জিএসপি পর্যালোচনা : অক্টোবরে ঢাকা আসছে ইইউ প্রতিনিধি দল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোয় অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা (জিএসপি) পেয়ে আসছে বাংলাদেশ, যার পরিমাণ প্রতি বছরই বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে নতুন নির্বাচিত ইউরোপীয় সংসদ জিএসপি প্রাপ্তিতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের যোগ্যতা পর্যালোচনা করবে। এ লক্ষ্যে আগামী অক্টোবরে ঢাকা আসছে ইইউর একটি প্রতিনিধি দল।

গত ২৯ জুলাই বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে একটি নোট ভার্বাল পাঠিয়েছে ইইউ। সেখানে বলা হয়েছে, আগামী ১৪-১৬ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ সফরে আসবে ইইউ প্রতিনিধি দল। দলটি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশনের সঙ্গে বাংলাদেশের শ্রম অধিকার পরিস্থিতি কতটা সংগতিপূর্ণ, সে বিষয়ে আলোচনা হবে।

সূত্র জানিয়েছে, তিনদিনের সফরে শ্রম অধিকারসংশ্লিষ্ট বাংলাদেশের খাতসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করবে প্রতিনিধি দল। বাংলাদেশকে দেয়া উদার বাণিজ্য সুবিধা শ্রম অধিকার প্রেক্ষাপটে কতটা কার্যকর, তা যাচাইয়ে খাতসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় গুরুত্ব পাবে।

গত ২৯ জুলাই বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর চিঠি দিয়ে সফরের বিষয়টি জানিয়েছে ইইউ। চিঠিতে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) বাণিজ্য পরিচালক ইওয়া সিনোউইয়েক বাংলাদেশকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের শ্রম আইন সংস্কারের হালনাগাদ আলোচনা করা। পাশাপাশি এ-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে দ্বিবার্ষিক জিএসপি প্রতিবেদন তৈরি করা, যা ইউরোপীয় সংসদে সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনায় উপস্থাপন করা হবে।

অক্টোবরে ইইউ প্রতিনিধি দলের সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কেএম আলী আজম বণিক বার্তাকে বলেন, জিএসপি প্রাপ্তিতে বাংলাদেশের যোগ্যতা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মানে এটা নয় যে বাংলাদেশের যোগ্যতা নেই। কারণ এ ধরনের কোনো পরিস্থিতি বাংলাদেশে তৈরি হয়নি। জিএসপি পাওয়ার যোগ্যতা যে দেশগুলোর আছে, তাদের বছরজুড়েই নজরদারি করে ইইউ। অনেক বিষয় থাকে, যেগুলোয় সংশ্লিষ্ট দেশের অগ্রগতি যাচাই করা হয়। এরই মধ্যে ইইউ যে চিঠি দিয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের অবস্থান আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জানাতে হবে। সেটি দেখে ইইউ সফরের আলোচ্য বিষয় নির্ধারণ করবে।

জানা গেছে, শ্রম ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠিতে বেশকিছু বিষয়ে বাংলাদেশের অগ্রগতি জানতে চেয়েছে ইসি। এর মধ্যে আছে শ্রম আইন, রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে প্রযোজ্য আইন এবং বাংলাদেশের শ্রম বিধিমালা আইএলওর ৮৭ ও ৯৮ কনভেনশনের সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ।

সরকারি ও বেসরকারি সূত্রগুলো বলছে, ২০১৭ সালের শেষ ভাগ থেকেই শ্রমসংক্রান্ত ইস্যুগুলো কমপ্লাই না করলে বাংলাদেশের জিএসপি থাকবে না বলে জানিয়ে আসছে ইইউ। জিএসপি স্কিমের আওতায় সবচেয়ে বেশি সুবিধা বাংলাদেশ নিচ্ছে। এ সুবিধার ফল সমাজের সবাই সমানভাবে পাচ্ছে কিনা, সে বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে ইইউ সংসদে। আইনপ্রণেতারা বলছেন, সুবিধাভোগী দেশগুলোর মধ্যে শ্রম অধিকারসংক্রান্ত সমস্যার তালিকা বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই বড়।

ইসি বাংলাদেশ সূত্রমতে, ২০২৪ সালে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হলে বাংলাদেশের জন্য এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ) সুবিধা থাকবে না। তখন বাংলাদেশকে জিএসপি প্লাসের মাধ্যমে বাণিজ্য সুবিধা আদায় করতে হবে। জিএসপি প্লাসের শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ওই সুবিধার জন্য এখনো উপযুক্ত নয়। এজন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ করতে হবে। একই সঙ্গে ইইউকেও বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধার আওতায় রাখতে শর্তে পরিবর্তন আনতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন