বৈরী আবহাওয়ায় সামুদ্রিক মত্স্য আহরণ বন্ধ

খালি হাতেই ফিরছেন জেলেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম ব্যুরো

দীর্ঘ ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকার সময় অনেকটা অলস বসে ছিলেন মত্স্যজীবীরা। তবে ২৩ জুলাই নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রে গিয়ে মাছ শিকার শুরু করেন তারা। কিন্তু চলমান বৈরী আবহাওয়ার কারণে গভীর সমুদ্রে গিয়ে মাছ শিকারে ব্যাহত হচ্ছে ট্রলার কিংবা জাহাজগুলো। যার কারণে সমুদ্রে কয়েক দফা মাছ ধরতে গেলেও একেবারে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে জেলেদের। এতে করে সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার ১৫ দিন পার হয়ে গেলেও ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞার কার্যত সুফল ভোগ করতে পারেননি কেউই।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে। যার কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়ার আশঙ্কায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখানো হয়েছে।

সেই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

সামুদ্রিক মত্স্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, গভীর সমুদ্র উত্তাল থাকায় জাহাজগুলো বৈরী আবহাওয়ার কারণে মাছ শিকারে যেতে পারছে না। তবে গত মাসের ২৩ তারিখের পর সমুদ্রে যে ইলিশ ধরা পড়ছে, সেটাও পর্যাপ্ত নয়। অন্যদিকে ইলিশ ছাড়া অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ ধরা পড়েনি। আবহাওয়ার অবস্থা ভালো হলে ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ বাড়বে। তখন ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞার কার্যত সুফল কতটুকু হয়েছে, সেটা নির্ণয় করা সম্ভব হবে।

সামুদ্রিক মত্স্য অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মো. আবুল হাসনাত এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিনের যে নিষেধাজ্ঞা ছিল সেটা সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে সমুদ্রে যে মাছ ধরা পড়ছে, তা-ও পর্যাপ্ত নয়। তবে গভীর সমুদ্র উত্তাল থাকায় সেখান থেকে এখনো ইলিশ ছাড়া অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের কী অবস্থা সেটা আমরা এখনো জানতে পারিনি। আশা করি, গভীর সমুদ্রের বৈরী আবহাওয়ার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে আমরা নিষেধাজ্ঞার কতটা সুফল পেলাম সেটা জানতে পারব।

তিনি জানান, ১৫ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সমুদ্রে মত্স্য আহরণ বন্ধ রাখে ভারত সরকার। আর আমাদের ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই। তার মানে তাদের শেষ আর আমাদের শুরু। এজন্য সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় জেলেরা আমাদের জলসীমায় ঢুকে মাছ শিকার করছে এমন চিত্র দেখা গেছে। সেজন্য ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রের একই সময়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা যায় কিনা সেটা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে গবেষণা চলছে। এ গবেষণা তখনই সার্থক হবে, যখন নিষেধাজ্ঞার পরবর্তী সময়ে আমাদের মাছের উৎপাদন এবং মজুদ কী পরিমাণ আছে তার পরিসংখ্যানের ওপর নির্ভর করবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন