বৈশ্বিক অর্থনীতির অস্থিরতা : প্রথম প্রান্তিকে সিঙ্গাপুরের পর্যটন আয় হ্রাস

বণিক বার্তা ডেস্ক   

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সিঙ্গাপুরের পর্যটকদের ব্যয় ৪ দশমিক ৮ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ৬৫০ কোটি

সিঙ্গাপুরি ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে এ প্রান্তিকে দেশটিতে বৈদেশিক পর্যটক আগমন ১ শতাংশ বেড়ে ৪৭ লাখে দাঁড়িয়েছে। খবর বিজনেসটাইমস।

সর্বত্র বিরাজমান চলমান ঝুঁকি ও বৈশ্বিক অর্থনীতির অনিশ্চয়তার কারণে পর্যটকরা সতর্কতার সঙ্গে ব্যয় করছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির পর্যটন বোর্ডের (এসটিবি) পরিচালক পোহ চি চুয়ান। বিশেষ করে চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ, ব্রেক্সিট টানাপড়েন এবং সিঙ্গাপুরি ডলারের বিপরীতে মার্কিন ডলারের ওঠা-নামার কারণে দেশটিতে প্রথম প্রান্তিকে পর্যটন আয় কমেছে বলে জানিয়েছেন এসটিবির প্রধান।

এ প্রান্তিকে দেশটিতে চীনের পর্যটন আয় ১ শতাংশ, ভারতের ৬, যুক্তরাজ্যের ৪, মালয়েশিয়ার ৩৪ এবং ফিলিপাইনের ১৮ শতাংশ কমেছে। চীনা পর্যটন আয় কমলেও এ প্রান্তিকে সিঙ্গাপুরে দেশটির পর্যটন আয় ছিল ১০৯ কোটি সিঙ্গাপুরি ডলার, যা একক কোনো দেশ থেকে দেশটির পর্যটন আয় হিসেবে সর্বোচ্চ। দেশটিতে চীনের পর ইন্দোনেশিয়া এবং ভারতের পর্যটন আয় ছিল যথাক্রমে ৭৩ কোটি ২০ লাখ ও ৩৩ কোটি ৮০ লাখ সিঙ্গাপুরি ডলার।

প্রথম প্রান্তিকে এসটিবির শীর্ষ ১০ পর্যটন বাজারের মধ্যে চারটিতে চাঙ্গাভাব লক্ষ করা গেছে। দেশগুলো হলো ইন্দোনেশিয়া, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া।

এ সময় দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা পর্যটকের সংখ্যা ৯ শতাংশ বেড়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটক থেকে সিঙ্গাপুরের পর্যটন আয় বেড়েছে ১৫ শতাংশ। বাণিজ্যিক ভ্রমণ ও মিটিং, প্রণোদনামূলক ভ্রমণ, বিভিন্ন সম্মেলন ও প্রদর্শনী (বিটিএমআইসিই) খাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশটিতে পর্যটন বেশি আসায় দেশটি থেকে সিঙ্গাপুরের এত বিপুল পর্যটন আয় সম্ভব হয়েছে।

প্রথম প্রান্তিকে কয়েকটি দেশ থেকে সিঙ্গাপুরে পর্যটকের সংখ্যা বাড়লেও তারা কম ব্যয় করেছেন বলে জানিয়েছেন পোহ। এ কর্মকর্তা বলেন, এ সময় ব্যয় কমানোর দিকে পর্যটকদের প্রবণতা লক্ষ করা গেলেও তাদের ব্যয় ইতিবাচকভাবে আমাদের পর্যটন আয়ে অবদান রেখেছে।

প্রথম প্রান্তিকে দেশটিতে মোট পর্যটন আয় হয়েছে ৬৫০ সিঙ্গাপুরি কোটি ডলার। পর্যটন খাতসম্পৃক্ত অন্যান্য উৎস থেকে আয় ২৯ শতাংশ বেড়ে ১৮৭ কোটি সিঙ্গাপুরি ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি। পর্যটন সম্পৃক্ত অন্য খাতগুলোর মধ্যে সিঙ্গাপুরভিত্তিক উড়োজাহাজের বিমানভাড়া, বন্দর শুল্ক, স্থানীয় পরিবহন, বিদেশী বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ব্যয়, চিকিৎসা বাবদ ব্যয়, শিক্ষা ও ট্রান্সফার বা ট্রানজিটে পর্যটকরা বেশি ব্যয় করে থাকেন।

দর্শনীয় জায়গায় ঘোরাঘুরি, বিনোদন ও গেমিং খাতের আয় ২২ শতাংশ হিসাবে ১৪৬ কোটি সিঙ্গাপুরি ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ শতাংশ কম। এ প্রান্তিকে কেনাকাটা খাতের অবদান ২১ শতাংশ নিয়ে ১৩৭ কোটি সিঙ্গাপুরি ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ৭ শতাংশ কম।

এদিকে আবাসন খাতের ব্যয় ১৯ শতাংশ হিসাবে দেশটির পর্যটন আয় দাঁড়িয়েছে ১২৬ কোটি সিঙ্গাপুরি ডলার, যা আগের বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ১২ শতাংশ কম। তাছাড়া খাদ্য ও পানীয় বাবদ ব্যয় আগের বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ৭ শতাংশ কমে ৫৮ কোটি ৮০ লাখ সিঙ্গাপুরি ডলারে দাঁড়িয়েছে।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটিতে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চীনা পর্যটকের সংখ্যা ৩ শতাংশ বেড়ে ৯ লাখ ৬০ হাজারে দাঁড়িয়েছে। চীনের পরই রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। এ দেশের পর্যটক বছরওয়ারি হিসাবে ৩ শতাংশ কমে ৭ লাখ ২৫ হাজারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে তৃতীয় স্থানে থাকা ভারতের পর্যটন বছরওয়ারি হিসাবে ২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন