বিপৎসীমার উপরে নদ-নদীর পানি : বরিশাল নগরীসহ জলাবদ্ধ বিভাগের নিম্নাঞ্চল

বণিক বার্তা প্রতিনিধি বরিশাল

উজানের ঢল ও বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে বরিশালের নদ-নদীর পানি। বিপত্সীমা অতিক্রম করায় জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে বরিশাল নগরীসহ এ বিভাগের নিম্নাঞ্চল।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত মেঘনা, কালাবদর, কীর্তনখোলা, আড়িয়ালখাঁ নদীর পানি বিপত্সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে বরিশাল নগরীসহ হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ, বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলার চরাঞ্চল জোয়ারের সময় প্লাবিত হয়।

এদিকে ভোলার দৌলতখান পয়েন্টে মেঘনা নদীর পানি বিপত্সীমা অতিক্রম করে ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একইভাবে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের পায়রা নদীর পানি বিপত্সীমা অতিক্রম করে ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আমতলীতে এ নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপত্সীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে। এছাড়া ঝালকাঠির বিষখালী নদীর পানি বিপত্সীমার ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ নদীর পানি বরগুনা পয়েন্টে প্রবাহিত হচ্ছে বিপত্সীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। তবে পাথরঘাটা পয়েন্টে বিষখালীর পানি বিপত্সীমার সমান্তরালে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর পানি বিপত্সীমা ছুঁয়েছে।

বরিশাল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক বেল্লাল হোসেন বলেন, নিম্নচাপের কারণে সাগরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ নিম্নচাপের কারণেই নদ-নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল নিমজ্জিত হয়েছে।

এ অবস্থায় গতকাল বিকাল থেকে কীর্তনখোলায় অস্বাভাবিক জোয়ারে বরিশাল নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ডের জিয়ানগর, রূপাতলী, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের খ্রিস্টান কলোনি, চাঁদমারী, রসুলপুর, স্টেডিয়ামের পেছনের অংশ, পাউবো দপ্তরের একাংশ, নবগ্রাম সড়ক, বেলতলা, পলাশপুর এলাকা এবং সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ও চরবাড়িয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বেশকিছু বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। এছাড়া সড়কে হাঁটু সমান পানি জমেছে।

বরিশাল পাউবোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. সফি উদ্দিন বলেন, বর্তমানে নিম্নচাপের কারণে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে গেছে। এ কারণে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীগুলোয় পানি বেড়ে বিপত্সীমা অতিক্রম করছে।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাইদ বলেন, উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোয় পানির চাপ একটু বেশি। তিনি বলেন, বর্ষাকাল হওয়ায় বিভিন্ন নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এখন যেভাবে পানি বাড়ছে, তাতে ভাঙনের তীব্রতা বাড়তে পারে। বিশেষ করে পানি নেমে যাওয়ার সময় এ আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই পাউবোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন