বাগেরহাটে নির্মাণ হচ্ছে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

বণিক বার্তা প্রতিনিধি বাগেরহাট

দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে বাগেরহাটের চিতলমারীতে নির্মাণ হচ্ছে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। উপজেলার চরবানিয়ারী ইউনিয়নের শ্যামপাড়া গ্রামে দেড় একর জমিতে দ্রুত এগিয়ে চলছে কেন্দ্রের নির্মাণকাজ। আশা করা হচ্ছে, এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু হলে জেলার বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসন ও গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ‘৪০টি উপজেলায় ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্পের অধীনে এ কেন্দ্রের নির্মাণ চলছে। এখানে কারিগরি প্রশিক্ষণ দেয়া হবে সাতটি ট্রেডে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে যুক্ত করা হবে এসএসসি (ভোকেশনাল) কার্যক্রমসহ আরো ট্রেড। এরই মধ্যে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একাডেমিক ভবন, অধ্যক্ষের বাসভবন ও ডরমিটরি ভবনের কাজ ৬৫ শতাংশ শেষ হয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণে ২০১৭ সালে ৪৯ লাখ ৮ হাজার ৪৪৯ টাকায় শ্যামপাড়া গ্রামে দেড় একর জমি অধিগ্রহণ করে জেলা প্রশাসন। এরপর ওই বছরের ২৪ আগস্ট জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোকে জমি বুঝিয়ে দেয়া হয়। পরে গণপূর্ত বিভাগ দরপত্র আহ্বান করলে কেন্দ্রের নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায় তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তারা কাজ শুরু করে ২০১৮ সালে।

বর্তমানে ২৪ কোটি ৭ লাখ ৭৭ হাজার টাকা ব্যয়ে এ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একাডেমিক ভবন, ডরমিটরি, অধ্যক্ষের বাসভবন, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, পাম্প হাউজ, গ্যারেজ, ডিপ টিউবওয়েল, আরসিসি সড়ক, সীমানা প্রাচীর ও ফটকের নির্মাণকাজ চলছে। এর মধ্যে ছয়তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি ৮৭ লাখ। এছাড়া তিনতলা ডরমিটরি নির্মাণে ৪ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং অধ্যক্ষের বাসভবন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা। আশা করা হচ্ছে, ২০২০ সালের ৩০ জুনের মধ্যে এর নির্মাণ শেষ হবে।

এদিকে প্রত্যন্ত গ্রামে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণে দারুণ খুশি স্থানীয়রা। তারা বলছেন, এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এখানকার পুরো প্রেক্ষাপট পাল্টে দিতে পারে। কারণ বর্তমানে বাগেরহাটের কেউ কারিগরি প্রশিক্ষণ নিতে চাইলে তাকে খুলনা অথবা ঢাকা যেতে হয়। কিন্তু এখানে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি চালু হলে স্থানীয় বেকাররা সহজেই বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারবে।

চিতলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়াল বলেন, এ কেন্দ্রের মাধ্যমে আমাদের বেকার ছেলেমেয়েরা প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের দক্ষ করে তুলতে পারবে। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি সার্বিকভাবে চিতলমারীসহ এ অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

‘৪০টি উপজেলায় ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বলেন, গণপূর্ত বিভাগ অবকাঠামো নির্মাণ শেষ করলেই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা হবে। এরই মধ্যে ৮৫ জনের জনবলের একটি চাহিদাপত্র অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রাথমিকভাবে এখানে কম্পিউটার অপারেশন, গ্রাফিকস, ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিকস, মেশিন টুলস অপারেশন, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনার ও অটো ড্রাইভিং কোর্স ট্রেডে তিন ও ছয় মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এ অঞ্চলে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সদ্য বদলি হওয়া গণপূর্ত বিভাগ বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোবারক হোসেন বলেন, আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কাজ তদারক করছি। এরই মধ্যে অধ্যক্ষের বাসভবন ও ডরমিটরির কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। একাডেমিক ভবনের দ্বিতীয় তলা শেষ করে তৃতীয় তলার ছাদ ঢালাই হয়েছে। আশা করছি নির্ধারিত সময় ২০২০ সালের ৩০ জুনের মধ্যেই সব কাজ শেষে ভবনগুলো হস্তান্তর করতে পারব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন