চীনের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনছে জ্যাক মার ঋণ ধারণা

বণিক বার্তা ডেস্ক   

চীনে ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোকে ঋণ দেয়ার পদ্ধতিতে নীরব বিপ্লব ঘটিয়ে চলেছে দেশটির অন্যতম শীর্ষ ধনী, বিনিয়োগকারী ও ব্যবসা ম্যাগনেট জ্যাক মার অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থা। এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতিটির কয়েক দশকের ঋণ সমস্যার সমাধান এর লক্ষ্য। খবর ব্লুমবার্গ। 

রিয়েল টাইম পেমেন্ট তথ্য এবং তিন হাজারের বেশি চলক বিশ্লেষণে সক্ষম ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সিস্টেম ব্যবহার করে মাইব্যাংক এরই মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ ক্ষুদ্র কোম্পানিকে ২৯ হাজার কোটি ডলার (২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান) ঋণ দিয়েছে। মাত্র চার বছর আগে মাইব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন জ্যাক মা।

এ অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থায় স্মার্টফোনে মাত্র কয়েকটি আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে, অনুমোদনসাপেক্ষে প্রায় তাত্ক্ষণিকভাবেই নগদ অর্থ পেয়ে যাচ্ছেন ঋণগ্রহীতা। কোনো ব্যাংকারের সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে লাগে মাত্র ৩ মিনিট। আর এখন পর্যন্ত প্রক্রিয়াটির ত্রুটির হার মাত্র ১ শতাংশের কাছাকাছি।

একটি আর্থিক প্রযুক্তি বিস্ফোরণ চীনকে বিশ্বের বৃহত্তম বৈদ্যুতিক পেমেন্ট বাজারে পরিণত করেছে। এ মুহূর্তে এ আর্থিক প্রযুক্তি দেশটিতে ক্ষুদ্র কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ব্যাংকের সম্পর্কে পরিবর্তন নিয়ে আসছে। উল্লেখ্য, চীনের সিংহভাগ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রয়েছে ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলোর।

মূলত পেমেন্ট ব্যবস্থা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অন্যান্য উৎস থেকে বিপুল পরিমাণ নতুন তথ্য সংগ্রহ করে থাকে মাইব্যাংক ও এর মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মাধ্যমে এরই মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বৃহৎ প্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যাখ্যাত ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতাদের সঙ্গে আরো সহজ সম্পর্ক তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

চীনের ১৩ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে এর প্রভাব বেশ তীব্র হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। উল্লেখ্য, সর্বশেষ প্রান্তিকে দেশটির অর্থনীতি ১৯৯২ সালের শেষ প্রান্তিকের পর দুর্বলতম গতিতে সম্প্রসারণ হয়েছে।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতিটির প্রায় ৬০ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে অবদান রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানগুলোর, যেগুলোর সিংহভাগই ক্ষুদ্র ব্যবসা। এসব প্রতিষ্ঠানে শ্রম দিচ্ছে ৮০ শতাংশ কর্মী। কিন্তু চীন সরকারের দুই বছরের বেশি সময় ধরে ছায়া ব্যাংকিং-বিরোধী অভিযানে বৈষম্যমূলকভাবে সংকোচনের শিকার হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। হংকংয়ের আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ংয়ের কেইথ পোগসন বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি এন্টারপ্রাইজগুলোই অর্থনীতির প্রকৃত চালিকাশক্তি। কিন্তু এ অংশটিকেই ব্যাংক অত্যন্ত কঠিন ও খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করে থাকে। তবে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে।

গ্রেটার চায়না ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের সহপ্রধান ক্লিফ শেং বলেন, ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে বৃহৎ উপাত্ত ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহারের দিক থেকে চীন দ্রুতই বিশ্বে নেতৃত্বের জায়গায় উঠে আসছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন