খানাখন্দে বেহাল রায়পুর-খাসেরহাট সড়ক

বণিক বার্তা প্রতিনিধি লক্ষ্মীপুর

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর-খাসেরহাট সড়কের সর্বশেষ সংস্কার হয়েছিল প্রায় তিন বছর আগে। কিন্তু ওই সংস্কারের মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই সড়কটির প্রায় ১০ কিলোমিটারে কার্পেটিং উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারী যানবাহন ও স্থানীয় ইটভাটার ট্রাক্টর চলাচলের কারণে সড়কটির এ বেহাল হয়েছে। ফলে এ পথে চলাচলে স্বাভাবিকের থেকে কয়েক গুণ বেশি সময় তো লাগছেই, প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

সরেজমিন দেখা যায়, সড়কের পাটওয়ারী মাথা থেকে পাটওয়ারী বাড়ী, প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কাজীগো চৌরাস্তা, বংশীবাজার, চরবংশী ইটভাটা, আখন বাজার মোড়, মোল্লার হাট বাজার, বাবুর হাট, হাজীমারা ও মিয়ার বাজারসহ সড়কের বেশকিছু এলাকায় বড় বড় খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি জমে থাকছে এসব গর্তে। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন।

স্থানীয়রা জানায়, প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু সড়কটির বেহালের কারণে এ পথে চলতে হয় খুবই সাবধানে। বর্ষায় অবস্থা এতই খারাপ হয় যে তখন হেঁটে চলাচলও দায় হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

তারা আরো জানায়, প্রায় তিন বছর আগে কোটি টাকা ব্যয়ে এ সড়কের ১০ কিলোমিটার অংশ সংস্কার করা হয়। কিন্তু ছয় মাস যেতে না যেতেই সংস্কারকৃত সড়কের কার্পেটিং উঠে যায়। সৃষ্টি হয় ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। বর্তমানে এ পথে চলতে গাড়িতে ৩০ মিনিটের স্থলে সময় লাগছে অন্তত ২ ঘণ্টা।

এদিকে যানবাহনের চালকরা জানান, এ সড়ক দিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর ও রায়পুরের খাসের হাট ও হায়দরগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার যানবাহন চলাচল করে। সড়কের বেহালের কারণে এ পথে প্রায়ই গাড়ি বিকল হয়ে তাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জানায়, মূলত স্থানীয় দুটি ইট ভাটার প্রায় ৫০টি ট্রাক্টর ও বেশি ওজনের বড় ট্রাক চলাচলের কারণে সড়কটির এ দশা হয়েছে। তারা এ ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধে ও সড়কের দ্রুত সংস্কারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

মো. জাকির হোসেন নামে এক ব্যাংকার বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ আঞ্চলিক সড়কের এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়নি। অথচ এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করে। পণ্য পরিবহন করা হয় পাঁচটি বাজারের। বর্তমানে অনেকেই দুর্ঘটনাপ্রবণ এ সড়ক ব্যবহার করছেন না। তারা বিকল্প পথ হিসেবে স্টিল ব্রিজ থেকে চরমোহনা ইউনিয়ন হয়ে রায়পুর শহরে চলাচল করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, এ সড়কের সংস্কার কাজ শেষে বিল উত্তোলন করার সময় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বাধা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঠিকাদার বিল তুলে নেন। তাছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এ ধরনের কাজে ত্রুটি বা সমস্যা দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারেরই তা ঠিক করে দেয়ার কথা। কিন্তু সংস্কারের ছয় মাসের মধ্যেই সড়কটি বেহাল হয়ে পড়লেও তা মেরামত করা হয়নি।

লক্ষ্মীপুর সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত দত্ত বলেন, সড়কটির বিষয়ে অনেক আগেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। মূলত ইট ভাটার ট্রাক্টর ও ভারী ট্রাক চলাচলের কারণে সংস্কারের পর সড়কটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এ পথে ট্রাক্টর চলাচল বন্ধে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিলে আমাদেরও উপকার হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন