কাশ্মীর ইস্যুতে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে নিরাপত্তা পরিষদ

বণিক বার্তা ডেস্ক

ভারত সরকারের জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্তটি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গতকাল এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছে। চীন ও পাকিস্তানের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিশেষ সভার আয়োজন করা হয়। সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

হিমালয়ের পার্বত্যাঞ্চল কাশ্মীর নিয়ে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধ চলমান রয়েছে বহুদিন ধরে। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে এ বিরোধে নতুন মাত্রা যোগ করেছে নয়াদিল্লি। ধারাটি বাতিলের ফলে আধা-স্বায়ত্তশাসিত রাজ্য থেকে ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হলো জম্মু ও কাশ্মীর। একই সঙ্গে অঞ্চলটিকে ভেঙে করা হচ্ছে দ্বিখণ্ডিত।

বিষয়টি নিয়ে চীন ও পাকিস্তানের অনুরোধে নিরাপত্তা কাউন্সিলের রুদ্ধদ্বার বৈঠক বসলেও সমস্যা সমাধানে তা আদতে কোনো কাজে আসবে কিনা; বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেক। কারণ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকগুলোয় ঐতিহ্যগতভাবেই যুক্তরাষ্ট্র ভারতের এবং চীন পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে থাকে।

গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় নয়াদিল্লি। এর মধ্য দিয়ে কেড়ে নেয়া হয় কাশ্মীরি জনগণের নিজস্ব আইন প্রণয়নের অধিকার। অন্যদিকে এতদিন অঞ্চলটিতে বহিরাগতদের জমি বা সম্পত্তি ক্রয়ের কোনো সুযোগ না থাকলেও ৩৭০ ধারা বাতিলের ফলে সে সুযোগও তৈরি হয়েছে। কাশ্মীরের জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক বিরোধের আশঙ্কায় এরই মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীরে মোতায়েনকৃত সৈন্যের সংখ্যা বাড়িয়েছে ভারত। কোনো ধরনের আন্দোলন বা সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে বহির্জগৎ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে অঞ্চলটিকে। সেখানকার টেলিফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে ফেলার পাশাপাশি টেলিভিশন সম্প্রচারও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে মঙ্গলবার এক চিঠি দেয় পাকিস্তান। চিঠিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি লেখেন, পাকিস্তান এখানে কোনো সংঘাতে প্ররোচনা দেবে না। তবে ভারত যদি শক্তি প্রয়োগের পথ বেছে নেয়; তাহলে নিজেকে রক্ষার জন্য পাকিস্তানও সর্বশক্তি দিয়ে জবাব দেবে।

এদিকে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার জন্য হানিকারক হতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। একই সঙ্গে তিনি ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের বিষয়টিতেও উদ্বেগ জানিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন