু বিপত্তি বাধল ক্লাস নিতে গিয়ে।

ক্লাসের পর ছাত্রছাত্রীরা আসে তাদের যত চিন্তা প্রকাশ করতে। এরই মধ্যে একজন এসে বলল, স্যার, আমার গবেষণার বিষয় ঠিক করেছি, তা নিয়ে আপনার সঙ্গে একটু আলোচনা করতে চাই। খুশির খবর। ছাত্রদের মাথায় গবেষণা বিষয়টি ঢোকাতে আমরা গলদ্ঘর্ম হচ্ছি। যতই বলছি গবেষণা আর গরুর রচনা এক নয়। কিন্তু তারা তা- করে বসছে। গবেষক ছাত্ররা গরু নিয়ে এতই ব্যস্ত যে তাদের আমরা যা নিয়েই গবেষণা করতে বলি না কেন, তারা শেষ পর্যন্ত গরুর রচনাই লেখে। অর্থাৎ তাদের যে এককালে শেখানো হয়েছিল কী করে রচনা লেখা হয়, তারা সেই যুগেই রয়ে গেছে। একই জিনিস বিভিন্ন পত্রপত্রিকা থেকে কাট-পেস্ট করে কিছু একটা দাঁড় করানোর ব্যর্থ প্রয়াস তারা করে। এই ছাত্র যখন তার নিজের গবেষণার একটি বিষয় নিয়ে কথা বলতে এসেছে তখন ভালোই লাগল। বললাম, তুমি কী নিয়ে গবেষণা করতে চাও? স্যার, আমি জানতে চাইছি ক্যাসিনো চালু করলে দেশের অর্থনীতির কী পরিমাণ লাভ হয়? কিছুটা অবাক। ভাবলাম সে হয়তো পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের হেনস্তা দেখে বিষয়টি নিয়ে ভাবছে! বললাম, পৃথিবীর এত সমস্যা থাকতে তোমাকে ক্যাসিনো অর্থনীতি নিয়ে কেন ভাবতে হচ্ছে? তুমি কি ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত? না স্যার, তা নয়। ভাবছি বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য যদি আমরা ক্যাসিনো চালু করি, তবে হয়তো দেশের উপকার হবে! অবাক কাণ্ড। তুমি দেশের কোথায় ক্যাসিনো চালু করার কথা ভাবছ। স্যার কক্সবাজারে, পর্যটন অঞ্চলে চালু করা যায়। বললাম, তুমি কি সোসিওলজি পড়েছ? কেন স্যার? সমাজ সম্পর্কে তোমার কোনো ধারণা আছে বলে তো মনে হয় না। তুমি কি মনে করো, কক্সবাজারে ক্যাসিনো চালু করলে বাংলাদেশের সমাজ তা গ্রহণ ক?

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন