সপ্তাহের শেয়ারবাজার : ৫৫ শতাংশ সিকিউরিটিজের দর বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

গেল সপ্তাহে ইতিবাচক ধারায় লেনদেন শেষ হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। আগের সপ্তাহের তুলনায় গেল সপ্তাহে শেয়ারবাজারে সূচক ও লেনদেন দুটোই বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩১ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ৫৬ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট বেড়েছে। পাশাপাশি দুই এক্সচেঞ্জের দৈনিক গড় লেনদেনও বেড়েছে। ডিএসইতে সপ্তাহজুড়ে ৫৫ শতাংশ সিকিউরিটিজের দর বেড়েছে।

বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গেল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ৩ পয়েন্ট যোগ হয় ঢাকার বাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্সে। আগের সপ্তাহে ৫ হাজার ১৬৯ পয়েন্ট থেকে ৪ আগস্ট দিন শেষে ৫ হাজার ১৭২ পয়েন্টে উন্নীত হয় সূচকটি। পরবর্তী কার্যদিবসে ১২ পয়েন্ট কমলেও মঙ্গলবার আবার ২৭ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৮৭ পয়েন্টে উন্নীত হয় সূচকটি। বুধবার সূচক দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট কমলেও শেষ কার্যদিবসে ১৪ পয়েন্ট যোগ হয় ডিএসইএক্সে। ফলে সপ্তাহ শেষে ৫ হাজার ২০১ পয়েন্টে অবস্থান করছে ডিএসইএক্স। তিন কার্যদিবসের উত্থানে ডিএসইর প্রধান সূচকে যোগ হয়েছে ৩১ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট।

ডিএসইর প্রধান সূচকের পাশাপাশি শরিয়াহ সূচক ডিএসইএসও বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ৩ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্ট বেড়েছে ডিএসইএস। বৃহস্পতিবার ১ হাজার ১৯২ দশমিক ২২ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে সূচকটি, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১ হাজার ১৯২ দশমিক ১৯ পয়েন্টে। অন্যদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে দশমিক ৭৫ পয়েন্ট কমেছে ব্লু চিপ সূচক ডিএস-৩০। সপ্তাহ শেষে ১ হাজার ৮৩৭ দশমিক ৭৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে সূচকটি, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১ হাজার ৮৩৮ দশমিক ৫০ পয়েন্টে।

গেল সপ্তাহে সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও বেড়েছে স্টক এক্সচেঞ্জে। ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন আগের সপ্তাহের তুলনায় ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ বেড়েছে। গত সপ্তাহে স্টক এক্সচেঞ্জটিতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে ৪৭৩ কোটি ৯২ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৪৪০ কোটি ৪৫ লাখ টাকায়। পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩৬৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে যা ছিল ২ হাজার ২০২ কোটি ২৩ লাখ টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫৭টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে সপ্তাহ শেষে দর বেড়েছে ১৯৫টির, কমেছে ১৪১টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৯টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, ডিএসইর সাপ্তাহিক লেনদেনের মোট ১৬ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে জ্বালানি ও বিদ্যুত্ খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ দখলে নিয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। ডিএসইর লেনদেনের ১০ শতাংশ করে দখলে নিয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল প্রকৌশল খাত। ৯ শতাংশ দখলে নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে বস্ত্র খাত। এছাড়া লেনদেনের ৭ শতাংশ দখলে নিয়েছে সাধারণ বীমা খাত এবং ৬ শতাংশ রয়েছে বিবিধ খাতের দখলে।

স্টক এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ ১০ সিকিউরিটিজ ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ইউপিজিডিসিএল), মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি), জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেড, ফরচুন সুজ লিমিটেড, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (কেপিসিএল), মুন্নু জুট স্ট্যাফলার্স লিমিটেড এবং ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।

ডিএসইতে সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকার কোম্পানিগুলো হলো প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, আলহাজ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, মুন্নু জুট স্ট্যাফলার্স লিমিটেড, কেপিসিএল, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং লিমিটেড, জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেড, তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, বাংলাদেশ ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (বিডি ফিন্যান্স) এবং সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড।

দেশের আরেক শেয়ারবাজার সিএসইতেও সূচক বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে স্টক এক্সচেঞ্জটির প্রধান সূচক সিএসসিএক্স  দশমিক ৫৯ শতাংশ বেড়ে ৯ হাজার ৬৬০ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৯ হাজার ৬০৪ পয়েন্টে। নির্বাচিত ৩০ কোম্পানির সূচক সিএসই ৩০ ইনডেক্স  দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়ে ১৩ হাজার ৯৭৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৩ হাজার ৮৭০ পয়েন্টে। সিএসইতে পাঁচ কার্যদিবসের লেনদেনে মোট ১০৮ কোটি ৮১ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে। লেনদেন হওয়া ৩১১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৬৬টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে সপ্তাহ শেষে দর হারিয়েছে ১১৪টি আর অপরিবর্তিত ছিল ৩১টির বাজারদর।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন