শেষের চ্যালেঞ্জে সিদ্দিকুর

ক্রীড়া প্রতিবেদক

গলফ মৌসুমের জুন-জুলাইয়ের বিরতি কাজে লাগিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন। এ সময় ফিটনেসটাও সন্তোষজনক পর্যায়ে নিয়ে আসতে পেরেছেন। মৌসুমের বাকি ১২-১৫ প্রতিযোগিতা নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশী গলফ আইকন সিদ্দিকুর রহমান।

২০০৭ সালে পেশাদার সার্কিটে পা রাখেন এ গলফার। তিন বছরের মাথায় ব্রুনাইয়ে জয় করেন এশিয়ান ট্যুর মুকুট। ৩৪ বছর বয়সী এ তারকা এখনো এশিয়ান ট্যুরজয়ী একমাত্র বাংলাদেশী গলফার। ব্রুনাই ওপেনের পর ২০০৩ সালে হিরো ইন্ডিয়ান ওপেন জয়। এরপর বড় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় শিরোপাশূন্য সিদ্দিকুর। অর্ধযুগে বেশ কয়েকটি প্রতিযোগিতায় সম্ভাবনা জাগালেও শেষ দিকে খেই হারিয়ে শিরোপা হারিয়েছেন। ফিনিশিংয়ের সে দুর্বলতা নিয়ে আলাদা কাজ করেছেন। দ্রুতই চেনা ছন্দে ফিরতে চান ক্যাডি থেকে এশিয়ান শীর্ষ পর্যায়ে উঠে আসা এ গলফার।

‘জুন-জুলাইয়ে গলফ মৌসুমে বিরতি থাকে। এ সময়টা আমি নিজেকে গুছিয়ে নেয়ার কাজে ব্যয় করেছি। ফিটনেস নিয়েও কাজ করেছি। আগামীকাল মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা হব। সেখান থেকে ইন্দোনেশিয়া হয়ে তাইওয়ানে যাব। আশা করছি, মৌসুমের দ্বিতীয় অংশটায় ভালো কিছু করতে পারব’—গতকাল বণিক বার্তাকে বলেন সিদ্দিকুর রহমান।

চলতি মৌসুমে সিদ্দিকুরের সবচেয়ে ভালো অবস্থান ছিল ঘরের কোর্সে বঙ্গবন্ধু কাপ গলফ প্রতিযোগিতার দ্বাদশ স্থান। গত মাসে মালয়েশিয়ায় মে-ব্যাংক চ্যাম্পিয়নশিপে পঞ্চদশ স্থানে ছিলেন এ গলফার। এশিয়ান ট্যুরে বর্তমানে ২৩-এ আছেন সিদ্দিকুর। অবস্থানটা খুব বেশি ভালো না হলেও একেবারে মন্দ নয়। এ অবস্থায় মৌসুমের প্রথম অংশের নৈপুণ্য নিয়ে হতাশ নন বাংলাদেশী গলফ আইকন, ‘এশিয়ান ট্যুরে ২৩তম স্থান একেবারে মন্দ নয়। আমি নিজের নৈপুণ্য নিয়ে খুশি। শীর্ষ পর্যায়ের দু-একটা প্রতিযোগিতায় ভালো করলে খুব দ্রুত ভালো অবস্থানে চলে আসতে পারব।’

১৮ আগস্ট মালয়েশিয়ার সারাওয়াক চ্যাম্পিয়নশিপ দিয়ে মৌসুমের দ্বিতীয় অংশ শুরু করবেন সিদ্দিকুর। ৩ লাখ মার্কিন ডলারের এ প্রতিযোগিতার পর খেলবেন ৫ লাখ ডলারের ইন্দোনেশিয়া ওপেনে। আগামী নভেম্বরে দিল্লি গলফ কোর্সে প্যানাসনিক ওপেনে খেলার কথা রয়েছে তার। ২০১২, ২০১৫ ও ২০১৮ সালে ওই আসরে শিরোপার সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত রানারআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে সিদ্দিকুরকে।

২০১৩ সালের পর শিরোপার নাগাল না পেলেও হিরো ইন্ডিয়ান ওপেন সিদ্দিকুরের হূদয়ের বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে। পুরনো স্মৃতি হাতড়ে অন্যতম দেশসেরা গলফার বলেছেন, ‘হিরো ইন্ডিয়ান ওপেন যে কোর্সে আয়োজিত হয়, সেখার্নে গত কয়েক বছর বেশ পরিবর্তন এসেছে। বর্তমান কোর্সটা খুবই চ্যালেঞ্জিং। সব গলফার কিন্তু সব কোর্সের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না। সর্বশেষ আসরে এখানে খেলাটা ছিল দারুণ অভিজ্ঞতা।’

প্রথম বাংলাদেশী অ্যাথলিট হিসেবে ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছেন সিদ্দিকুর। এবার তার পথ অনুসরণ করেছেন আরচার রোমান সানা। টোকিও অলিম্পিক সামনে রেখে বাংলাদেশী ক্রীড়ামোদীদের আগ্রহের কেন্দ্রে আছেন এ গলফার। এ সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সিদ্দিকুর বলেছেন, ‘অলিম্পিক আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়া আসর। কিন্তু আমার দৃষ্টিকোণ থেকে এ আসর নিয়ে বাড়তি ভাবনার কিছু নেই। নিজের সেরাটা দিতে পারলে, বড় আসরে সাফল্য পেলে র‍্যাংকিংয়ে দ্রুত উন্নতি হবে। সেটা করতে পারলে অলিম্পিক খেলার সুযোগ আসবে। এ অবস্থায় আমি নিজের সেরাটা দেয়ার দিকেই মনোযোগ দিচ্ছি।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন